লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলপথে ঈদের আগেই শুরু হয়েছে যাত্রীদের পদে পদে ভোগান্তি। গত একমাস ধরে এই রুটে চলাচলকারী ট্রেনের মধ্যে বেশিরভাগ ট্রেনেরই সিডিউল বিপর্যয় হচ্ছে। ফলে নির্ধারিত সময় থেকে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন যাতায়াত করছে। লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দর পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার দূরত্বের এই রেলপথে প্রতিদিনই ৪টি ট্রেন নিয়মিতভাবে যাতায়াত করে আসছে। কিছুদিন আগেও ওইসব ট্রেন যথা সময়ে স্টেশনগুলোতে এসে পৌঁছে আবার ছেড়ে যেত। কিন্তু একের পর এক স্টেশন বন্ধ (ক্লোজ ডাউন) করে দেয়াসহ স্টেশন মাস্টারদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে রেল বিভাগ। ফলে একদিকে যেমন টিকিট বিক্রি হচ্ছে না তেমনি বন্ধ থাকা স্টেশনে ট্রেন ক্রসিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় সিডিউল বির্পযয় ঘটছে।বুড়িমারী থেকে লালমনিরহাট পর্যন্ত প্রায় ১২টি স্টেশন থাকলেও ১০টিতে কোনো স্টেশন মাস্টার নেই। ফলে ওইসব স্টেশনে টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। টিকিট কিনতে না পরায় লালমনিরহাট বা রংপুরের মতো বড় বড় স্টেশনের গেট পার হতে প্রায় সময় যাত্রীরা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছেন বলে জানা গেছে। ট্রেনযাত্রীরা জানান, লালমনিরহাট থেকে একটি ট্রেন ছেড়ে ৯০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বুড়িমারী স্টেশন এসে না পৌঁছা পর্যন্ত পরবর্তী ট্রেনটি ছাড়ে না। আবার একইভাবে বুড়িমারী থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন লালমনিরহাট পৌঁছার পর অপর ট্রেন ছেড়ে দেয়া হয়। ফলে ওইসব ট্রেনের সময়সূচিতে বড় রকমের ব্যবধান দেখা দেয়ায় যাত্রী দুর্ভোগ এখন চরমে। তবে সম্প্রতি কাকিনা রেলস্টেশনটি সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মাত্র ১২ ঘণ্টার জন্য রেলক্রসিংয়ের জন্য চালু করা হলেও বন্ধ রয়েছে আদিমারী, নামড়ি, তুষভান্ডার, ভোটমারী, বোরহান নগর, হাতীবান্ধা, বড়খাতা, বাউড়া, আলাউদ্দিন নগর ও পাটগ্রাম স্টেশন। রেলওয়ে অফিস সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে ৬৫, ৭১, ৪৫৫ ও ৭১৩ অফ ডাউন ট্রেনগুলো বুড়িমারী আসে। আবার ৬৬, ৭১৪, ৪৫৬ ও ৭২ ডাউন হয়ে লালমনিরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়ত করে। এরমধ্যে বুড়িমারী থেকে ছেড়ে যাওয়া সন্তাহার হয়ে ঢাকাগামী করতোয়া এক্সপ্রেসের সবচেয়ে বেশি সিডিউল বিপর্যয় চলছে বলে রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে।সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য মতে, প্রতিদিন বিকেলে বুড়িমারীে স্টেশন থেকে করতোয়া এক্সপ্রেসটি ছেড়ে লালমনিরহাট হয়ে সন্তাহার পৌঁছে ঢাকাগামী অপর একটি এক্সপ্রেসে সংযোগ দেয়। কিন্তু সেই করতোয়া এক্সপ্রেস এখন সিডিউল বিপর্যয়ের কারণে নির্ধারিত সময়ের থেকে ২/৩ ঘণ্টা বিলম্বে যাতায়াত করছে।এই অবস্থা চলতে থাকলে আসন্ন ঈদে যাত্রীদের দুর্ভোগে আরো বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। লালমনিরহাট রেলওয়ের বিভাগীয় ট্রাফিক সুপারেন্টেন্ড ( ডিটিএস) মোস্তাফিজুর রহমানের মুঠোফেনে একাধিকবার ফোন দিয়েও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়েরর এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, জনবল সঙ্কটের কারণে লালমনিরহাট-বুড়িমারী সেকশনের স্টেশনগুলো ক্লোজ ডাউন করা হয়েছে। আর সে কারণেই ট্রেনের সময় -সূচির বিপর্যয়সহ স্টেশনগুলোতে টিকিট বিক্রি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি। রবিউল হাসান/এমজেড/আরআইপি
Advertisement