কিশোরগঞ্জ শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ। এ মসজিদে ইবাদত-বন্দেগি করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায় বলে অনেকের দীর্ঘদিনের বিশ্বাস।
Advertisement
এছাড়া রোগ-শোক বা বিপদে নিয়ত করে মসজিদে দান করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়। এমন বিশ্বাস থেকে এখানে প্রতিনিয়ত দান-খয়রাত করে হাজার হাজার মানুষ।
তবে সব কিছু ছাপিয়ে এবার মসজিদের দানবাক্সে টাকার পরিমাণ যা দাঁড়িয়েছে তা রীতিমতো বিস্ময়কর। প্রতি চার মাস পর মসজিদের দাববাক্স খোলা হয়। আর প্রতিবারই টাকার পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় কোটি টাকা।
এবার চার মাস ১০ দিন পর শনিবার খোলা হয় ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স। আগের রেকর্ড ছাপিয়ে টাকা পাওয়া গেছে ১ কোটি ২৭ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭১টাকা। এছাড়া রয়েছে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা।
Advertisement
শনিবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের ৫টি লোহার দানবাক্স খোলা হয়। দানবাক্সে থেকে টাকা খুলে বস্তায় ভরা হয়।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলমগীর হোসেন, সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মো. সাঈদসহ আরও ৬ জন ম্যাজিস্ট্রেট ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যসহ শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে টাকা গণনা শুরু করেন বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
মসজিদ কমপ্লেক্স মাদরাসার ছাত্ররা টাকা গণনায় সহযোগিতা করেন। টানা ৯ ঘণ্টা ধরে টাকার বান্ডিল ও গণনা শেষে সন্ধ্যা ৬টায় টাকার হিসাব করা হয়।
টাকা গণনা কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মো. সাঈদ বলেন, পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে বস্তায় টাকা ভরে গণনার কাজ শুরু করা হয়। টাকা গণনা শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টায়। দেশি টাকা ছাড়াও বেশ কিছু স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া যায়। সন্ধ্যায় নিরাপত্তা প্রহরীসহ টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে পাঠানো হয়।
Advertisement
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত ২৬ আগস্ট মসজিদের ৮টি দানবাক্সে খোলা হয়ছিল। তখন এক কোটি ১৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকা পাওয়া যায়।
প্রাচীন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পাগলা মসজিদের প্রধান আয় মূলত মানুষের দানের টাকা। মুসলমান ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের লোকেরাও এখানে দান করেন। কয়েক বছর আগে মসজিদটিকে পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স নামকরণ করা হয়েছে। মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে পাগলা মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মসজিদের আয় থেকে জেলার বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনুদানসহ বিভিন্ন সেবামূলক খাতে সাহায্য দেয়া হয়। বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত দরিদ্র মানুষকে চিকিৎসার জন্য মসজিদের তহবিল থেকে অর্থ সহায়তা দেয়া হয়।
নূর মোহাম্মদ/এএম/জেআইএম