বনের ভেতরে কোথাও রয়েল বেঙ্গল টাইগার, কোথাও অজগর, হরিণ, বক। সরীসৃপের মতো বয়ে চলা খাল, সেখানে রয়েছে কুমির। গাছে গাছে নানা জাতের পাখি। কিছু জীবন্ত, আছে বনমোরগও।
Advertisement
হুট করে কেউ এ বনের সামনে এলে মনে হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে এসে পড়েছি। যারাই এখানে আসছেন, মন ভরে উপভোগ করছেন সুন্দরবনের সৌন্দর্য।
বাণিজ্য মেলায় এবারও তৈরি করা হয়েছে মিনি সুন্দরবন। যাদের কখনো সুন্দরবনে যাওয়া হয়নি, তারা বাণিজ্য মেলায় এসে চোখ জুড়িয়ে নিতে পারছেন কৃত্রিম এ বন দেখে।
সরেজমিন দেখা যায়, মেলায় আগতরা অনেকেই কেনাকাটা ও ঘোরাঘুরি শেষে ক্লান্তি দূর করতে আসছেন সুন্দরবনের সামনে। ছোট শিশু ও কিশোরদের কাছেও মেলার অন্যতম বিনোদনের স্থান হয়ে উঠেছে এটি।
Advertisement
সেখানে রয়েছে সব বয়সের মানুষের ঢল। কেউ ছবি তুলছেন আবার কেউ সেলফি তুলে সময়টা স্মরণীয় করে রাখছেন।
মেলার ভিআইপি গেটের পাশ দিয়ে একটু এগোতেই সুন্দরবন। উত্তর-পূর্ব কোণে চার দেয়ালের মধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে ইকোপার্কটি। কেনাকাটা ও বিনোদনের খোঁজে মেলায় আসা মানুষ নিখাদ বিনোদন পেতে এখানে এসে ঘুরে দেখার পাশাপাশি আড্ডা জমাচ্ছেন পার্কের চারদিক ঘিরে।
তবে কৃত্রিম এ সুন্দরবনের ভেতরে প্রবেশের সুযোগ নেই। ভেতরে কৃত্রিমভাবে বানিয়ে রাখা হয়েছে বাঘ, সাপ, বক, হরিণসহ নানা প্রজাতির পশু-পাখি। বনের ভেতরে গাছের ডালে ডালে ঝুলছে বানরসহ নানা প্রজাতির পাখি। পার্কের মধ্যে তৈরি করা হয়েছে ছোট ছোট লেক। লেকের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও সাপ। লেকের পাড়ে অবসর সময় পার করছে তিন/চারটি কুমির। বনের বিভিন্ন স্থানে বসে বিশ্রাম নিচ্ছে পৃথিবীর বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার। আর হরিণগুলোকে মনে হবে উদাসীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দেয় সুন্দরবনকে। কম-বেশি সবাই সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান। কিন্তু সবার পক্ষে তা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এ চিন্তা থেকে ২০১৩ সাল থেকে ডিজাইনার জামিউর রহমান লেমন বাণিজ্য মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সুন্দরবন দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন।
Advertisement
জামিউর রহমান বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সাইন্সের ছাত্র। বিদেশে বিভিন্ন মেলায় দেখেছি তারা সেই দেশের হেরিটেজ তুলে ধরে। আমারও মনে হলো সুন্দরবন আমাদের বিশ্ব ঐতিহ্য। এটা তুলে ধরা যায় বাণিজ্য মেলায়। সেই চিন্তা থেকে ২০১২ সালে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে কথা বলি। তারা আমাকে সুযোগ দেয়।
তিনি বলেন, ১৫০ ফুট বাই ৫০ ফুটের এ ইকোপার্কে ২৫০ দেশীয় প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে। বেশিরভাগই সুন্দরবন থেকে আনা। কোনো কোনো গাছের ডাল এনে এখানে স্থাপন করা হয়েছে।
ইপিবির মেলা কমিটির সদস্য সচিব আবদুর রউফ এ প্রসঙ্গে বলেন, এটি মেলার সৌন্দর্য বর্ধনের অংশ। একই সঙ্গে বিনোদন ও জ্ঞান অর্জনের একটা বড় স্থান। তরুণ প্রজন্ম তথা দেশবাসীর কাছে সুন্দরবনকে তুলে ধরতেই প্রতি বছর আমাদের এ আয়োজন।
এমএ/এসআর/এমএআর/এমআরএম