সাফ অনুর্ধ্ব-১৫ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনাল খেলায় ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের সাক্ষী তিন পাহাড়ি কন্যার লেখাপড়া ও তাদের গৃহ নির্মাণের দায়িত্ব নিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী।
Advertisement
ফুটবলের মাধ্যমে দারিদ্রতাকে জয় করা তিন কন্যার সাফল্যকে আরও এগিয়ে নিতে এবং তাদের জীবনকে বিকশিত করতে সবসময়ই পাশে থাকবে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ বলে জানিয়েছেণ তিনি।
কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই মঙ্গলবার দুপুরের দিকে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সাথৈঅং কার্বারি পাড়ায় যমজ দুই বোন ফুটবল কন্যা আনুচিং মারমা ও আনাই মারমার বাড়িতে হাজির হন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী। তার আকস্মিক উপস্থিতিতে কৃতী ফুটবলারের বাবা দিনমজুর রিপ্রুচাই মারমা ও মা আপ্রুমা মারমা আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন।
দুপুরের দিকে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সাথৈঅং কার্বারি পাড়ায় যমজ দুই বোন ফুটবল কন্যা আনুচিং মারমা ও আনাই মারমার বাড়িতে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের এমনটাই জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী।
Advertisement
এসময় তিনি খাগড়াছড়ির আরেক কৃতী ফুটবল কন্যা লক্ষ্মীছড়ির দুর্গম সুমন্ত পাড়ার মনিকা চাকমার ঘরও নির্মাণের ঘোষণা দেন। তিন ফুটবল কন্যার জন্য ৫০ হাজার টাকা করে এফডিআর, শিক্ষাবৃত্তিসহ তাদের জন্য করণীয় সব দায়িত্ব পালন করবে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ এমন ঘোষণা দেন তিনি।
এসময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জ্ঞানময় ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন (কেইউজে) সভাপতি মো. নুরুল আজম, সহ-সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের পিআরও চিংলামং চৌধুরী প্রমুখ তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
এরপর ফুটবল কন্যা আনুচিং মারমা ও আনাই মারমার বাড়িতে জরাজীর্ণ কাঠ ও বাঁশের ঘরের বেড়ার সঙ্গে ঝুলানো তাদের অর্জিত বিভিন্ন মেডেল, উপহার ও গ্রুপ ছবিগুলো ঘুরে ঘুরে দেখেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী।
সাফ অনুর্ধ্ব-১৫ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে খাগড়াছড়ির মেয়ে আনুচিং মারমা ফরোয়ার্ড, আনাই মারমা রাইট ডিফেন্ডার ও মনিকা চাকমা সেন্টার মিড ফিল্ডে খেলে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের শিরোপা জয়ে ভূমিকা রাখে। ভারতের বিপক্ষে শিরোপা ঘরে এনে দেশজুড়ে পাহাড়ি জনপদ খাগড়াছড়িকে আলোচনায় নিয়ে এসেছে এ তিন ফুটবল কন্যা।
Advertisement
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের মাধ্যমে পেশাদার ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন বুনে এ তিন কন্যা। কিন্তু পরিবারের চরম দারিদ্রতা তাদের স্বপ্ন পূরণে ছিল বড় বাধা। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের বিভাগীয় পর্যায়ের খেলায় তিন কন্যার খেলার কৌশল নজরে আসে রাঙ্গামাটির ক্রীড়া সংগঠক বীর সেন চাকমার। তখন থেকেই খাগড়াছড়ির এ তিন কণ্যা আনুচিং, আনাই ও মনিকাকে নিজের তত্ত্বাবধানে রেখে প্রশিক্ষিত করে তোলেন বীর সেন চাকমা।
মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এমএএস/আরআইপি