বয়স ১৬ মাসে পড়েছে। এরই মধ্যে ঘরোয়া গন্ডি পেড়িয়ে এশিয়ান টুর্নামেন্টে নাম লিখিয়েছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। এশিয়ার ক্লাবগুলোর দ্বিতীয় শীর্ষ টুর্নামেন্ট এএফসি কাপে বাংলাদেশের কোনো দলের অংশগ্রহণ এটাই প্রথম না হলেও প্রতিষ্ঠার দেড় বছরের মধ্যেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে পা রেখে অনন্য নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নবাগত দলটি।
Advertisement
২০১৬ সালে সাইফ পাওয়ারটেক প্রতিষ্ঠা করে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। পেশাদার ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে (বিসিএল) নাম লিখিয়েই রানার্সআপ হয়ে উঠে প্রিমিয়ার লিগে। দেশের শীর্ষ এ লিগে মোহামেডানকে পেছনে ফেলে জায়গা করে নিয়েছে এএফসি কাপেও। প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে সফল দল আবাহনীর সঙ্গী হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে নতুন ক্লাবটি।
প্রিমিয়ার লিগে অভিষেকেই শিরোপা জিতে চমক দেখাতে চেয়েছিল ক্লাবটি। প্রথম পর্ব পর্যন্ত অন্য শিরোপা প্রত্যাশিদের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই এগুচ্ছিল তারা। প্রথম পর্বে শীর্ষে থাকা চট্টগ্রাম আবাহনীর চেয়ে মাত্র ৪ পয়েন্ট পেছনে থেকে দ্বিতীয় পর্ব শুরু করে নবাগত ক্লাবটি। হাইতির ওয়েডসন ও ইংলিশ ফুটবলার চার্লি শেরিংহামকে উড়িয়ে শক্তি বাড়িয়েই দ্বিতীয় পর্ব শুরু করেছিল সাইফ। শুরুটাও দুর্দান্ত হয়েছিল আবাহনীকে হারিয়ে।
কিন্তু ধারাবাহিকতটা আর ধরে রাখতে পারেনি নবাগত দলটি। দ্বিতীয় পর্বের মাঝামাঝিতে এসেই ছিটকে পড়ে শিরোপা লড়াই থেকে। তারপর তাদের চোখ লিগ শিরোপা থেকে সরে চলে যায় এএফসি কাপে। তখন তারা একটাই লক্ষ্য নির্ধারণ করে, মোহামেডানকে পেছনে ফেলে এএফসি কাপ নিশ্চিত করা। মঙ্গলবার শেখ রাসেলকে হারিয়ে সে লক্ষ্য পূরুণ করে চ্যাম্পিয়নশিপ রানার্সআপ হয়ে প্রিমিয়ারে ওঠা দলটি।
Advertisement
এএফসি কাপে খেলার টিকিট পাওয়ার পর ক্লাবটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা আটঘাট বেঁধেই নামবো এএফসি কাপে। আমাদের গ্রুপ পর্বে যেতে হলে দুটি ধাপ পার হতে হবে। আমরা সেভাবেই পরিকল্পনা সাজিয়েছি।’ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব প্রথমত দলের শক্তি বাড়াবে। ইতোমধ্যে এশিয়ান কোটার বিদেশি খেলানোর জন্য তারা উড়িয়ে এনেছে উজবেকিস্তানের আখরব উজমানভ নামের এক মিডফিল্ডার।'
‘লিগের দ্বিতীয় পর্বে আমাদের ভুগিয়েছে মিডফিল্ড। জামাল ভূঁইয়া ও আল আমিন নিয়মিত খেলতে পারেননি ইনজুরির কারণে। আমরা এখন চট্টগ্রাম আবাহনীর ৬/৭ জন খেলোয়াড় নিচ্ছি এএফসি কাপের জন্য। ৮ জানুয়ারির মধ্যে ৩০ খেলোয়াড়ের তালিকা পাঠাতে হবে। আমাদের বিদেশি যারা আছেন, তাদের সঙ্গে যোগ হবেন উজবেক খেলোয়াড়’-বলেন সাইফ স্পোর্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
সাইফের প্রিমিয়ার লিগ শেষ হবে ১১ ফেব্রুয়ারি আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। তারপর চারদিনের বিরতি দিয়ে তারা এএফসি কাপের প্রস্তুতি শুরু করবে। ১৬ জানুয়ারি থেকে বিকেএসপিতে আবাসিক ক্যাম্প শুরু করবে প্রিমিয়ার লিগে নবাগত দলটি। ২৩ জানুয়ারি এএফসি কাপে তাদের প্রথম ম্যাচ মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসের বিরুদ্ধে ঢাকায়। ফিরতি ম্যাচ ৩০ জানুয়ারি মালেতে।
হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে মালদ্বীপের ক্লাবটিকে হারাতে পারলে প্লে-অফের ম্যাচ খেলবে ১৩ ও ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতের ব্যাঙ্গালুরু এফসি ও ভুটানের ট্রান্সপোর্ট ইউনাইটেডের মধ্যে বিজয়ী দলের বিপক্ষে। প্লে-অফ জিতলে সাইফ খেলবে গ্রুপ পর্বে। ‘ই’ গ্রুপে আবাহনীর সঙ্গেই চতুর্থ দল হিসেবে খেলবে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব।
Advertisement
আরআই/এমএমআর/জেআইএম