জাতীয়

কোটি টাকার জলমহাল দখলের অভিযোগ

কোটি টাকা মূল্যের জলমহাল প্রকৃত জেলেদের নামে বরাদ্দ হলেও তা অন্য একজন ভোগ দখলে রেখেছেন। এ সংক্রান্ত মামলার রায় বারবার জেলেদের পক্ষে গেলেও আপিল করে তা ঠেকিয়ে রাখা হচ্ছে। আর বছরের পর বছর মামলা চলায় রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এমনকি প্রকৃত লিজপ্রাপ্ত জেলের বিরুদ্ধে মামলা করে হয়রানি করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে সম্প্রতি এ অভিযোগ করা হয়।

Advertisement

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মৎস ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মীর শওকত আলী বাদশা বুধবার জাগো নিউজকে বলেন, এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগামী বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। প্রয়োজনে সংসদীয় উপকমিটি গঠন করে তদন্ত করবে কমিটি। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার বাইপাইল এলাকার খাসপুকুরটির জমির পরিমাণ ১০৮ শতাংশ, যা ওই এলাকার ১ নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত সিএস ও আরএস দাগ নম্বর যথাক্রমে ২৭ ও ৯৯।

পুকুরটি দীর্ঘদিন আশুলিয়ার বাইবাইল গ্রামের অধিবাসী বছির উদ্দিন মন্ডল ভোগ দখলে রেখেছিলেন। ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে স্থানীয় মাছ চাষীরা তাদের অনুকূলে পুকুরটি লিজ দেয়ার জন্য সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করেন। পরে নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুকুরটির দখল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু বছির উদ্দিন মন্ডল পুকুরটি নিজের দাবি করে আদালতে মামলা ঠুকে দেন। মামলা চলাকালীন তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পর পরিবারের কেউ নয় অথচ মানিকগঞ্জ জেলার আমজাদ নামে এক ব্যক্তি নিজেকে আম মোক্তার বাদী করে মামলাটি পরিচালনা করেন। অথচ মৃত ব্যক্তির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। আমজাদ তা প্রমাণ করতে না পারায় এবং মিথ্যা প্রমাণ উপস্থাপন করায় আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।

পরে ২০১৩ সালে সাভার উপজেলার জলমহাল কমিটি সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাইপাইল মৎস চাষ প্রকল্প সমিতির বরাবরে তিন বছরের জন্য লিজ দেয়। কিন্তু আম-মোক্তার বলে মামলার বাদী আমজাদ হোসেন মিস আপিল করেন। ২০১৬ সালে এটিও খারিজ হয়ে যায়। তিনি অন্য একটি আদালতে আবার মিস আপিল করেন। যথাযথ দলিলাদি উপস্থাপন করতে না পারায় আদালত আবার তা খারিজ করে দেয়। জেলেদের আবার লিজ দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে আরও একটি মিস আপিল করেছেন বাদী পক্ষ। এমনকি সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মাছ চুরির মামলা করেন।

Advertisement

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাইপাইল মৎস্যচাষী সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতি অনুযায়ী, আমরা পুকুরটি লিজ নিই। কিন্তু বছরের পর বছর মিথ্যা মামলার কারণে অন্য একজন ভোগদখল করছেন। সরকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না। এমনকি আমার বিরুদ্ধে চুরির মামলা দিয়েছেন তিনি। এখন আমরাই হয়রানির মধ্যে আছি। এ বিষয়ে আমজাদ আলীর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমিই আম মোক্তার বলে ওই পুকুরের মালিক। তাই একের পর এক আপিল করে যাচ্ছি। আমার সব দলিলাদি সঠিক।

এইচএস/ওআর/আরআইপি