জাতীয়

পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ শুরু ৩০ ডিসেম্বর

দেশব্যাপী পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ শুরু হচ্ছে আগামী ৩০ ডিসেম্বর (শনিবার)। ‘পরিকল্পিত পরিবার গড়ি, মাতৃমৃত্যু রোধ করি’ প্রতিপাদ্যে এ প্রচার সপ্তাহ শেষ হবে আগামী ৪ জানুয়ারি।

Advertisement

বুধবার সচিবালয়ে পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, জনগণকে প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবা দেয়া, সেবা নিতে উদ্বুদ্ধ করা এবং প্রতিটি কর্মীকে সেবা দিতে আরও উৎসাহিত হওয়ার জন্য পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর প্রতি বছর সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উদযাপন করে থাকে। দেশব্যাপী সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উদযাপনের অংশ হিসেবে বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে অ্যাডভোকেসি ও প্রেস ব্রিফিং এবং উপজেলা পর্যায়ে অ্যাডভোকেসি সভা হবে।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা এসব সভা ও প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশ নেবেন বলে জানান জাহিদ মালেক।

Advertisement

সেবা ও প্রচার সপ্তাহের প্রতিপাদ্যের উপর মাঠপর্যায়ে কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের যৌথ স্বাক্ষরে একটি নির্দেশনামূলক পত্র মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে, যাতে স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ কর্মীরা পরিবার পরিকল্পনার মাঠ কর্মীদের সঙ্গে একযোগে দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ হন।

সেবা সপ্তাহে প্রতিদিন মাঠ পর্যায়ে প্রতিটি সেবা কেন্দ্রে পরিবার পরিকল্পনার বিশেষ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে এবং গর্ভবতী মায়েদের চেকআপ ও ডেলিভারি সেবা দেয়া হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ ইতোমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী।

২০২২ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার ১০৫-এ (প্রতি লাখ জীবিত জন্ম) কমিয়ে আনার লক্ষ্যে চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, এছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার ৭০-এ কমিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, ‘মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়ে পরিকল্পিত পরিবার গড়তে হলে প্রথমে বাল্যবিবাহ কমাতে হবে। যা বাংলাদেশে আছে, আমাদের চেষ্টা থাকবে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা। যদিও এটা অনেক রয়েছে। বাংলাদেশে গত এক দশকে মাতৃমৃত্যুর হার ৪০ শতাংশ কমেছে। আর এ হার কমানোর ক্ষেত্রে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূটির অবদান প্রায় ২৫ শতাংশ। বর্তমানে দক্ষ সেবাদানকারীর সহায়তার প্রায় ৫০ শতাংশ প্রসব হচ্ছে। অথচ ২০১০ সালে এ হার ছিল মাত্র ২৭ শতাংশ।’

Advertisement

পরিবার পরিকল্পনার উপকরণ গ্রহণের হার ৬২ শতাংশ থেকে ৭০ শতাংশের উপরে নিয়ে যেতে হবে জানিয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। এখনও প্রায় ১৮ শতাংশ মা অপুষ্টিতে ভোগেন। এতে খর্বাকায় শিশুর জন্ম হচ্ছে। যানবাহনের জন্য অনেক মা হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে আসতে পারে না, এ জন্য মাতৃমৃত্যুর হার বৃদ্ধি পায়। সিজারিয়ান ডেলিভারি আমরা কমাতে চাচ্ছি। এ বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

সরকারের সার্কুলার আছে যেখানে সরকারের গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্স আছে তারা যেকোন সময় বিনামূল্যে গর্ভবতী মায়েদের পরিবহন করবে বলেও জানান জাহিদ মালেক।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ফয়েজ আহম্মদসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরএমএম/আরএস/পিআর