নওগাঁর সীমান্ত পাবলিক স্কুল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দ্বারা পরিচালিত। শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্কুলটিতে মিড ডে মিল চালু করা হয়েছে। বছরের প্রথম দিন সোমবার থেকে এ ব্যবস্থা চালু করা হয়। দুপুরে খাবার ব্যবস্থা করায় আনন্দিত শিক্ষার্থীরা। দুশ্চিন্তা মুক্ত অভিভাবকরা। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শিশু শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত দেড় হাজার শিক্ষার্থী আছে। এর মধ্যে ৯০০ জন ছাত্র এবং ৬০০ জন ছাত্রী। এর মধ্যে ১০০ জন শিশু শ্রেণির। দুপুরের আগেই শিশুদের ছুটি হয়ে যায়। মিড ডে মিলের আওতায় এসেছে এক হাজার ৪০০ জন শিক্ষার্থী। বেতন দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা করতে হয়। আর বেতনের সঙ্গে প্রত্যেককে শিক্ষার্থী প্রতিমাসে মিড ডে মিল বাবদ ১০০ টাকা দিতে হবে। প্রতি সপ্তাহে চারদিন (রবি, সোম, মঙ্গল ও বুধবার) দুপুরে খাবার সরবরাহ করা হবে। সপ্তাহে তিনদিন থাকবে রুটি, মিষ্টি, সিঙ্গারা, সমুচা ও কেক এবং রবিবার টিফিন থাকবে ভুনা খিচুড়ি, খিচুড়ি, ডিম, সবজি অথবা পোলাও।
Advertisement
বেশির ভাগ শিক্ষার্থী সকালে বাড়ি থেকে না খেয়ে কোচিং ও প্রাইভেট পড়ে স্কুলে আসে। এ সময়ের মধ্যে হোটেল ও দোকানে কিছু খেয়ে স্কুলের ক্লাস শুরু করে। এতে করে টিফিনের পর তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ে। পরবর্তী ক্লাসে তেমন মনোযোগ থাকে না। অনেকে স্কুল থেকে টিফিনের পর বাড়ি চলে যায়। এতে করে অভিভাবকরাও দুশ্চিন্তা করত। আর এসব দিক বিবেচনা করে শিক্ষার মান উন্নয়নে স্কুলটিতে মিড ডে মিল চালু করা হয়। এখন থেকে শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা আর ফাঁকিও দিতে পারবে না।
নবম শ্রেণির ফাতেমাতুজ্জোহরা বিথী, শাহনারা হোসেন ইমা ও পারভেজসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, অনেক সময় সকালে না খেয়ে স্কুলে আসতে হতো। দুপুরের পর স্কুলে থাকতে মন চাইতো না। এখন মিড ডে মিল চালু হওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। এখন থেকে ছোট-বড় সবাই একসঙ্গে একই রান্না খেতে পারব।
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রোদসী আভা রুপতির মা নাজমা বিবি বলেন, সকালে মেয়ের ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়। তড়িঘড়ি করে কখনো খেয়ে, আবার কখনো না খেয়েই স্কুলে ছুটে আসতে হয়। দেখা যায় বাহিরের দোকানগুলোতে সকালে ও দুপুরে নাস্তা খেয়ে নিতে হয়। বাহিরের খাবারের দামও বেশি পড়ত এবং স্বাস্থ্য সম্মত ছিল না। এতে অনেক সময় গ্যাসের সমস্যায় মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্কুলে মিড ডে মিল চালু হওয়ায় এখন অনেকটাই সুবিধা হলো এবং দুশ্চিন্তা মুক্ত হলাম।
Advertisement
স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেওয়ান মো. গোলাম রসুল সাকলায়েন বলেন, এটি শিক্ষা নীতিমালার একটি অংশ। এখন থেকে শিক্ষার্থীদেরকে আর কষ্ট করে বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে আসতে হবে না। স্কুল থেকেই দুপুরে খাবার সরবরাহ করা হবে। এতে শিক্ষার্থীদের শরীরও ভালো থাকবে।
স্কুলের সভাপতি লে. কর্নেল মোহাম্মদ হোসেন বলেন, বিজিবি পরিচালিত বিদ্যালয়সমূহের রীতি অনুযায়ী স্কুলে প্রথম মিড ডে মিল চালু করা হয়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করার সময় বিরক্তবোধ হবে না এবং পড়াশুনায় মনোযোগ দিতে পারবে।
আব্বাস আলী/আরএআর/এমএস
Advertisement