জাতীয় পার্টি ছাড়া আগামী নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, আমরা এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি। জাতীয় পার্টি ফেক্টর ইন পলিটিক্স। সব কর্মীকে বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।
Advertisement
সোমবার রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয় পার্টির ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় পার্টি সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। মানুষ পরিবর্তন চায়, জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়।
তিনি বলেন, গুম-খুনের আতঙ্ক, অস্থির রাজনীতি। মানুষ হতাশ, আমরাও হতাশ ছিলাম। কিন্তু বিজয়ের মাসে জাতীয় পার্টির বিশাল জয় আমাদেরকে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে।
Advertisement
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এরশাদ বলেন, প্রস্তুত হও, আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি লড়াই করে বিজয় ছিনিয়ে আনবে। ক্ষমতায় যাবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তিনবার ক্ষমতায় এসেছে আমাদের সহযোগিতায়। এ কথা তারা প্রায় সময় ভুলে যান। ৯৬ সালে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছিলাম। তার প্রতিদান কি পেয়েছি? আমার মহাসচিব আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে দিয়ে দল ভাঙানো হলো। আমাকে নির্বাচনে অযোগ্য করা হয়েছিল। ২০০১ সালে নেগেটিভ ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল। এখানে আমার কোনো দোষ নেই। ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করেছিলাম, তারা আমাদের ৫৮টি আসন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু ২৭টি আসনে তারা প্রার্থী দেয়। আমরা সংসদে বিরোধী দল হতে পারিনি।
এরশাদ বলেন, কেউ আমাদের সঙ্গে সুবিচার করেনি। আওয়ামী লীগ-বিএনপি কেউ আমাদের প্রতি সদয় ছিল না। এতো অত্যাচারের পর আমরা বেঁচে আছি কেন? জাতীয় পার্টি ফেক্টর কেন? কারণ আমরা মানুষের সঙ্গে অন্যায় করিনি। আমাদের হাতে রক্তের দাগ নেই। আমরা ভালোবাসা দিয়ে মানুষের মন জয় করতে চাই।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, অনেকের মনেই প্রশ্ন আমার পরে কে? আমার পরে কে হবে সেটা আমি ঘোষণা করে যাব। যদি বিশেষ কারণে না পারি সেটা প্রেসিডিয়ামে সিদ্ধান্ত হবে। দোয়া করবেন যেন আগামী নির্বাচন পর্যন্ত বেঁচে থাকি। জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় দেখে যেতে পারি।
Advertisement
তিনি বলেন, সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য লড়াই করতে হবে। বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে। আমার উপর নির্যাতন করেছিলেন। বিনা চার্জে জেলে দেয়া হয়েছিল। এখন তাদের বিচার হচ্ছে, দুর্নীতির বিচার হচ্ছে। আল্লাহ আছেন, তিনি কোনো অন্যায় মেনে নেন না। তার প্রমাণ আমরা পাব আগামী নির্বাচনে।
আশির দশকে ক্ষমতায় যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের দলের জন্মের চার মাস পর নির্বাচন দিয়েছিলাম। আওয়ামী লীগ, সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ ২৮ টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে এসেছিল। শুধু মাত্র বিএনপি আসে নাই। তাতে কোনো সমস্যা হয় নাই। আমরা ১৫৩টি আসনে জয়ী হয়ে সংসদ গঠন করেছিলাম। সপ্তম সংশোধনী আদেশে সরকারকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। এখন আর কেউ জাতীয় পার্টিকে অবৈধ সরকার বলতে পারে না। জাতীয় পার্টি বৈধ সরকার।
জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মুহম্মদ কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রমুখ।
এইউএ/এআরএস/পিআর