ফিচার

জেনে নিন গাড়ির শ্রেণীবিন্যাস

দেশে-বিদেশে নানা ধরনের গাড়ি রাস্তায় চলতে দেখা যায়। এসব গাড়ি কোন শ্রেণীর তা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না। তাই গাড়ি কেনার আগে জানা প্রয়োজন গাড়ির ধরণ সম্পর্কে। গাড়ির এই শ্রেণীবিন্যাস সাধারণত করা হয় তাদের কার্যক্ষমতার উপর ভিত্তি করে। অনেকেই হয়তো সেলুন, স্পোর্টস কার, সাভ কিংবা স্টেশন ওয়াগন নামের সাথে পরিচিত কিন্তু বিস্তারিত হয়তো জানেন না। এখানে গাড়ির বিভিন্ন ধরণ সম্পর্কে বর্ণনা করা হল।স্পোর্টস কারএই ধরনের গাড়িগুলো সাধারণত দুই সিট এবং দুই দরজা বিশিষ্ট হয়ে থাকে। এদের ইঞ্জিনের ক্ষমতা একটু বেশিই হয় যাতে করে রাস্তায় অন্যান্য গাড়ির সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারে। গাড়ি নির্মাতারা সাধারণত এই গাড়ির ওজন কম করার চেষ্টা করে থাকেন যাতে করে গতি অর্জন করতে কম বাধার সম্মুখীন হতে হয়। বিশ্বের সব নামীদামী ব্র্যান্ড গুলো সাধারণত স্পোর্টস কারের জন্য বিখ্যাত। উধাহরন হিসেবে পরশে, মাজদা এমএক্স-৫, লাম্বরগিনি, ফেরারি, ম্যাকলারেন কিংবা হোন্ডার নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। এসব গাড়ির দাম সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।সেলুন/ সেডানগাড়ির জগতে সবচেয়ে পরিচিত বডি স্টাইল হচ্ছে সেলুন বা সেডান প্রকৃতির গাড়ি। দুই ধরনের নাম হওয়ার কারন হচ্ছে আমেরিকা, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ায় এই শ্রেণীর গাড়ি সেডান নামে পরিচিত এবং যুক্তরাজ্যে এটি সেলুন নামে পরিচিত। এই শ্রেণীর গাড়িতে ৪-৫ জন বসার ব্যবস্থা থাকে যার কারনে একে যাত্রীবাহী গাড়িও বলা হয়ে থাকে। এর ছাদ সাধারণত নির্দিষ্ট থাকে এবং পিছনের জানালার সাথে নিচে নেমে যায়। গাড়ির পিছনে ট্রাঙ্ক থাকে যেখানে মালপত্র বহন করা যায়। ইঞ্জিন সাধারণত সামনের দিকে হুড বা বনেটের নিচে থাকে। এই গাড়িগুলো সাধারণত পারিবারিক গাড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। উধাহরন স্বরূপ বলা যায় মার্সিডিজ-বেঞ্জ সি ক্লাস কিংবা টয়োটা করল্লা ইত্যাদি।হ্যাচব্যাকহ্যাচব্যাক হচ্ছে ৩ বা ৫ দরজা বিশিষ্ট গাড়ি যার পিছনের দরজা উপরের দিকে খুলে যায় এবং অল্প মালপত্র রাখার ব্যবস্থা আছে। তবে সহজেই পিছনের সারির সিট সরিয়ে এই জায়গার পরিমাণ বাড়ানো যায়। এই গাড়িগুলো সাধারণত স্টেশন ওয়াগনের তুলনায় আকৃতিতে ছোট হয়। নতুন চালকদের জন্য এই শ্রেণীর গাড়ি খুবই উপযোগী কারন এগুলো খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ভক্সওয়াগন গলফ খুবই সুপরিচিত একটি হ্যাচব্যাক গাড়ি। এছাড়া টয়োটা প্রিউস, হোন্ডা ফিট, মাজদা ৩, ফোর্ড ফোকাস, ফিএস্তা, কিয়া রিও, মিনি কুপার ইত্যাদি গাড়িগুলোও সারাবিশ্বে গাড়ি প্রেমিকদের কাছে জনপ্রিয়।সাভ (SUV)স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেইকেল সংক্ষেপে সাভ নামে পরিচিত এই গাড়িগুলোর সাথে স্টেশন ওয়াগনের কিছুটা মিল রয়েছে। তবে প্রধান পার্থক্য হচ্ছে এই ধরনের গাড়িগুলো হাল্কা মানের ট্রাকের চেসিসের উপর ভিত্তি করে বানানো হয় এবং এরা যেকোনো ধরনের রাস্তায় চলার উপযোগী। এরা ৪×৪ কিংবা ক্রসওভার নামেও পরিচিত। এই ধরনের গাড়িগুলো সাধারণত দীর্ঘ যাত্রার জন্য উপযোগী। তবে এদের মাইলেজ খুব কম এবং গাড়ির ওজন বেশি। ৫ দরজা বিশিষ্ট এই গাড়িগুলো ৫-৮ বা তারও বেশি যাত্রী বহনে সক্ষম সেই সাথে পিছনে মালপত্র নেওয়ার জায়গাতো রয়েছেই। পরিচিত গাড়িগুলো হচ্ছে হোন্ডা সিআরভি, ল্যান্ড রোভার ফ্রিল্যান্ডার, টয়োটা ল্যান্ডক্রুইজার, মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার, পাজেরো, ফোর্ড কুগা, অডি কিউ৩, কিয়া স্পোর্টেজ ইত্যাদি।  স্টেশন ওয়াগনএই ধরনের গাড়িগুলোকে এস্টেট কারও বলা হয়ে থাকে। এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গাড়ির ছাদ সাধারণত একেবারে পিছন পর্যন্ত হয়। পাঁচ দরজা সম্পন্ন এই গাড়িগুলোর পিছন দরজা সাধারণত পণ্য উঠানামা করানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়া গাড়ির পিছনের সারির সিট গুলো সরিয়ে মালপত্র বহণের জায়গা খুব সহজেই বাড়ানো যায়। এতে ২-৩ সারি সিট থাকতে পারে। ফলে বেশি সংখ্যক যাত্রী এবং মালামাল পরিবহণ করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে। এদিক থেকে এই গাড়ির ধরণ কিছুটা হ্যাচব্যাক শ্রেণীর মত। তবে প্রধান তফাৎ হচ্ছে আকৃতিতে। হ্যাচব্যাকে সাধারণত পিছনের জায়গা স্টেশন ওয়াগনের তুলনায় অনেক কম হয়ে থাকে। এই ধরনের গাড়ির মধ্যে অডি এ৪ অ্যাভান্ট, টয়োটা সাকসিড, প্রবক্স, রেনল্ট ডাকিয়া, নিসান প্রিমেরা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।  - তথ্য সূত্র : কারমুডি জার্নাল

Advertisement