খেলাধুলা

চাপেই সেরা পারফরম্যান্স বেরিয়ে আসে : মাশরাফি

রাত পোহালেই ত্রিদেশীয় ক্রিকেট শুরু। হাড় কাঁপানো শীতেও ক্রিকেট উষ্ণতা ছড়াচ্ছে। প্রিয় জাতীয় দলের খেলা দেখতে উন্মুখ লাল-সবুজ সমর্থকরা। কিন্তু কিছু প্রাসঙ্গিক কারণে একটি কৌতুহলি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে- আচ্ছা, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অবস্থা এখন কেমন? মাশরাফি বাহিনী আসলে কি অবস্থায় আছে?

Advertisement

বেশ কিছু দিন ভালো খেলার পর দক্ষিণ আফ্রিকায় ছন্দপতন। বিপর্যয়ে খানিক বিচলিত মাশরাফি-সাকিবরা? নাকি হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে দায়িত্ব ছেড়ে শ্রীলঙ্কা শিবিরে যোগ দেয়ায় খানিক চাপ অনুভব করা? নানা কৌতুহলি প্রশ্ন, গুঞ্জন বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে।

বার বার বলা হচ্ছে, মধ্যে তিন বছরের বেশি সময় টানা ভালো খেলার পর দক্ষিণ আফ্রিকায় খারাপ করা এবং তার রেশ না মিটতেই হেড কোচ হাথুরুসিংহের পদত্যাগে দলের ভিতরে চাপ বেড়ে গেছে। সেই চাপ কাটিয়ে ওঠে ভালো করতে পারবে তো মাশরাফির দল?

তিন জাতি টুর্নামেন্ট শুরুর আগে প্রেস কনফারেন্সে উঠলো এমন প্রশ্ন। মাশরাফি বিন মর্তুজা অবশ্য বিষয়টাকে দেখতে চান অন্যভাবে। মাশরাফি মনে করেন, চাপ সব সময়ই থাকে। আছে। থাকবেই। সে চাপ মাথায় নিয়েই খেলতে হয়। চাপটাকে মাশরাফি ইতিবাচক চোখেই দেখতে চান। তার অনুভব, চাপ থাকারও ইাতিবাচক দিক আছে; তাতে ভালো খেলার তাগিদ বাড়ে। সেরা পারফরম্যান্সটা চাপ বেশি থাকলেই বেরিয়ে আসে, মতো বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের।

Advertisement

রোববার মধ্যাহ্নে শেরে বাংলার কনফারেন্স হলে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি এ চাপ নিয়ে বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, প্রত্যেকটা সিরিজ যায় আর তখন মনে হয় পরের সিরিজে বুঝি চাপ কম থাকবে। কিন্তু আমার মনে হয়, সেটা আর হয় না। চাপ থেকেই যায়। দেশের হয়ে খেলতে নামলে আপনি যার বিপক্ষে যেখানেই খেলেন না কেন, চাপ থাকবেই। প্রেসার অবশ্যই থাকবে। আমার কাছে মনে হয়, এটা থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ এবং ভালো। কারণ, চাপে ভালো খেলার তাড়া ও তাগিদ বেশি থাকে। সেরা পারফরম্যান্সটাও চাপে থাকলেই বের হয়।’

তবে টাইগার অধিনায়ক মনে করেন না, দল কোনোরকম চাপে আছে। বরং তার দাবি, 'আমাদের ড্রেসিং রুম এখন অনেক বেশি নির্ভার। আমার মনে হয়, এখন যে প্রেসার আছে, তার চেয়ে অনেক বেশি চাপ নিয়ে আমাদের ড্রেসিং রুমের বেশির ভাগ খেলোয়াড় আগে খেলেছে। কাল (সোমবার) থেকে যেটা আসবে, সেটা হ্যান্ডেল করার মতো যথেষ্ট সামর্থ্য আমাদের আছে।’

মাশরাফি মনে করেন, আসল স্বস্তির জায়গা হলো নিজের মন। মানসিক চাপ থাকে সব সময়। তার মধ্যেও ভালো খেলার ইচ্ছেটা থাকতে হবে। আর সবচেয়ে বড় কথা, নিজের মত করে ভাবতে হবে। নিজের সামর্থ্যের প্রয়োগটা কিভাবে ঘটানো যায়, অ্যাপ্লিকেশন কেমন হবে- সে বোধ ও উপলব্ধিটা থাকা জরুরি।

মাশরাফির মূল কথা হলো, জায়গামত সামর্থ্যের প্রয়োগই শেষ কথা। দক্ষিণ আফ্রিকায় সামর্থ্যের প্রয়োগ ঘটানো সম্ভব হয়নি। তাই পারফরম্যান্স হয়েছে খারাপ। ফলও চলে গেছে বিপক্ষে। তাই মাশরাফি জোর দিচ্ছেন, সামর্থ্যের বাস্তবায়ন ঘটানোর ওপর।

Advertisement

সবশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের প্রসঙ্গ টেনে মাশরাফি বলেন, 'ওই সফরে আমরা যেটা চেয়েছি, সেটা হয়নি। আমরা আশা করছি, এ টুর্নামেন্টে সামর্থ্যের যথাযথ বাস্তবায়ন বা প্রয়োগ ঘটাতে পারবো।'

সাথে আরও যোগ করেন, 'আসলে কমফোর্ট জোনটা নিজের উপর নির্ভর করে। মানসিক চাপ সব সময় থাকে। এটা স্বাভাবিক। অধিনায়ক হিসেবে এটা থাকবে। এখনও সেটা আছে। নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা থাকবে, যে ভিতরে কিভাবে বাস্তবায়ন করবো। আমার ওই জিনিসগুলো এখনও আছে।'

এখানেই শেষ নয়। পাশাপাশি আরও একটা কথা বলেছেন মাশরাফি। তার মনে হয়, খুব বেশি নির্ভার থাকাও দলের জন্য তেমন উপকারী নয়। বরং একটু চাপ এবং কিছু কারণে ভিতরে একটা স্নায়ুর চাপ থাকারও দরকার আছে। তাহলে সেরা পারফরম্যান্স বেরিয়ে আসে।

তাইতো টাইগার ওয়ানডে অধিনায়কের মুখে এমন কথা, ‘আমি এটা চাই না, সবাই অনেক বেশি নির্ভার থাকুক। বেশি নির্ভার থাকলে মাঠে নেমে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। আমি আশা করব, আমাদের মেইন জায়গাটা যাতে ঠিক থাকে। তারপর অন্য কিছু।'

এআরবি/এমএমআর/পিআর