ক্যাম্পাস

জবিতে সুযোগ পেয়েও ভর্তি বাতিলের আবেদনের নেপথ্যে

ভর্তিযুদ্ধে জয়ী হয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছেন সালমা নূর রায়া। বছরের শুরুর দিন ১ জানুয়ারি ক্লাসও শুরু হয় তাদের। এরইমধ্যে ভর্তি বাতিলের আবেদন করেন ওই শিক্ষার্থী। কিন্তু তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভর্তি বাতিল হওয়া থেকে রায়াকে রক্ষা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রোক্টর ড. মোস্তফা কামাল।

Advertisement

জবি প্রক্টর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১ জানুয়ারি ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে সম্মান ১ম বর্ষ ১ম সেমিস্টারে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়। সেদিনই ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী সালমা নূর রায়া (বাড়ি কুমিল্লা) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তার ভর্তি বাতিলের আবেদন জানান। কিন্তু আবেদনের প্রেক্ষিতে সালমা নূরের সহপাঠীদের অনুরোধে বিভাগীয় শিক্ষকরা ব্যাপারটা একটু খোঁজ নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এমতাবস্থায় রায়ার ফুপাতো বোন ফারজানা এবং দুঃসম্পর্কের চাচা পরিচয় দানকারী মোজাম্মেল হক দেওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। ভর্তি বাতিলের জন্য জোর-জবরদস্তি শুরু করেন তারা। অভিভাবকদের সম্পর্কে সন্দেহ হওয়ায় ঘটনার তদন্তে দায়িত্বরত শিক্ষক সহকারী প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল রায়ার বিস্তারিত পরিচয় মোজাম্মেল হক দেওয়ানের কাছে জানতে চান। কিন্তু মোজাম্মেল হক দেওয়ান মেয়ের বাবার নামও বলতে পারেননি। আবার তারা কয় ভাই-বোন জিজ্ঞেস করা হলেও কিছু বলতে পারেননি। মোস্তফা কামালের জেরার মুখে মোজ্জামেল হক দেওয়ান নিজেকে নারায়ণগঞ্জের অধিবাসী বলে পরিচয় দেন।

ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে সহকারী প্রোক্টর ড. মোস্তফা কামাল জাগো নিউজকে বলেন, ‘রায়ার পরিবারের আর্থিক ভরণ-পোষণ করেন তার কাতারে থাকা চাচা। সেই চাচা চান না রায়া জগন্নাথে পড়ালেখা করুক। তাই সে তার পরিবারকে চাপ প্রোয়োগ করে যেনো রায়ার ভর্তি বাতিল করে তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।’

Advertisement

তিনি আরো বলেন, ‘রায়ার পরিবারকে তারা বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিতে থাকে। একটা পর্যায়ে তাদেরকে আর্থিক সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়ার কথাও বলা হয়। প্রায় দিশেহারা হয়েই অনিচ্ছা সত্ত্বেও ভর্তি বাতিলের আবেদন করে রায়া। তার এবং তার পরিবারের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রায়ার কাতার প্রবাসী চাচা, চাচাতো বোন এবং দুঃসম্পর্কের চাচার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় নিকটস্থ কোতয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে রায়ার ভর্তি বাতিলের আবেদন খারিজ করা হয়েছে। রায়া যেনো নিশ্চিন্তে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে তার জন্য পড়ালেখার যাবতীয় খরচাদি আ খ ম বাহাউদ্দীন বাহার এমপির মেয়ে বহন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’

ওবায়দুল হক ইমন/এসএইচএস/আরআইপি