আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের ইসলাম ও কুফরের বিষয়টি সুস্পষ্ট করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। জীবন ব্যবস্থা হিসেবে কোনটি উত্তম তাও বারংবার তাগিদ দিয়েছেন। অতঃপর ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে মানুষকে জোর-জবরদস্তি বা বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা পূর্ববর্তী ২৫৫ নং আয়াতে তাঁর বিশেষ গুণের বর্ণনা করেছেন। যাতে তাওহিদ তথা একত্ববাদের গুণগুলো প্রকাশ পেয়েছে। যে কাজগুলো আর কারো দ্বারা সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। অতঃপর চিন্তাশীল মানুষের জন্য আল্লাহ তাআলা এমনই একটি স্বাতন্ত্র ঘোষণা দিলেন, যাতে মানুষ তাঁর সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করতে পারে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
আয়াতের অনুবাদ
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণসুরা বাকারার ২৫৬নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানুষকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্যবাধকতায় আবদ্ধ করতে নিষেধ করেছেন। যারা তাগুতকে অস্বীকার করে ইসলাম গ্রহণ করেছে; আল্লাহর দরবারে তাদের শক্ত অবস্থানের কথা ওঠে এসেছে এ আয়াতে।
Advertisement
আলোচ্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘দ্বীন সম্পর্কে অর্থাৎ তাতে প্রবেশের বিষয়ে জোর-জবরদস্তি নেই। সত্যপথ ভ্রান্তি থেকে সুস্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আল্লাহ তাআলার সুস্পষ্ট আয়াত ও নিদর্শনাদি দ্বারা এ কথা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে, ঈমানের পথ হলো সত্যপথ আর কুফরির পথ হলো ভ্রান্তপথ। আর যে তাগুতকে অর্থাৎ শয়তানকে মতান্তরে প্রতীমাসমূহের অস্বীকার করবে এবং আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করবে; এতে সন্দেহ নেই যে, সে ধারণ করেছে বা ধরেছে মজবুত একটি হাতল, সুদৃঢ় একটি গ্রন্থি। যা অটুট; যা ছিন্ন হওয়ার নয়। যা কিছু বলা হয তা আল্লাহ শুনেন; আর যা করা হয় তা সম্পর্কে তিনি জ্ঞান রাখেন। (তাফসিরে জালালাইন)
আয়াতটি নাজিলের বর্ণনায় এসেছে-হুসাইন ইবনে আনসারি নামক ব্যক্তির দু’টি ছেলে ইয়াহুদি ও খ্রিস্টান হয়ে গিয়েছিল। মদিনার আনসারগণ যখন ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে যায় তখন তাদের ছেলেদেরেকেও জোরপূর্বক ইসলাম গ্রহণ করাতে ইচ্ছা পোষণ করেন। তখন এ আয়াত নাজিল হয়।
আবার ইসলামি রাষ্ট্রে অবস্থানকারী কোনো আহলে কিতাব তথা ইয়াহুদি ও খ্রিস্টান যদি জিযিয়া বা কর প্রদান করে তবে তাকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করা হবে না। মূলত এ আয়াতে হুকুম ব্যাপক।
মূল কথা হলো, কাউকে ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করা যাবে না। কারণ আল্লাহ তাআলা হেদায়েত ও গোমরাহিকে সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন।
Advertisement
মনে রাখতে হবে, কুফরি ও শিরকের পরিসমাপ্তি এবং বাতিলের শক্তি খর্ব করার জন্য জিহাদের বিধান আর এ আয়াতে অবতীর্ণ জোর-জবরদস্তি এক বিষয় নয়। ঈমানের সম্পর্ক বাহ্যিক অঙ্গ-প্রতঙ্গের সঙ্গে নয় আর জিহাদ ও কেতাল দ্বারা শুধু বাহ্যিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই প্রভাবিত হয়। সুতরাং জোর-জবরদস্তি করে ঈমান গ্রহণ করানোর কোনো সুযোগই নেই। যা জিহাদ ও কেতালের বিধানের পরিপন্থী।
পড়ুন- সুরা বাকারার ২৫৫ নং আয়াত-
পরিশেষে...আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর তাওহিদের শিক্ষা ও তাঁর আকর্ষণীয় গুণের বিষয়গুলো জানার পর শিরক মুক্ত হয়ে কুফর ত্যাগ করার মাধ্যমে ইসলাম গ্রহন, অনুসরণ ও অনুকরণ করার তাওফিক দান করুন।
জোর-জবরদস্তি করে কাউকে ইসলামের প্রবেশের ভ্রান্ত চিন্তা-ভাবনা থেকে হেফাজত করুন। ইসলামের প্রকৃত বুঝ ও জ্ঞান দান করুন। আমিন।
এমএমএস/আইআই