চলতি আমন মৌসুমে আবারো বাম্পার ফলনের আশায় দশ হাজার কৃষক ইতোমধ্যে প্রসারিত বিভিন্ন বন্যা-সহিষ্ণু ধান চাষের জন্য বীজতলা তৈরির কাজ সম্পন্ন করেছে। গত মৌসুমে বন্যা-সহিষ্ণু এই ধান চাষ করে ভাল ফলন পেয়েছিল কৃষকরা। ১৪ দিনের বেশি বন্যার পানিতে ডুবে থাকার পরও বন্যা-সহিষ্ণু এই ধান স্বাভাবিকভাবে পুনরায় বৃদ্ধি পায়। কৃষকরা জানায়, ব্রি-৫১, ব্রি-৫২, বীণা-১১ এবং বীণা-১২ প্রজাতির ধানগুলো বিগত মৌসুমে ভালো ফলন দিয়েছে। এমনকি দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পানিতে ডুবে থেকেও টিকে গেছে।কুড়িগ্রামের পত্রকাটা গ্রামের কৃষক লাল মিয়া জানান, গত মৌসুমে বীণা ধান-১১ চাষ করার পর বন্যার পানিতে ২৪ দিন ডুবে থেকেও স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে বিভিন্ন ক্ষেতে আবাদ করা অন্যান্য আমন ধান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।তিনি বলেন, বন্যার পানি সরে যাওয়ার এক সপ্তাহ পরে পঁচে জমে যাওয়া চারা থেকে আবার নতুন গাছ গজিয়ে দুই সপ্তাহে পুরো জমি সবুজ হয়ে গেছে। গত বছর বীণা ধান-১১ চাষ করে হেক্টর প্রতি সাড়ে চার টন ফলন পেয়েছেন বলে জানায় এই কৃষক।লাল মিয়ার এই ঘটনা পার্শ্ববর্তী এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বন্যা-সহিষ্ণু এই ধান চাষে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ দেখা দিয়েছে।রংপুরের পূর্ব ইছলি গ্রামের বিউটি বেগম ও প্রফুল্ল রায়, গাইবান্ধার সানকিভাঙ্গা গ্রামের কৃষক শুভানল চন্দ্র, লালমনিরহাটের কৃষক মোস্তাক আহমেদ ও বায়তুল্লাহ, ইসরারুল হক, নীলফামারীর শামসুল হক, রংপুরের নিত্য রায়, কুড়িগ্রামের আব্দুল হক বন্যা-সহিষ্ণু এই ধান চাষে তাদের চমৎকার ফলন পাওয়ার কথা জানান।বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের এসটিআরএএসএ প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ইরি) সহযোগিতায় বন্যা-সহিষ্ণু এই ধান চাষ সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে এই প্রকল্পের অধীনে বন্যা-সহিষ্ণু এই ধানের ৪৩ হাজার টন বীজ দেশের কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে বরে জানিয়েছেন এসটিআরএএসএ-ইরি প্রকল্পের বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ডা. এম বারী।এসআইএস/আরআইপি
Advertisement