খেলাধুলা

‘তামিমের কথায় বড় ক্ষতি হতে পারতো’

বিপিএলের সময় শেরেবাংলার উইকেট, আউটফিল্ড আর কিউরেটর গামিনি ডি সিলভার সমালোচনা করে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা গুনতে হচ্ছে তামিম ইকবালকে। কেন এই শাস্তি? তামিম তো ডিসিপ্লিনারি কমিটির কাছে এমন সমালোচনার জন্য ‘স্যরি’ও বলেছেন।

Advertisement

ডিসিপ্লিনারি কমিটির ডাকে সাড়া দিয়ে দুবাইতে ‘টি-টেন’ ক্রিকেট খেলতে যাওয়ার আগে তামিম বলেও গিয়েছিলেন, আমি হয়ত কথাটি ওভাবে নাও বলতে পারতাম। তারপরও তার কাঁধে অর্থদণ্ডের খড়গ।

কেন? আজ বিকেলে বিসিবি সভাপতি এর কারণও ব্যাখ্যা করেছেন। নাজমুল হাসান পাপনের কথা শুনে মনে হচ্ছে, তামিম মহা অন্যায়ই করে ফেলেছেন। তার কথাবার্তা বিসিবির জন্য বিব্রতকর এবং দেশের ক্রিকেটের বড় ক্ষতির কারণ হতে পারতো।

পাপনের কথা, ‘তামিমেরটা পুরো ভিন্ন। ওর কথাবার্তা আমাদের বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য বিব্রতকর। এটা আমাদের ক্রিকেটের প্রচুর ক্ষতি করতে পারে বা পারতো। এজন্য আমরা মনে করি সহ-অধিনায়ক হিসেবে মিডিয়ার সামনে ওর কথা বলায় আরও সতর্ক হতে হবে।’

Advertisement

বিসিবি সভাপতির মত, শুধু উইকেট নিয়ে কথা বললে সমস্যা হতো না; কিন্তু তামিম আউটফিল্ড আর কিউরেটরকে নিয়ে মন্তব্য করেছে। সমালোচন করেছে। যা বিসিবির বিপক্ষে গেছে।

কারণ, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের পর শেরেবাংলার আউটফিল্ড নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ম্যাচ রেফারি আউটফিল্ডের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। তার আলোকে আইসিসি বিসিবির কাছে লিখিত ব্যাখ্যাও দাবি করেছিল। তা নিয়ে খানিক চাপে ছিল বোর্ড।

পাপন বোঝালেন, তামিম আউটফিল্ড আর কিউরেটরের সমালোচনা করায় আইসিসির সেই ব্যাখ্যা চাওয়াটা আরও জোরালো হতে পারে। তাই তার মুখে এমন কথা, ‘একটা পিচ নিয়ে সে কথা বলতেই পারে যে, এটা টি-টোয়েন্টির আদর্শ উইকেট না। টি-টোয়েন্টিতে যে ধরনের উইকেট দরকার ছিল এটা তেমন না। তা ঠিক আছে; কিন্তু আপনি আউটফিল্ড নিয়ে কথা বলবেন কেন? আউটফিল্ডের কী সমস্যা হয়েছে। আপনি কিউরেটর নিয়ে কথা বলবেন কেন। ইতোমধ্যে আমাদের আউটফিল্ড দুটি ডিমেরিট পয়েন্ট পেয়ে বসে আছে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে শেষ খেলায়। চারটা হলে ঢাকা শহরে তো আর খেলাই হবে না! এটা কী ধরনের কথাবার্তা! একটা অধিনায়ক তো এ ধরনের কথা বলতে পারে না। তাকে আরও দায়িত্ববান হতে হবে।’

অন্য মাঠের উদাহরণ টেনে পাপন বলেন, ‘দিল্লিতে যে খেলা হচ্ছিল, মাস্ক পরে খেলেছে। ওদের অধিনায়ক কোহলি দেখলাম হাত নাড়ল আর সব খেলোয়াড় মাঠে চলে আসল। কেউ তো অভিযোগ করলো না যে, আমরা এমন জায়গায় খেলবো না, এটা খেলার অযোগ্য। তাহলে সারা পৃথিবী খেলার অযোগ্য। ওরা তো কেউ বলে না। আমার দেশের স্বনামধন্য খেলোয়াড়, সহ-অধিনায়ক কেন আউটফিল্ড, পিচ নিয়ে কথা বলবে। তাও আবার মিডিয়াতে। এসব বলে ও কী পাবে বলেন। ও কিছু পরিবর্তন করতে পারবে? বরং আমাদের বললে কোনো সমস্যা থাকলে আমরা সাহায্য করতে পারি।’

Advertisement

প্রশ্ন উঠলো শেরে বাংলার মাঠ যে ডিমেরিট পয়েন্ট পেল, তার দায় কার? বিসিবি প্রধান মনে করেন, ‘সে দায় বৃষ্টির। ওই সময়টা আমাদের জন্য খুব আনফেবারেবল ছিল। ধারাবাহিকভাবে নিয়মিত বৃষ্টি হচ্ছিল। ফতুল্লার মাঠটাকেও আমরা ঠিক করতে চেয়েছিলাম। অক্লান্ত পরিশ্রম করেও আমরা পারিনি। নিয়মিত বৃষ্টি হলে মাঠ ঢেকে রাখা যায়, বাইরে আপনি কী করবেন? আউটফিল্ড ঠিক রাখা খুব কঠিন। পিচ ঠিক রাখতে পারি আমরা। এ নিয়ে আমরা আইসিসিকে সবসময় বলে যাচ্ছি। তোমরা আমাদের ডিমেরিট পয়েন্ট দিচ্ছ, এটা তো ঠিক না। এটা তো আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। প্রাকৃতিক কিছু হলে তো আমরা কিছু করতে পারছি না। আমরা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবো?’

পাপনে শেষ কথা, যারা মিডিয়ার কাছে যাওয়ার সুযোগ বেশি পান, তাদের একটু চিন্তা-ভাবনা করে কথা বলতে হবে। এটার জন্য যে অধিনায়কত্ব পরিবর্তন হয়েছে তা নয়। তবে এগুলোও ফ্যাক্টর।

এআরবি/আইএইচএস/বিএ