দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির কারণে উত্তরাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নওগাঁয় সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।
Advertisement
গত কয়েক দিনের শীতে জবুথুবু হয়ে পড়েছে জেলাবাসী। প্রচণ্ড শৈত্যপ্রবাহে রোববার জেলার রানীনগর উপজেলায় আব্দুল জলিল (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ এবং মহাদেবপুর উপজেলায় রাতে নিলমণী মহন্ত (৬০) এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। অনেকেই সর্দি, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছেন। গত তিন দিনে প্রায় দুই শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।
কয়েকদিন ধরেই ঘন কুয়াশা পড়ছে। শৈত্যপ্রবাহ আর পৌষের হাড় কাঁপানো তীব্র শীত জেঁকে বসেছে এ জেলায়। ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। এতেই কাঁপছে উত্তরের এ জনপদ। দুপুর নাগাদ কিছুটা হালকা রোদের দেখা মিললেও শেষ বিকেল থেকে পরের দিন দুপুর পর্যন্ত উত্তরের হিমেল হাওয়ায় এবং ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
Advertisement
ফলে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী ও কর্মজীবী সাধারণ মানুষ পড়েছেন চরম বেকায়দায়। অনেকেই সকাল অথবা সন্ধ্যায় খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। কুয়াশায় ঢেকে গেছে রাস্তাঘাট। প্রচণ্ড কুয়াশার কারণে যানবাহনগুলো লাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষেরা শীত নিবারণের জন্য কম দামে শীতবস্ত্র কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন শহরের বিভিন্ন ফুটপাতের দোকানগুলোতে।
শহরের কুমাইগাড়ী মহল্লার রিকশাচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন থেকেই প্রচণ্ড শীত। কয়েক বছরের মধ্যে মনে হয় এমন শীত পড়েনি। শীতে রিকশা চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। শীতে যাত্রীও কমে গেছে। তেমন ভাড়াও হচ্ছে না।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন জানান, গত কয়েকদিন থেকে নওগাঁসহ আশপাশের জেলায় তীব্র শৈতপ্রবাহ বইছে। গত শুক্রবার এ জেলার তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগি সেলসিয়াস, শনিবার তা কমে ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। রোববার ছিল ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার তা কমে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। এটিই চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তপমাত্রা। আগামী দুই থেকে তিন দিন এ অবস্থা চলতে থাকবে। এরপর স্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে বলে জানান তিনি।
আব্বাস আলী/আরএআর/পিআর
Advertisement