১৯৯৯ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে যাবার আগে থেকেই ঘরের মাঠে তিনজাতি ক্রিকেটের আসর আয়োজন করে আসছে বাংলাদেশ; কিন্তু কঠিন সত্য হলো, গত ২০ বছরে বাংলাদেশে যে ক’টি ত্রি-দেশীয় ক্রিকেট আসর বসেছে। যদিও শেষ হাসি হাসা বহুদুরে, একটিরও ফাইনাল খেলতে পারেনি স্বাগতিক বাংলাদেশ।
Advertisement
অবশ্য আগের তিন জাতি টুর্নামেন্টগুলোর মধ্যে একটি ছাড়া বাকিগুলোয় স্বাগতিক হওয়াই ছিল বাংলাদেশের একমাত্র পরিচয়। ১৯৯৯ সালের মার্চে হওয়া মেরিল কাপে কিছু করার সুযোগ ছিল। কারণ, ওই টুর্নামেন্টে টাইগারদের প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে আর কেনিয়া।
কিন্তু হায়! সেবার ফাইনালেই পৌঁছাতে পারেননি আকরাম, বুলবুল, রফিকরা। বিশ্বকাপ খেলতে যাবার মাত্র দু’মাস আগে দেশের মাটিতে তিন জাতি টুর্নামেন্টের ফাইনালে দর্শক ছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ।
এরপর যে তিনটি ত্রিদেশীয় আসর বসেছে ঢাকায়, তার সবকটায় বাংলাদেশ ছিল আন্ডারডগ। কারণ অন্য দুই প্রতিপক্ষ ছিল তুলনামূলক সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী। ২০০৩ সালের এপ্রিলে হওয়া টিভিএস ত্রি-দেশীয় টুর্নামেন্টে প্রতিপক্ষ ছিল ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৮ সালে শেরে বাংলায় বসা প্রথম তিন জাতি আসর কিটপ্লাই কাপেও টাইগারদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল ভারত-পাকিস্তান। আর ২০১০ সালে হোম অব ক্রিকেটে হওয়া সর্বশেষ তিনজাতি টুর্নামেন্টে টাইগারদের লড়াই করতে হয়েছে ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে।
Advertisement
এখন যেমন যে কোন বড় দলকে হারিয়ে দিচ্ছে মাশরাফির দল, তখন ভারত-পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়টা অঘটন হিসেবেই পরিগণিত হতো। ওই দলগুলোর সাথে টাইগাররা জিততো কালেভদ্রে। মোট কথা শক্তি-সামর্থ্য আর আত্মবিশ্বাস ও নিজ সামর্থ্যরে প্রতি আস্থাও ছিল কম। কাজেই সাফল্যও ধরা দেয়নি।
কিন্তু সময়ের প্রবাহমানতায় সে ধারার ব্যাত্যয় ঘটেছে। এখন ওয়ানডেতে ‘ভাল আর লড়াকু’ দলের তকমা গায়ে টাইগারদের। তারওপর এবার নিজ মাটিতে লড়াই হবে শ্রীলঙ্কা আর জিম্বাবুয়ের সাথে। বলার অপেক্ষা রাখে না, আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে অপর দুই প্রতিদ্ব›দ্বীর চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। এই প্রথম কোন তিনজাতি আসরে বাংলাদেশ র্যাংকিংয়ে এগিয়ে থেকেই মাঠে নামতে যাচ্ছে।
শুধু রেটিং আর র্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকার কারণেই শুধু নয়, মাশরাফির দল খেলবে ঘরের মাটিতে চেনা-জানা পরিবেশ আর গ্যালারি ভর্তি দর্শকের অকুণ্ঠ সমর্থনে। অনুকুল কন্ডিশনের মাঠের ক্রিকেটেও মাশিরাফি, তামিম, সাকিব, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহরা শ্রীলঙ্কা আর জিম্বাবুয়ের চেয়ে বেটার দল।
শ্রীলঙ্কার সাথে গত বছর তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১‘এ সমতা। আর জিম্বাবুয়ে শেষ আট ম্যাচে পাত্তাই পায়নি টাইগারদের কাছে। ৫-০ আর ৩-০‘তে হেরে বাড়ি ফিরেছে। এবার তাই ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার সাথে তিনজাতি আসরে প্রথমবার ফেবারিটের তকমা গায়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। প্রথমবার ফেবারিট হিসেবে মাঠে নেমে শেষ হাসি হাসতে পারবে তো মাশরাফির দল?
Advertisement
এআরবি/আইএইচএস/এমএস