দেশজুড়ে

টানা ৬ দিনের ছুটির ফাঁদে বেনাপোল স্থলবন্দর

পবিত্র শবে কদর ও ঈদুল ফিতরের ছুটির কারণে টানা ছয় দিন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকছে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে। এর ফলে স্থবির হয়ে পড়বে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরের কার্যক্রম। আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে পড়বে বিরুপ প্রভাব। এমনিতেই বেনাপোল বন্দরে পণ্যজট লেগেই থাকে। লম্বা ছুটির কারণে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাঁচামালের সঙ্কট দেখা দিতে পারে। সীমান্তের দুপাশের ট্রাকজট আরো বাড়বে বলে মনে করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা। তবে এ ছুটিতে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পাসপোর্টযাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জাগো নিউজকে জানান, ১৪ জুলাই বিকেল থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কাস্টম ও বন্দরের কার্যক্রম। মাঝে এদিন ১৬ জুলাই অফিস খোলা থাকলেও তেমন কোনো কাজ হবে না। তারপর সরকার ঈদের তিন দিন আগে পরে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ রাখায় বন্দর থেকে কোনো পণ্য খালাসও হবে না। অনেক আমদানিকারক ঈদের ছুটিতে পরিবার পরিজন নিয়ে দেশের বাড়িতে যাবেন। তারা ঢাকা ফিরে না আসা পর্যন্ত কোনো পণ্যও খালাস নেবে না। সব মিলিয়ে টানা ৬ দিন ছুটির ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে বেনাপোল। তবে ১৬ জুলাই বিকেল ৪টা পর্যন্ত আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চলবে বলে তিনি জানান। এদিকে সীমান্তের দুই পাশের ট্রাকজট টানা ছুটির কারণে আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বেনাপোলের মতোই পেট্রাপোলেও ট্রাকজট রয়েছে বলে জানান, ভারতের পেট্রাপোল বন্দর সি অ্যান্ডএফ স্টাফ ওয়েলফেয়ার স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্ত্তিক চক্রবর্তী।তিনি বলেন, বন্দরে স্থান সংকুলান না হওয়ায় বন্দরের ট্রাক টার্মিনাল, পেট্রাপোল পার্কিং ও বনগাঁও টার্মিনালে কয়েকশ পণ্য বোঝাই ট্রাক বেনাপোলে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে। দীর্ঘ ছুটির কারণে এসব পণ্য পেট্রাপোল থেকে বেনাপোল বন্দরে ঢুকবে ছুটি শেষে। এতে পেট্রাপোল বন্দরসহ বেনাপোল বন্দর এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হবে।বেনাপোল কাস্টম হাউজের সহকারি কমিশনার রেজাউল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, এবার ১৮ জুলাই সম্ভাব্য ঈদুল ফিতর ধরে ১৭ থেকে ১৯ জুলাই ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্র, শনি ও রোববার তিন দিন থাকবে সরকারি ছুটি। ২০ জুলাই থেকে কাস্টম ও বন্দরের পাশাপাশি চেকপোস্ট দিয়ে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চলবে। এ ব্যাপারে বেনাপোল স্থলবন্দরের  উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল জানান, ১৪ জুলাই থেকে ঈদের লম্বা ছুটি হয়ে যাচ্ছে। ২০ জুলাই বন্দর খোলা থাকবে। কেউ পণ্য ডেলিভারি নিতে চাইলে অবশ্যই দেওয়া হবে। তবে ঈদের আগে ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় কেউ পণ্য নেবে বলে মনে হয় না। এদিকে বেনাপোল চেকপোস্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম খান জানান, পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের ছুটিতে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক থাকবে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত। এ সময় একটু বেশি ভিড় হয়ে থাকে। সে কারণে ইমিগ্রেশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রতিদিন বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ পণ্য বোঝাই ট্রাক আসে ভারত থেকে। আর বাংলাদেশ থেকে দেড়শ থেকে দুইশ ট্রাক পণ্য যায় ভারতে। এ ছাড়াও শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচা মালামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আসে এই বন্দর দিয়ে। একটানা ৬ দিন বন্ধ থাকার পর ২০ জুলাই কাস্টমস হাউজ ও বন্দর চালু হলে সৃষ্টি হবে পণ্য জটের। বন্দর বন্ধ থাকায় আমদানি-রফতানিতে প্রভাব পড়বে বলে আশংকা করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। মো. জামাল হোসেন/এমজেড/এমআরআই

Advertisement