একেকটা ঋতু আসে ভিন্ন ভিন্ন রুপ নিয়ে। প্রকৃতিতে এখন শীতকাল। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, নেত্রকোনা ও বরিশাল অঞ্চলসহ রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে যে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। রাজধানী ঢাকায় শীতের তীব্রতা কমতে শুরু করছে। তবে শীত হালকা কমলেও শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে- এমনটি বলছে আবহাওয়া
Advertisement
শনিবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি। আকাশ অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। গতকাল শুক্রবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গায় ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ষড়ঋতুর এই দেশে একেকটি ঋতু একেক রূপ রঙ নিজে হাজির হয়। অভ্যস্ত মানুষজন প্রকৃতির এই পালাবদলের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেন খুব সহজেই। এরই মধ্যে জেঁকে বসেছে শীত। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে চারদিক। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান ওঠানামা থেকে শুরু করে ফেরি পারাপারেও বিঘ্ন ঘটছে। কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা কমে আসায় দূরপাল্লার যান চলাচলেও প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে।
শীতে অনিবার্যভাবেই প্রকৃতিতে ঘটে কিছু পরিবর্তন। হেমন্তের ফসল কাটা শেষ হয়। নবান্নের সঙ্গে পিঠাপায়েসের আয়োজন চলে গ্রামাঞ্চলে। এই নগরেও এখন মৌসুমী পিঠা বিক্রেতারা তাদের পসরা সাজিয়ে বসেছে। শীত একদিকে যেমন উৎসবের আমেজ নিয়ে আসে। অন্যদিকে তীব্র শীত জীবনযাত্রা বিপন্ন করে তোলে মানুষজনের। বিশেষ করে দরিদ্ররা শীতের কাপড়ের অভাবে কষ্ট পায়। এই সময় শীতজনিত নানা রোগব্যাধিও দেখা দেয়। একারণে শীত মোকাবেলায় নিতে হবে নানা পদক্ষেপ।
Advertisement
শীত মৌসুমে শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত নানা রকম রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। ডায়রিয়া, জ্বর, হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয় শিশুরা। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে ঋতুর পরিবর্তন হবে। এটাই স্বাভাবিক। এ জন্য প্রতিটি ঋতুই যেন উপভোগ করা যায় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকা অত্যন্ত জরুরি। শীতজনিত রোগব্যাধি থেকে মানুষজনকে রক্ষার করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে পদক্ষেপ নিতে হবে। তীব্র শীতে দরিদ্র ও অসহায় মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য গরম কাপড় সরবরাহ করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু সরকার নয় সমাজের বিত্তবানরা এ জন্য এগিয়ে আসতে পারেন। কবি সুকান্ত যেমন করে সূর্যের কাছে উত্তাপ চেয়েছিলেন ‘রাস্তার ধারের উলঙ্গ ছেলেটির জন্য’ তেমনিভাবে আমাদের মধ্যে শীতে মানবিকতার উন্মেষ ঘটাতে হবে। আর তখনই শীত কষ্টের ঋতু না হয়ে উৎসবের ঋতু হয়ে উঠবে।
এইচআর/এমএস