অনুশীলনে মুশফিকুর রহীম যদি হন সবার চেয়ে বেশি সিরিয়াস ও পরিশ্রমী, তাহলে বাংলাদেশের কোচিং স্টাফের মধ্যে সবচেয়ে করিৎকর্মা, সচল ও কর্মব্যস্ত কে? জাতীয় দলের প্র্যাকটিস কার্যক্রম একটু খুঁটিয়ে দেখা যে কেউ বলে দেবেন, কেন রিচার্ড হ্যালসল! মুশফিক যেমন বেশি সময় নিয়ে প্র্যাকটিস করেন। টিম প্র্যাকটিসের বাইরে আরও বেশি সময় ব্যক্তিগতভাবে অনুশীনে কাটে, ঠিক একইভাবে হ্যালসলও অন্যসব কোচিং স্টাফের চেয়ে বেশি দৌড়াদৌড়ি করেন। একে-ওকে সাহায্য করতে ছোটেন।
Advertisement
কখনো তিনি ফিল্ডিং কোচ, কোনো সময় কিপারকে বল ছুড়ে দিচ্ছেন। আবার কোনো সময় ব্যাটসম্যানকে নক করান। সদা তৎপর ও কর্মব্যস্ততা হ্যালসলের পরিচয় বা পদবি বদলে যাওয়া নিয়ে মাথা ব্যথা না থাকুক, এখন তিনি অন্তর্বর্তীকালীন কোচ। তিন জাতি ক্রিকেট আর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে হোম সিরিজে তার ওপর দায়িত্বের বোঝাটা একটু বেশিই।
তাই তো মাঠে ছুটোছুটির পাশাপাশি এবার মেন্টরের ভূমিকাও নিতে চান হ্যালসল। অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে ক্রিকেটারদের মানসিকভাবে চাঙ্গা করা এবং তাদের সাহস জোগানোর কথাই ভাবছেন বেশি তিনি।
আপনি এবার আসলে কী করতে চান? সামনের দিনগুলোয় ঘরের মাঠে টাইগারদের নিয়ে আপনার চিন্তা ভাবনাই বা কী? এ প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আজ মিডিয়ার সামনে হ্যালসল যা বললেন, তাতে পরিষ্কার- তিনি সবার আগে চান দক্ষিণ আফ্রিকার সফরের দুঃস্বপ্নের ঘোর কাটিয়ে উঠতে।
Advertisement
বলার অপেক্ষা রাখে না, প্রোটিয়াদের সঙ্গে টাইগাররা যত খারাপ খেলেছেন, অতিবড় সমালোচকও মানছেন, আসলে তারা তত খারাপ নন। এরচেয়ে ভালো খেলার পর্যাপ্ত সামর্থ্য আছে তাদের। আসলে সামর্থ্যের সেরাটা উপহার দিতে পারেননি সাকিব-মুশফিক-মাশরাফিরা।
হ্যালসলও শুরুতেই ক্রিকেটারদের সে কথাটিই মনে করিয়ে দিতে চান। তাই তো মিডিয়ার সামনে পরিষ্কার বলে উঠলেন, ‘আমি ক্রিকেটারদের মনে করিয়ে দিতে চাই- ভুলে যেও না, তোমরা আসলেই ভালো দল। ভালো খেলার সামর্থ্য আছে তোমাদের।’
কেন এমন মনে করিয়ে দেয়ার তাগিদ? তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। ‘আসলে আপনি যখন দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা অন্য কন্ডিশনে চরমভাবে পর্যুদস্ত হবেন, তারপর অবচেতন মনে শুধু ওই বিপর্যয়ের কথাই মনে হবে। বারবার ব্যর্থতা ও হতাশার ছবিগুলোই চোখের সামনে ভেসে উঠবে। সেই হতাশার ঘোর কাটাতে অবশ্যই আপনাকে মনে করতে হবে আমার শক্তির জায়গাগুলো কী! আমি আসলেই ভালো খেলতে পারি। ভালো খেলার সামর্থ্য আছে আমার।’
ক্রিকেটারদের নিজেদের মেধা এবং যোগ্যতার ওপর আস্থা রাখার পরামর্শই দিচ্ছেন হ্যালসল। তিনি বলেন, ‘আমি বারবার বলে যাচ্ছি, আমাদের দলে কয়েকজন সত্যিকার মেধাবী ও ভালোমানের ক্রিকেটার আছে। যারা সত্যিই ব্যতিক্রমী প্রতিভার। তারা মাঠে ভালো খেলেই নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে। তাদের সামর্থ্যের ওপর পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে হবে।’
Advertisement
হ্যালসলের বিশ্বাস, নিজেদের মতো খেলতে পারলে এই বাংলাদেশই একটি ব্যতিক্রমী দলে পরিণত হবে। তিনি বলেন, ‘এটা সত্য যে, তারা হয়ত প্রোটিয়াদের মতো নন। ইংলিশ কিংবা অস্ট্রেলিয়ানদের মানেরও নন। তাতে কী? তারা বাংলাদেশের প্লেয়ারদের মতোই খেলবে। আমি বিশ্বাস করি তারা যদি স্বাধীনভাবে খেলতে পারে, তাহলে একটা ব্যতিক্রমী দলে পরিণত হবে।’
এআরবি/আইএইচএস/বিএ