প্রবাস

মিশিগানে পিঠা উৎসবে পিঠাপুলির বাহার

বাংলাদেশের যে কোনো উৎসব-আনন্দে মিশে আছে রকমারি পিঠা। পিঠা উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অনুষঙ্গ। তাই মাইনাস ডিগ্রি তাপমাত্রাও এ আয়োজন থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের।

Advertisement

প্রবাস জীবনেও দেশীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া এনে দিতে মিশিগানে একদল তরুণ বাংলাদেশি আমেরিকান শনিবার (৬ জানুয়ারি) নোভাই শহরের সিভিক সেন্টারে আয়োজন করে বাংলাদেশি পিঠা উৎসব। শতাধিক বিভিন্ন স্বাদের পিঠার এ উৎসবে জমায়েত হন বিভিন্ন বয়সের কয়েক শত বাঙালি।

চারপাশে তুষার আর বরফের স্তুপ ঠেলে উৎসব স্থলে পৌঁছাতেই চোখে পড়ে থরে থরে সাজানো পিঠা। উৎসবে ভাপা, পুলি, চিতই, পাটিসাপটা, চুঙ্গা পিঠা, গোলাপফুল পিঠা, লবঙ্গ লতিকা, রসফুল পিঠা, জামদানি পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, ঝালপোয়া, ঝুরি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, সূর্যমুখী পিঠা, নকশি পিঠা, নারকেল পিঠা, নারকেলের ভাজা পুলি, দুধ চিতইসহ বিচিত্র সব পিঠার সমারোহ ঘটে। ছিল ময়মনসিংহ, বরিশাল, রাজশাহী, চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী নানা ধরনের পিঠাও। পিঠার সেই মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে সিভিক সেন্টারের পুরো হলরুম।

আগত সবাই লাইনে সারিবদ্ধ হয়ে নিয়েছেন পছন্দের সব পিঠা। এর সমন্বয়ক ছিলেন শান্তা খন্দকার, দিলরুবা ফাতেমা ঋতু, রওশন আরা শম্পাসহ অনেকে। আর অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন শরিফ হাসান এবং সাইদ ফয়সাল।

Advertisement

উৎসবে প্রবাসে বেড়ে উঠা বাংলাদেশি শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে ‘আমরা করবো জয়’ গানের মাধ্যমে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। হল ভর্তি অতিথিরা এতে গলা মেলান। গানটিতে অংশ নেয় আরিজ, সামিন, আতিফ, আরিয়ান, মঞ্জুরি, দীপ্ত, জারা, শ্বেতা, শ্রেয়া, শিখর, তুখড়, আলিয়া, ফারিন ও রিশান।

অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের মধ্যে আরও গান পরিবেশন করে শ্বেতা, শ্রেয়া হাসান, জারা আনোয়ার। দিব্বর ‘আমি বাংলায় গান গাই’ এর সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে তিন বোন শ্রদ্ধা, শ্রুতি এবং স্নেহা।

অনুষ্ঠানে ঢোল আর বাঁশির সুরে বাংলা বিভিন্ন উৎসবের পোষাকের ওপর ফ্যাশান-শোতে অংশ নেয় নাশিতা, রিদিতা, সাইরিন, শ্রদ্ধা, শ্রুতি, স্নেহা, ফারিন, রিশান, সামিন, মাহির, রাইয়ান, রাফিদ, শারার, রিশাদ, ফারিযা ও শ্রেয়া।

এরপর বাঁশির সুরের মূর্ছনায় পুরো অডিটোরিয়ামকে বিমোহিত করেন ড. চন্দ্র নাথ। গান পরিবেশন করেন প্রবাসী শিল্পী রতন হাওলাদার, নাঈম মাহমুদ, সামিনা আলম, ফজলে আহাদ, নিলুফা আক্তার (নিতু), জাফরী আল ক্বাদরী, ডায়না সরকার বন্যা ও আরুপ-দীপা দম্পতি। ‘কেউ কথা রাখেনি’ আবৃতি করেন ফয়সাল সাইদ ও মোহাম্মদ সাকলাইন। কৌতুক পরিবেশন করেন অধ্যাপক আহসান হাবীব।

Advertisement

এমি, আফরিন, সানজিদা, সারমিন ও রিম্পি পরিবেশেন করেন দলীয় নৃত্য। যুগলবন্দি হয়ে নৃত্য পরিবেশন করেন নাঈম-তানজিমা, মীর রসি-সারমিন, পুলক-ফারিয়া ও রিম্পি–এমি জুটি। পাশাপাশি তানজিমা-আফরিন ফারিয়ার বাংলাদেশের মেয়ে এবং নাঈম, রসি, পুলক, সাইফ ও আবু রাসেলের ঢাকার পোলা দর্শকদের ব্যাপক আনন্দ দেয়। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপনায় ছিলেন ফারজানা তাসমিন, পরিচালনায় সাইফুল সিদ্দিকী।

এমএমজেড/জেআইএম/এমএস