ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় বিদেশের মাটিতে গিয়ে অকালে লাশ হওয়া সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার দুলাল মণ্ডলের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। দুই সন্তান ও স্ত্রীর গর্ভে ৮ মাসের সন্তান রেখে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে ঋণ করে তিনি গত বছর পাড়ি জমিয়েছিলেন সৌদি আরব।
Advertisement
কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস শনিবার সকালে সৌদি আরবের জিজান প্রদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় দুলালসহ নয়জন নিহত হন। শনিবার দুপুর ১টার দিকে দুলালের মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তার স্ত্রী স্বপ্না নাবালক তিন সন্তানকে নিয়ে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। বয়োবৃদ্ধ বাবা আকবর মণ্ডল ও মা হাজেরা বেগম শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। মরদেহ কবে আসবে তাও তারা জানেন না। ছেলের মরদেহ নিজ হাতে কবর দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দ্রুত মরদেহ ফেরত আনার দাবি জানিয়েছেন আকবর মণ্ডল।
এদিকে তিন সন্তানকে নিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন নিহত দুলালের স্ত্রী স্বপ্না খাতুন। ৯ বছরের সায়েম, ৫ বছরের সাব্বির ও পাঁচ মাস বয়সী বায়েজিদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বারবার চিৎকার করে কাঁদছেন তিনি।
Advertisement
নিহতের স্ত্রী স্বপ্না খাতুন জানান, জন্মের পর বায়েজিদ তার বাবার মুখ দেখেনি। গত সপ্তাহে বড় ছেলে সায়েম তার বাবার সঙ্গে কথা বলেছে। বাবাকে বলেছে- সামনের ঈদে বাড়ি আসতে। বাবাও ছেলের বায়নাকে ফেলে দেয়নি বলেছে আসবে। সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে বাবা আকবর আলী মণ্ডল ও মা হাজরা বেগম পাগলপ্রায়।
মা হাজেরা বেগম জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ছেলে দুলাল মারা গেল। এখনো ছেলের মরদেহ দেশে আসেনি। কবে-কখন আসবে তাও জানি না। প্রতিটি সময় খুব কষ্টে কাঁটছে। না জানি আমার বুকের মানিক কত নির্মমভাবে মারা গেছে।
সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা জানান, কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তথ্য পাবার পর মরদেহ ফেরত আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
ইউসুফ দেওয়ান রাজু/আরএআর/আইআই
Advertisement