গর্ত খোঁড়া হয়েছিল প্রতিপক্ষের জন্য। শেষ পর্যন্ত সেই গর্তেই পড়তে হয়েছে নিজেদের। কেপ টাউনের নিউল্যান্ডসে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের রোখার জন্য বাউন্সি উইকেট তৈরি করেছিল প্রোটিয়ারা। মাঝে একদিন বৃষ্টি হওয়ার কারণে নিউল্যান্ডসের উইকেটের আচরণেও আসে পরিবর্তন। যে কারণে, দেখা গেল দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় পেসারদের হাতে পুরোপুরি নাকালই হয়েছে হাশিম আমলা-এবি ডি ভিলিয়ার্সরা। অলআউট হয়েছে মাত্র ১৩০ রানে। ফলে ভারতের সামনে দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০৮ রানের।
Advertisement
তৃতীয় দিনের বৃষ্টি কী তাহলে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য অনাকাংখিত বিপদ হিসেবেই দেখা দিল! চতুর্থ দিনের শুরুতেই যে অবস্থা প্রোটিয়াদের, তাতে এমন মন্তব্য যে কেউ করতেই পারেন! জসপ্রিত বুমরাহ এবং মোহাম্মদ শামিদের বোলিং তোপের মুখে পড়ে যেভাবে আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দিয়েছে স্বাগতিক দলের ব্যাটসম্যানরা, তাতে যে কারও অবাক না হয়ে উপায় নেই।
ভারতী পেসার ভুবনেশ্বর কুমার, জসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ শামি এবং হার্দিক পান্ডিয়ার তোপের মুখে মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রোটিয়াদের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ। তৃতীয় দিন বৃষ্টির কারণে খেলা হতে না পারা এবং সারাদিন বৃষ্টির কারণে উইকেটের চরিত্র পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার কারণেই মূলতঃ ভারতীয় পেসাররা আগুন ঝরানোর অনুকুল পরিবেশ পেয়ে যায়। প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের যে কারণে ভুগতে হলো।
শেষ পর্যন্ত এবি ডি ভিলিয়ার্স আশা প্রদীপ হয়েছিলেন ভারতীয় বোলারদের সামনে; কিন্তু ইনিংসের ৪২তম ওভারে সেই আশার প্রদীপকেও নিভিয়ে দেন জসপ্রিত বুমরাহ। অভিষেকেই বাজিমাত করে দিলেন বুমরাহ। তুলে নিলেন ৩ উইকেট। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৪ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে প্রোটিয়া ব্যাটিংয়ের কোমরই ভেঙে দিলেন তিনি, বলতে গেলে।
Advertisement
দ্বিতীয় দিন শেষ বিকেলে হার্দিক পান্ডিয়া খেলায় ফিরিয়েছিলেন ভারতকে। পরপর তুলে নিয়েছিলেন দুই ওপেনার এইডেন মারক্রাম এবং ডিন এলগারকে। এই দু’জনের জুটিতে প্রথমে এসেছিল ৫২ রান। পরে ২০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৬৫ রান তুলে দিন শেষ করে প্রোটিয়ারা। উইকেটে ছিলেন হাশিম আমলা এবং নাইটওয়াচম্যান কাগিসো রাবাদা।
তৃতীয় দিন ভেসে গেলো পুরোপুরি বৃষ্টিতে। চতুর্থ দিনের খেলা শুরু হতে না হতেই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের ওপর হামলে পড়লেন ভারতীয় পেসাররা। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই হাশিম আমলার উইকেট তুলে নিলেন মোহাম্মদ শামি। এরপরই সেই শামির বলেই আউট হয়ে গেলেন কাগিসো রাবাদা।
অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসিস তো মাঠে নেমে দাঁড়াতেই পারেনি। ৫ বল খেলে জসপ্রিত বুমরাহর বলে উইকেটের পেছনে ঋদ্ধিমান সাহার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। কুইন্টন ডি কককেও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন বুমরাহ। এরপর ভারনন ফিল্যান্ডারকে এলবির ফাঁদে ফেলেন মোহাম্মদ শামি।
প্রোটিয়াদের আশা হয়ে উইকেটে টিকে ছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স; কিন্তু অপর পাশে একের পর এক সঙ্গী হারা হতে হতে বুমরাহর বলে পুল খেলতে যান ডি ভিলিয়ার্স। তাতেই কেল্লাফতে। ডিপ মিড উইকেটে ভুবনেশ্বর কুমারের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ৩৫ রান করে ফিরে গেলেন তিনি। কেশব মাহারাজ করেন ১৫ রান। মর্কেল আউট হন ২ রান করে।
Advertisement
ভারতের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকার মোট লিড দাঁড়িয়েছে ২০৭ রানের। জিততে হলে ভারতকে করতে হবে ২০৮ রান। প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা করেছিল ২৮৬ রান। জবাবে ভারত অলআউট হয়েছিল ২০৯ রানে। ৭৭ রানের লিড পেয়েছিল স্বাগতিকরা।
আইএইচএস/আইআই