ক্যাম্পাস

ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পরীক্ষা বন্ধ?

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) মোট ২১টি বিভাগের পাঁচটি বর্ষের বৃহস্পতিবারের ব্যবহারিক পরীক্ষা অনিবার্য কারণ দেখিয়ে স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় আজকের পরীক্ষাসমূহ স্থগিত করা হয়েছে।

Advertisement

সারা দেশে হরতাল-অবরোধ, বাকৃবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কোনো বিছিন্ন ঘটনা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা স্থগিতের কোনো রেকর্ড নেই। ফলে পরীক্ষার আগের দিন রাতে আকস্মিক পরীক্ষা স্থগিতের এমন নোটিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার দিবাগত রাত থেকে তিন দিনব্যাপী বাকৃবি ছাত্রলীগ নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এসব কর্মসূচিতে সকল শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট বৃহস্পতিবারের সকল পরীক্ষা স্থগিতের দাবি জানায় ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগের দাবির প্রেক্ষিতে বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা পরীক্ষা স্থগিত করতে ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আবদুল কুদ্দুছকে নির্দেশনা দেন। পরে তিনি সকল অনুষদের ডিনদের সঙ্গে তাৎক্ষণিক কথা বলে পরীক্ষা স্থগিতের ব্যাপারে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে সুপারিশ করেন। রাতে অনুমোদন নিয়ে উপাচার্যের আদেশক্রমে জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ইউছুব আলী মণ্ডল। ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বেশ কিছু আওয়ামীপন্থী শিক্ষকও এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

Advertisement

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, সারা দেশে হরতাল-অবরোধ, বাকৃবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কোনো ঘটনা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা স্থগিতের কোনো রেকর্ড নেই। অথচ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রশাসন কর্তৃক ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এ ঘটনাই প্রমাণ করে প্রশাসন কতটা দুর্বল ও জিম্মি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ছয়টি অনুষদের তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক মিলে পাঁচটি বর্ষের মোট ২১টি বিভাগের ব্যবহারিক পরীক্ষা ছিল।

একাধিক পরীক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কয়েকদিন ধরে প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষার আগের দিন পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি আমাদের ব্যথিত করেছে। আবারও একই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর জাগো নিউজকে বলেন, বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা পরীক্ষা বন্ধের অনুরোধ করলে আমি সেটা অনুমোদন করেছি।

Advertisement

এ বিষয়ে ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সচ্চিদানন্দ দাস চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

শাহীন সরদার/আরএআর/জেআইএম