সালতামামি

সানি-নাসরিন : বছরজুড়ে কলহের পর সুখের সংসার

ভালোবেসে বিয়ে করেন ক্রিকেটার আরাফাত সানি ও নাসরিন সুলতানা। বিয়ের পর তাদের সংসার চলছিল সুখে-শান্তিতে। চলতি বছরের শুরুতে ক্রিকেটার আরাফাত সানি ও তার নাসরিন সুলতানার মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়। ভুল বোঝাবুঝির কারণে তাদের সংসারে শুরু হয় কলহ। যে কারণে নাসরিন তার স্বামীর বিরুদ্ধে পরপর তিনটি মামলা করেন। মামলার পর সানিকে জেল খাটতে হয় ৫৩ দিন।

Advertisement

অবশেষে তাদের মধ্যে সব ভুলের অবসান হয়। এই বছরের নভেম্বর মাসের শুরুতে নতুন করে সুখের সংসার শুরু করেন তারা।

নাসরিন সুলতানা ৫ জানুয়ারি সানির বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মোহাম্মদপুর থানার প্রথম মামলা করেন। মামলার পর ২২ জানুয়ারি তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৩ জানুয়ারি ঢাকা মহানরগ হাকিম আদালতে যৌতুকের জন্য দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেন। ১ ফেব্রুয়ারি যৌতুকের জন্য মারধরের ঘটনায় ঢাকার ৪ নং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তৃতীয় মামলাটি করেন। আপোষ শর্তে ৫৩ দিন কারাগারে থাকার পর ১৫ মার্চ জামিনে মুক্তি পান আরাফাত সানি

সানির বিরুদ্ধে নাসরিনের তিন মামলার সর্বশেষ অবস্থা:

Advertisement

সানির বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে প্রথম মামলা:

২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর আরাফাত সানির সঙ্গে নাসরিন সুলতানার বিয়ে হয়। ২০১৬ সালের ১২ জুন রাতে নাসরিন সুলতানা নামের একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে আসল ফেসবুক আইডিতে ম্যাসেঞ্জারে সানি-নাসরিনের অন্তরঙ্গ কিছু ছবি পাঠানো হয়। অভিযোগ ছিল- ওই ভুয়া ফেসবুক আইডিটি আরাফাত সানির। ওই আইডি থেকে তিনি দুজনের কিছু ব্যক্তিগত ছবি এবং নাসরিন সুলতানার কিছু আপত্তিকর ছবি ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে তাকে হুমকি দেন। একই বছরের ২৫ নভেম্বর নাসরিন সুলতানাকে ফের আপত্তিকর ছবি পাঠিয়ে হুমকি দেন আরাফাত সানি। এ ঘটনায় নাসরিন সুলতানা বাদী হয়ে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা করেন। এরপর ৬ এপ্রিল মহানগর হাকিম এস এম মাসুদ জামানের আদালতে সানিকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইয়াহিয়া। ১২ আগস্ট বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাইফুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। ২১ নভেম্বর প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণের দিন নাসরিন তার স্বামী সানির পক্ষে সাক্ষী দেন। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি মামলাটির পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।

যৌতুক আইনে দ্বিতীয় মামলা:

২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করার অভিযোগে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে আরাফাত সানির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলা করেন নাসরিন সুলতানা। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ৫ এপ্রিলের মধ্যে সানিকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেন। তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে বলে মামলাটি নাসরিন সুলতানা প্রত্যাহার করেন।

Advertisement

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তৃতীয় মামলা:

গত ১ ফেব্রুয়ারি ২০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য মারধরের অভিযোগে আরাফাত সানি ও তার মায়ের বিরুদ্ধে ঢাকার ৪ নং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তৃতীয় মামলাটি করেন নাসরিন। এই মামলার অভিযোগে বলা হয়, যৌতুকের টাকার জন্য সানি তার স্ত্রীকে মারধর করেন এবং গালিগালাজ করে ভাড়া বাসায় রেখে যান। এরপর আদালত মামলাটি মোহাম্মদপুর থানাকে এজাহার হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দেন। ৮ ফেব্রুয়ারি আরাফাত সানি ও তার মা নার্গিস আক্তারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি এজাহার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে মোহাম্মদপুর থানা। ১৭ আগস্ট সানি ও তার মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতির আবেদন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক মো. ইয়াহিয়া। ৩০ নভেম্বর ঢাকার ৪ নং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক তাবাসুম ইসলাম ক্রিকেটার সানি ও তার মাকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

জেএ/এমবিআর/জেআইএম