২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পলাতক আসামিদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার ঢাকার ১নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিনের আদালতে রাষ্ট্রের নিযুক্ত কৌঁসুলি চৈত্যন চন্দ্র হালদার পলাতক আসামি মোহাম্মদ হানিফের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন।
যুক্তি উপস্থাপনে তিনি বলেন, ২১ আগস্ট হামলার আগে মুফতি হান্নানের সঙ্গে মিটিং করেন বাবার ও আব্দুস সালাম পিন্টু। মিটিংয়ে হানিফ ও আরিফকে মুফতি হান্নানকে সহযোগিতা করতে বলেন।
এর আগে সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি (পিপি) সৈয়দ রেজাউর রহমান রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। এ সময় তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী একরামুদ্দিন শ্যামল।
Advertisement
সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ‘মামলার ৪৯ জন আসামিকে সংশ্লষ্ট আইনের বিধান মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি এবং মামলার রায় প্রদান করে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করছি।’
রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হওয়ায় বুধবার আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য রয়েছে। আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে আইনানুযায়ী মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের দাবি-২২৫ সাক্ষী ও আসামিপক্ষের ২০ জন সাফাই সাক্ষীর জেরার মাধ্যমে মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
বুধবার রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় ১, ২ ও ৩ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত। আলোচিত এ মামলায় ৫১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আর ২০ জনের সাফাই সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
Advertisement
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী।ঘটনার পরের দিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করে থানা পুলিশ। পরে তদন্তের দায়িত্ব পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরবর্তীতে মামলাটি যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি)।
২০০৮ সালের ১১ জুন মুফতি হান্নানসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন সিআইডির জ্যেষ্ঠ এএসপি ফজলুল কবির।
২০০৯ সালের ৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। মামলাটির তদন্তের ভার পান সিআইডির পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আখন্দ। তিনি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তারেক রহমানসহ ৩০ জনের নাম যুক্ত করে মোট ৫২ জনের নামে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি অভিযোগপত্র দেন।অন্য মামলায় জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও জেএমবি সদস্য শহিদুল আলম বিপুলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। ফলে এ মামলায় এখন আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯ জন। এর মধ্যে তারেক রহমানসহ ১৮ জন পলাতক রয়েছেন। এছাড়া জামিনে আটজন এবং কারাগারে রয়েছেন ২৩ জন।
জেএ/এএইচ/আরআইপি