দেশজুড়ে

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বাড়ছে ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবাদে চলাচল করছে ফিটনেসবিহীন যানবাহন। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, অকালে ঝড়ে যাচ্ছে মানুষের প্রাণ, পঙ্গু হয়ে জীবন যাপন করছে অনেকেই। এরপরও থেমে নেই অতি মুনাফালোভী বাস মালিকরা।জানা যায়, রাজধানী ঢাকার সাথে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সড়ক পথে যোগাযোগের অন্যতম রোড হচ্ছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। এ পথে নবীনগরের পর থেকে পণ্যবাহী ট্রাক, দুরপাল্লার কোচ, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসসহ প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের প্রায় ১০ হাজারের বেশি যানবাহন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে চলাচল করে থাকে। এছাড়া  ঢাকার গুলিস্থান ও গাবতলী থেকে আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত এবং মানিকগঞ্জ জেলার আঞ্চলিক সড়কগুলোতে প্রতিদিন সাড়ে ৪ শতাধিক বাস চলাচল করছে।এসকল বাসের মধ্যে রয়েছে বিআরটিসি, যাত্রীসেবা, নবীনবরণ, পদ্মা লাইন, ভিলেজ লাইন, শুভযাত্রা পরিবহণ ইত্যাদি। এগুলোর অধিকাংশ অনেক দিনের পুরানো এবং চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বর্তমানে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এবং মানিকগঞ্জের অনেক ওয়ার্কশপে উক্ত লক্কর-ঝক্কর মার্কা পুরনো বাসগুলো মেরামত ও রংকরণ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঈদে ঘরমুখি যাত্রী বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ফিটনেসবিহীন যানবাহনের সংখ্যা।শিবালয় উপজেলার রূপসা এলাকার মুদি দোকানদার আফজাল হোসেন জানান, সে সোমবার বিকেল ৩ টায় ঢাকার গুলিস্থান থেকে পাটুরিয়া ঘাটে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিআরটিসি বাসে ওঠে। বাসটি অর্ধেক রাস্তা আসার পর বিকল হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর সে অন্য বাসে ওঠে গন্তব্যে পৌঁছায়।নবীনবরণ পরিবহনের যাত্রী পাবনার কেরামত আলী বলেন, সে সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার গাবতলী থেকে আরিচা আসার উদ্দেশ্যে বাসে উঠেন। বাসটি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কালামপুর এলাকায় এসে বিকল হয়ে পড়ে। সে এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর অন্য বাসে উঠে আরিচায় পৌঁছায়।ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান, শুধু বিআরটিসি নবীনবরণ পরিবহনই নয় এমন দৃশ্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়তই দেখা যাচ্ছে। গাড়ির ফিটনেস না থাকার কারণে বড় বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে।এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জের বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় ফিটনেসবিহীন সাদ পরিবহনের একটি বাস দুর্ঘটনায় পড়ে ৪ যাত্রী নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছেন।চালকরা বলেন, গাড়ির মালিকরা ত্রুটিপূর্ণ অকেজো গাড়িগুলো কোনো মতো মেরামত, রং চং করে রাস্তায় ছেড়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের করার কিছুই নেই।গাড়ির গ্যরেজ মালিকরা বলেন, ঈদের আগে প্রতি বছরই পুরাতন গাড়ির মেরামত ও রংকরণ কাজের ধুম পড়ে যায়। তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।গাড়ির মালিক ও পরিবহণ নেতারা বলেন, গাড়ির ব্যবসায় সাড়া বছর তেমন লাভ হয় না। দুই ঈদ এবং পূজার সময় যাত্রীদের চাপ বাড়ে। এসময় একটু বাড়তি আয়ের জন্য পুরাতন গাড়িগুলো ঠিক করে রাস্তায় নামানো হয়।ঢাকা-আরিচা যাত্রীসেবা-পদ্মা লাইন মিনিবাস মালিক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্শেদ খান রুবেল জানান, গাড়ির জ্বালানি এবং যন্ত্রাংশের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন গাড়ির ব্যবসায় বেশি লাভ হচ্ছে না। এছাড়া গাড়ির ফিটনেস থাকলেও রোডে পুলিশকে টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে পুলিশ নানা ধরনের হয়রানি করতে থাকে। ফলে গাড়িগুলো কোনো রকম জোড়া তালি দিয়ে চালানো ছাড়া কোন উপায় নেই।এসএস/আরআই

Advertisement