নড়াইলের লোহাগড়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা, ময়লা-আবর্জনা পঁচে দুর্গন্ধে দুর্ভোগে পড়েছেন বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। সামান্য বৃষ্টি হলেই নড়াইলের লোহাগড়া বাজারে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এই বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়ে বাজারের গলিপথে ময়লা-আবর্জনা পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।এজন্য পরিকল্পিতভাবে নালা, ড্রেন ব্যবস্থা গড়ে না ওঠা, পর্যাপ্ত নালা না থাকা, নালা পরিষ্কার না করা এবং নিয়মিত ময়লা ফেলার ব্যবস্থা না থাকাকে দুষলেন ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মনে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দানা বেঁধে উঠছে।গত কয়েকদিন ধরে মাঝে মাঝেই বৃষ্টি হচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে বাজারে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। দোকানে ও গলিপথে এমন ভিড় যেন পা ফেলার জায়গায় নেই।এ অবস্থায় দুর্ভোগ আরো বেড়েছে। কয়েকজন ব্যবসায়ী ও ব্যাংক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, নড়াইল জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ও বড় লেনদেন হয় লোহাগড়া বাজারে। সে বিবেচনায় বাজারটির ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব দেওয়া দরকার।সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে একটিমাত্র দীর্ঘ নালা রয়েছে। এ নালায় পানিপ্রবাহ হচ্ছে না। কারণ, এটি ময়লা-আবর্জনায় ঠাসা।গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বাজারের প্রতিটি গলিপথে পানি জমেছে। নালায় ও রাস্তার পাশে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা পঁচে তা বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে গেছে। এতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে গলিপথের নাকাল অবস্থা। রাস্তার পাশের দোকানগুলো পানিবন্দী হয়ে আছে। অনেক দোকানের ভেতরে পানি জমেছে।গোরস্থান রোডের ব্যবসায়ী রকিবুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, দোকানে পানি ঢুকেছে, দোকানের সামনেও পানি। এই ঈদ বাজারে কোনো কেনাবেচা নেই। নিয়মিত কর দেই। কিন্তু কর্তৃপক্ষের এ নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই।সরেজমিনে দেখা যায়, সুমী রায়হান, লাকি ইসলাম ও রায়হান কবির বাজারে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন। তাদের কাপড় কাঁদা-পানি ও ময়লায় নষ্ট হয়েছে। তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জাগো নিউজকে জানান, এমন নোংরা পরিবেশে দেশের আর কোনো বাজারে আছে কিনা সন্দেহ।বাজারের ব্যবসায়ীদের মতে, পরিকল্পিত ও পর্যাপ্ত নালা ব্যবস্থা গড়ে, নিয়মিত নালা সংস্কার ও পরিষ্কার করে এবং গলিপথে ডাস্টবিন তৈরি করে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।লোহাগড়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সরদার ওহিদুজ্জামান জাগো নিউজকে জানান, খাজনা, ট্রেড লাইসেন্স ও ইজারা বাবদ বাজার থেকে পৌরসভার বছরে আয় প্রায় কোটি টাকা। এর ৪৫ ভাগ অর্থ বাজার ব্যবস্থাপনায় ব্যয় করার বিধান রয়েছে। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষের এদিকে কোনো খেয়াল ও উদ্যোগ নেই। পৌর কর্তৃপক্ষের পরিকল্পিত উদ্যোগে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন।এ বিষয়ে জানতে চাইলে লোহাগড়া পৌরসভার মেয়র নেওয়াজ আহমেদ ঠাকুর জাগো নিউজকে জানান, ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা দুর্ভোগে আছেন ঠিকই, কিন্তু এ জন্য দায়ী ব্যবসায়ীরাই।কারণ ওই ড্রেনেই তারা ময়লা ফেলেন। পরিষ্কার করলেও দুদিন পর দেখা যায় ড্রেন ময়লা-আবর্জনায় ঠাসা। গলিপথে জায়গার অভাবে ডাস্টবিন করা যাচ্ছে না। এসব বিষয় নিয়ে বাজারের ব্যাবসায়ী নেতাদের সঙ্গে কয়েকবার বৈঠক হয়েছে, কিন্তু সমাধান আসেনি। তারপরও লোহাগড়া পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ারকে বলেছি কিভাবে এ সমস্যার সমাধান হয় তার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।হাফিজুল নিলু/এমজেড/আরআইপি
Advertisement