প্রায় চার মাস আগে শরীয়তপুরে পদ্মায় ডুবে যাওয়া তিনটি লঞ্চের মধ্যে নড়িয়া-২ নামের একটি লঞ্চ উদ্ধার করা হয়েছে। ব্যক্তি উদ্যোগে বুধবার পদ্মা নদীর তলদেশ নড়িয়া সাধুর বাজার ঘাট এলাকা থেকে লঞ্চটি উদ্ধার করা হয়। এসময় কেবিনে থাকা লঞ্চটির কেরানী সুকানি স্বজল তালুকদারের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। তার বাবা হারুন তালুকদার কঙ্কালটি সনাক্ত করেন।
Advertisement
জানা যায়, গত ১১ সেপ্টেম্বর ভোর ৫টার দিকে হঠাৎ পদ্মা নদীর ওয়াপদা লঞ্চঘাট এলাকায় তীব্র স্রোতে ২/৩ শতাংশ জমি নিয়ে পদ্মার পাড় দেবে যায়। এসময় ঘাটের পন্টুনের সঙ্গে নোঙর করা তিনটি লঞ্চ বিচ্ছিন্ন হয়ে ডুবে যায়। এ ঘটনায় তিনটি লঞ্চের কর্মচারী ও মৌচাক-২ লঞ্চে থাকা এক নবজাতকসহ প্রায় ২৫ জন নিখোঁজ হয়। তাদের মধ্যে ৫/৬ জন সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও ১৯ জন নিখোঁজ হন বলে স্বজনদের দাবি। তবে প্রশাসন ১২ জন নিখোঁজের তথ্য নিশ্চিত করে।
নিখোঁজদের মধ্যে ১৩ সেপ্টেম্বর পদ্মা পাড়ের সুরেশ্বর এলাকা থেকে ২৫/৩০ বছর বয়সের এক যুবক ও মৌচাক লঞ্চের যাত্রী পারভিন আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর থেকে নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে উদ্ধার কাজে ব্যর্থ হয়ে ১০ দিন পর উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ও নৌবাহিনীর ডুবুরিরা ফেরত যায়। এরপর লঞ্চ উদ্ধার বা নিখোঁজদের সন্ধানের জন্য আর তাদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
দীর্ঘ তিন মাস পর প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে লঞ্চের মালিকপক্ষ নিজস্ব উদ্যোগে তিনটি উদ্ধারকারী বার্জ এনে লঞ্চ উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করে। অবশেষে উদ্ধারকারী দল গত বুধবার রাতে পদ্মা নদীর তলদেশ নড়িয়া সাধুর বাজার ঘাট এলাকা থেকে নড়িয়া-২ লঞ্চটি উদ্ধার করে নদীর পাড়ে নিয়ে আসে। এ সময় লঞ্চের কেবিন থেকে নিখোঁজ হওয়া লঞ্চের কেরানী স্বজল তালুকদারের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।
Advertisement
তার বাবা হারুন তালুকদার কঙ্কাল সনাক্ত করার পর তার হেফাজতে নিয়ে যান। পরে বৃহস্পতিবার সকালে নড়িয়া উপজেলার বিঝারী ইউনিয়নের ভড্ডা গ্রামে তার নিজ বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে মরদেহের কঙ্কাল দাফন করা হয়।
এদিকে স্বজলের কঙ্কাল পাওয়ার খবর পেয়ে শত শত লোক বাড়িতে ভিড় জমায়। প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এছাড়া লঞ্চ উদ্ধারের খবর পেয়ে পদ্মার পাড়ে নিখোঁজদের স্বজনরা ভীড় জমাচ্ছেন।
নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, ডুবে যাওয়া তিনটি লঞ্চের একটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ লঞ্চে একটি মানবদেহের কঙ্কাল পাওয়া গেছে। অন্য লঞ্চ দুটিও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
ছগির হোসেন/এফএ/এমএস
Advertisement