আইন-আদালত

এতিমের টাকা কীভাবে ক্যাশ হয়েছে জানেন না খালেদার আইনজীবীরা?

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা কোন অ্যাকাউন্ট থেকে ক্যাশ করা হয়েছে এ বিষয়ে আদালতের প্রশ্নের জবাব দিতে পারেননি খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সপ্তম দিনের মতো খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনে এ জে মোহাম্মদ আলী ও রেজাক খান বিচারকের এ সংক্রান্ত প্রশ্ন বারবার এড়িয়ে যান।

যুক্তি উপস্থাপনে এজি মোহাম্মদ আলী বলেন,‘কুয়েতের আমির শহীদ জিয়ার নামে ১২ লাখ ৫৫ হাজার ইউএস ডলার দিয়েছেন।’তখন ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান তাকে প্রশ্ন করে বলেন, ‘যদি টাকা দিয়ে থাকেন তাহলে এ টাকা কোন অ্যাকাউন্ট থেকে ক্যাশ করা হয়েছে। যেহেতু আমি এ মামলার জাজমেন্ট দেব। এ বিষয়ে আমার জানার প্রয়োজন আছে।’

এজে মোহাম্মদ আলী বিচারকের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। অন্য বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন।

Advertisement

এজে মোহাম্মদ আলী যুক্তিতে বলেন, ‘আমরা চার্জের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে গিয়েছিলাম। একটা হইচইয়ের ভেতরে চার্জ ফ্রেম হয়েছে....।'

তখন বিচারক তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘চার্জের ওপর তো অনেক হয়ে গেছে। আবার আজকে কেন?’ আপনি কোন অ্যাকাউন্ট থেকে ক্যাশ করা হয়েছে সে বিষয় বলেন।

এরপর এ বিষয়ে এ জে মোহাম্মদ আলী জবাব না দিলে খালেদার আরেক আইনজীবী আব্দুর রেজাক খান উঠে দাঁড়ান।

তখন তিনি বলেন, ‘রেমিট্যান্সটা কোথা থেকে এসেছে..., সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলা হয়েছে। রেমিট্যান্সটা কোথা থেকে এসেছে তা তারা (রাষ্ট্রপক্ষ) কৈফিয়ত দিতে পারেনি। ব্যাংকের দুজন অফিসার এসেছিল (সাক্ষী নম্বর ১২ ও ১৩), সোনালী ব্যাংকের একটি লোকেরও দৃষ্টি আর্কষণ করা হয়নি যে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের যে ডকুমেন্টগুলো আছে এগুলো সোনালী বাংকের কি না? এভিডেন্সের জেরা থেকে বলছি।

Advertisement

বিচারক বলেন, তাহলে একটু বলুন, জেরা পরে বলুন, আপনাকে সময় দিচ্ছি। ৫৪১৬ একাউন্ট নম্বরটা যদি না হয়ে থাকে, এ নম্বরটা প্রমাণ করতে পারেনি, তাহলে আপনি বলেন, আপনারা দাবি করছেন যে ১২ লাখ ৫৫ হাজার ডলার এসেছে যে ডিডিটা আপনারা কোন অ্যাকাউন্ট থেকে ক্যাশ করেছেন।

এরপর রেজাক খান বলেন, ইউ গো টু এভিডেন্স।

বিচারক বলেন, না আমি এভিডেন্সের ভেতরে আছি। যখন ১২ নম্বর সাক্ষীকে রেফার করবেন, সিনিয়র..., জাজমেন্ট তো আমার দিতে হবে, ক্লারিফিকেশন আমার লাগবেই। ধরে নিলাম এটা প্রাইভেট ফান্ড, আপনাদের কথা তো কুয়েতের আমির এ টাকা দিয়েছে। এ ডিডিটা কোন অ্যাকাউন্ট থেকে ক্যাশ করেছেন।

বিচারকে এ কথার জবাব না দিয়ে রেজাক খান অন্য প্রসঙ্গে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর বিচারক বলেন, আমি জানতে চাচ্ছি কোন অ্যাকাউন্ট থেকে এ টাকা ক্যাশ করেছেন? একটা অ্যাকাউন্ট এখানে আসতেছে সেটা কোনটা? বলেন....।

রেজাক খান বলেন, প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে দেয়নি...।

বিচারক বলেন, আমি আবার ইন্টারফাই করি, ধরেন প্রসিকিউশন পক্ষ ফেল করেছে। তারা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাহলে আপনি কিন্তু স্ট্যান্ড নিয়েছেন যে টাকা দেয়া হয়েছে অরফানেজ ট্রাস্টে সে টাকাটা কোথায় (কোন ব্যাংক থেকে) ক্যাশ করেছেন।

তখন রেজাক খান বলেন,‘নট গিলটি, নট গিলটি, নট গিলটি’। এ বিষয়ে জবাব না দিয়ে তিনি অন্য প্রসঙ্গ শুরু করেন। পরে আবার এজে মোহাম্মদ আলী তার যুক্তি তুলে ধরেন।

এর কিছুক্ষণ পর এজে মোহাম্মদ আলী বিচারককে বলেন, আজকের মতো এখানে শেষ করি। বিচারক তাকে সময় দিয়ে পরবর্তী যুক্তি উপস্থানপন জন্য ১০ ও ১১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন। এদিন বেগম খালেদা জিয়া বেলা ১১ টা ৩৫ মিনিটে আদালতে উপস্থিত হন।

জেএ/জেডএ/জেআইএম