মাঝে বেশ কিছুটা সময় নির্বাচক কমিটির বাইরে থেকে কল কাঠি ঘোরানোর চেষ্টা করেছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। অবশ্য বোর্ডই তাকে সে সুযোগ দিয়েছিল। মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ও হাবিবুল বাশারের পাশাপাশি নির্বাচক কমিটির অলিখিত সদস্য ছিলেন বাংলাদেশের সাবেক কোচ। এদিকে তার পছন্দের উপর আবার বোর্ড সভাপতির ছিল প্রবল আস্থা। তাই ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক, দল সাজাতে গিয়ে বিসিবি প্রধানের প্রিয় আস্থা ভাজন হাথুরুর মতামতকে প্রাধান্য দিতে হত নির্বাচকদের।
Advertisement
তবে হাথুরুসিংহে কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোয়, এখন অনেকটা মুক্ত বিহঙ্গ নির্বাচকরা। ত্রিদেশীয় ক্রিকেট ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজে দল সাজাবেন আসলে নান্নু, বাশার, সুজন ও তিন ফরমেটের দুই অধিনায়ক।
গতকাল (মঙ্গলবার) মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের লাগোয়া একাডেমি মাঠে দুই নির্বাচক নান্নু ও বাশারের সঙ্গে অনেকটা সময় কথা বলতে দেখে গেছে ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফিকে। কাল (মঙ্গলবার) দুপুরে প্রেসের সামনে মাশরাফি তা বলেন, ‘নির্বাচকরা বসে আলোচনা করে দল দেন। আমিও পরামর্শ দিবো। একদম যে পরামর্শ দিবো না, তা নয়। এখন যেহেতু কোচ নেই, সুজন ভাই এবং অন্যেরা আছে; তারা নির্বাচকদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে দল দিবেন। বর্তমানে ৩২-৩৩ জন অনুশীলন করছে। এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে (নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে)।’
এদিকে সময় বয়ে যাচ্ছে দ্রুত। নতুন বছর শুরু হয়েও কেটে গেল তিনদিন। আগামী ১৫ জানুয়ারি থেকে শেরে বাংলায় ত্রিদেশীয় ক্রিকেট। জানা গেছে প্রথম দল হিসেবে ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে জিম্বাবুয়ে। প্রথম খেলা ১৭ জানুয়ারি, তাই শ্রীলঙ্কা আসবে ১৩ তারিখ।
Advertisement
কাল (বুধবার) ৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে টাইগারদের স্কিল ট্রেনিং। এর আগে ২৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। ৩২ জনের প্রাথমিক দল এখনো নিয়মিত অনুশীলন করে যাচ্ছে বিসিবি একাডেমী মাঠে। এই ৩২ জন থেকে পর্যায়ক্রমে তিন জাতি ওয়ানডে স্কোয়াড, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দল সাজানো হবে।
ক্যাম্পে পর্যাপ্ত ক্রিকেটার, আর খেলা দেশের মাটিতে, তাই দল চূড়ান্তর তাড়া ছিল না নির্বাচকদের। কিন্তু একটি বিশেষ কারণে তিন জাতি ক্রিকেট শুরুর এক সপ্তাহ আগেই ওয়ানডে দল চূড়ান্ত করে ফেলতে হচ্ছে। জানা গেছে আগামী ৭ জানুয়ারি ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করা হবে।
বুধবার সকালে দল নির্বাচন নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে একান্তে কথা বলেছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবাদেন নান্নু। অনেক কথার ভিড়ে নান্নু জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আশা করি ৭ জানুয়ারি ত্রিদেশীয় ক্রিকেটের দল চূড়ান্ত করে ফেলবো।’
আসর শুরুর ৮ দিন আগে দল সাজানো কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে নান্নু আরও বলেন, ‘আরও কারণ আছে। ৯ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল)। তার আগে ১৪ জন বেছে নিতে পারলে বাকিরা বিসিএল খেলতে পারবে।’
Advertisement
১৪ জনের দলে কোন আনকোরা নতুন মুখ থাকার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন নান্নু। তার ব্যাখ্যা, ‘বিপিএলে কয়েকজন ভালো পারফর্ম করেছে, তবে সেটা ২০ ওভারের ফরমেটে, যার সাথে ৫০ ওভারের শুধু দৈঘ্যেরই পার্থক্য নেই, গতি প্রকৃতিরও অমিল।’ তাই নান্নু বুঝিয়ে দিয়েছেন ওয়ানডে দলে নতুন কারো অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা খুব কম।
তারপরও দল সাজানোর আগে ৬ জানুয়ারি নিজেদের মধ্যে একটি অনুশীলন ম্যাচ আয়োজনের কথা জানালেন নান্নু। প্রধান নির্বাচকের শেষ কথা, ‘আমরা টেস্ট দল নিয়ে কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবো না, সেখানে যারা পরিক্ষিত ও প্রতিষ্ঠিত পারফর্মার, তারাই থাকবে। তবে টি-টোয়েন্ট ফরমেটে পরিবর্তন আসতে পারে।’ বিপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করা মিডল অর্ডার আরিফুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, অফস্পিনার মেহেদি হাসান, দুই পেসার আবু হায়দার রনি আর আবু জায়েদ রাহির দলে ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ঠ।
এআরবি/এমআর/আইআই