লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের নাসিরগঞ্জ এলাকায় মেঘনা নদীর তীরে বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ টিএসপি সার মজুদ করা হয়। গত এক মাস ধরে একটি চক্র এসব সার প্যাকেটজাত করে নদীপথে জাহাজে ভরে পাচার করে আসছে। মঙ্গলবার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের নজরে আসে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলেন কমলনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। র্যাবের একটি দলও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিন স্থানীয় নাছিরগঞ্জ এলাকার মেঘনা নদীর তীরে গিয়ে দেখা গেছে, খোলা আকাশের নিচে বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ টিএসপি সার মজুদ করে এলোমেলোভাবে রাখা হয়েছে। গত এক মাস ধরে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ জন শ্রমিক মজুদকৃত পাথর আকৃতির সার রোদে শুকিয়ে ঝরঝরে করে বস্তায় ভরছেন। আর ওইসব বস্তা জাহাজে ভরে নদী পথে কোথায় পাচার করা হয় তা নিশ্চিত জানাতে পারেনি কেউ।
Advertisement
ওই মাঠে এখনও প্রায় ১৫শ মে.টন সার মজুদ রয়েছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে। এর আগে গত কয়েকদিন থেকে প্রায় ৪ হাজার বস্তা নদী পথে পাচার করা হয়। শ্রমিকরা জানান, সারগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ ও অবৈধ কিনা তারা তা জানেন না। তারা স্থানীয় প্রভাবশালী আলমগীর মোল্লা, নুরুল ইসলাম ও রব মাঝির হয়ে এখানে কাজ করছেন। বিনিময়ে পারিশ্রমিক পেতেন তারা। স্থানীয়রা জানান, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী কাঞ্চন এ সার পাচারের প্রধান পরিকল্পনাকারী। তার বাড়ি ভোলা জেলায়। তিনি দীর্ঘদিন থেকে সার পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে ব্যবসায়ী কাঞ্চন জানান, সাগরে দুর্ঘটনায় জাহাজ পতিত হলে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজ থেকে সারগুলো নদীর তীরে এনে মজুদ করা হয়। সারগুলো ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার হবে। তবে বিপুল পরিমাণ সার ব্যক্তিগত কি কাজে ব্যবহার হবে এ বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি। স্থানীয় কৃষকদের ভাষ্যমতে, মজুদকৃত সারগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী। সারগুলো ফের ঝকঝকে মোড়কজাত করে বাজারে বিক্রির জন্য নদীপথে অন্যত্র পাচার করা হয়। এসব সার কৃষক কিনে জমিতে দিলে লাভের পরিবর্তে ক্ষতি বেশি হবে। এ ব্যাপারে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন সারোয়ার বলেন, সার মজুদ ও পাচারের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। এসব সার কমলনগরের জন্য বরাদ্ধের নয়। এ ব্যাপারে কৃষি অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কাজল কায়েস/এমএএস/পিআর
Advertisement