খেলাধুলা

মাশরাফির জনকল্যাণমূলক কাজে প্রাণ ড্রিংকিং ওয়াটার

আসলে মাশরাফি এমন এক বহুমুখী প্রতিভা ও অনেক গুণে গুণান্বিত যে, তাকে নিয়ে কথা-বার্তা চলে প্রায় সারা বছর। মাঠের মাশরাফি, বোলার মাশরাফি, ব্যাটসম্যান মাশরাফি, অলরাউন্ডার মাশরাফি, অধিনায়ক মাশরাফি- সব সময়ই পাদপ্রদীপের আলোয়। তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ সারা দেশ। গোটা জাতি।

Advertisement

মানুষ মাশরাফি বিন মর্তুজার জন্যও ব্যবহৃত হয় নানা বিশেষণ। কেউ বলেন, মাশরাফি হলেন, ‘বিনয়ের অবতার’। অকাশছোঁয়া সাফল্য আর নাম-ডাক থাকা সত্ত্বেও গর্ব-অহঙ্কার যাকে স্পর্শ করে না। যার পা সব সময় মাটিতেই থাকে।

আবার কারো চোখে মাশরাফি হচ্ছেন ডর-ভয়, অসুস্থতা, ইনজুরি আর অপারেশনকে জয় করা এক ‘অতিমানব!’ কেউ কেউ তাকে বলেন, মানব দরদি, বিপদের বন্ধু।

শুনে আবার ভাববেন না, শুধু সমবয়সী বা বন্ধু স্থানীয়দের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়ান মাশরাফি। তিনি সবারই আপন। বিশেষ করে, জন্মস্থান নড়াইলে মাশরাফি সর্বস্তরের জনতার ভালোবাসার প্রতীক। তাদের সবার সুখ দুঃখের সাথী তিনি।

Advertisement

কখনো কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার পাশে দাঁড়াচ্ছেন। আবার কোনো সময় তাকে দেখা যাচ্ছে গাঁয়ের খেটে খাওয়া দিন মজুর, রিকশাওয়ালার পাশেও। কারো ব্যবসায় পুঁজি লাগবে- জোগান দিচ্ছেন মাশরাফি। কেউ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী। অর্থেও অভাবে ভালো চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না- মাশরাফি সে চিকিৎসার সমুদয় খরচ বহন করছেন।

হয়তো কোনো একজন অসুস্থ মানুষের হঠাৎ জটিল অস্ত্রোপ্রচারে এক সঙ্গে অনেক টাকার দরকার, ছুটে যান মাশরাফির কাছে। উদার মাশরাফি অকাতরে সেই সব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান। তাদের সাধ্যমতো আর্থিক সাহায্য-সহোযোগিতাও করেন। কাব্যলোকের দানবীরের গল্প নয় এসব, পুরোপুরি সত্য। নড়াইলে মাশরাফির এসব জনহিতকর কাজেই দিন কাটে।

এবার সেই মাশরাফির সমাজ সেবামূলক কার্যক্রমটা আরও গোছানো ও পরিশীলিত রূপ পেয়েছে। অনেকটা প্রথাগত ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের মতো করেছেন মাশরাফি। নামটাও দিয়েছেন সেরকম- ‘নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন।’

এই ব্যানারে নানা জনকল্যাণমূলক কাজ কর্ম পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছেন মাশরাফি। তার বন্ধু-বান্ধব ও খুব কাছের কিছু আত্মীয়-পরিজন ও সুহৃদ-শুভানুধ্যায়ীও আছেনের সঙ্গে।

Advertisement

এদিকে দেশবরেণ্য ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব মাশরাফির এ জনহিতকর কমকান্ডের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে দেশের অন্যতম শীর্ষ কর্পোরেট হাউজ প্রাণ গ্রুপ। ‘প্রাণ ড্রিংকিং ওয়াটার’ মাশরাফির এ নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের নানা সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কাজের আনুষ্ঠানিক সঙ্গী হয়েই থাকবে।

রোববার সন্ধ্যায় মাশরাফির মিরপুরের বাসায় প্রাণ ড্রিংকিং ওয়াটারের সঙ্গে মাশরাফির আনুষ্ঠানিক চুক্তিও সম্পাদিত হয়েছে। মাশরাফি এ সম্পর্কে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে বলেন, ‘আমি অত্যন্ত খুশি যে প্রাণ ড্রিংকিং ওয়াটার আমাদের সামাজিক, জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ডের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আগামী দুই বছর আমাদের নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে থাকবে প্রাণ ড্রিংকিং ওয়াটার। গতকাল সন্ধ্যায় আমার বাসায় উভয় পক্ষের মধ্যে আনুষ্ঠানিক চুক্তিও হয়েছে।’

এ ফাউন্ডেশনের কার্যতঃ চেয়ারম্যান মাশরাফি। তবে তার খুব কাছের কিছু মানুষও আছেন এর ব্যবস্থাপনায়। তবে এমন জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য দরকার বড় অঙ্কের অর্থ। এজন্য চাই সত্যিকার পৃষ্টপোষকতা। মাশরাফিও তা খুব ভালো করে জানেন।

এমন সেবামূলক ফাউন্ডেশন চালাতে বিপুল অর্থের প্রয়োজন। অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সংগঠনের পক্ষে যা একা চালানো সম্ভব নয়। তাই তো মাশরাফি বিপিএল শুরুর আগে তার ফ্র্যাঞ্চাইজি রংপুর রাইডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহানের কাছে নড়াইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য একটি আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স চেয়ে নিয়েছেন।

মাশরাফির বিশ্বাস, এখন প্রাণ ড্রিংকিং ওয়াটার দুই বছর তার ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে তার নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের নানা সেবা ও জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ড পরিচালনায় একটা সহায়ক শক্তি হিসেবে মিলে গেল।

প্রাণ ড্রিংকিং ওয়াটার মাশরাফির নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনকে দু’বছরের কর্মকান্ড পরিচালনায় ঠিক কত টাকা দেবে? প্রাণ গ্রুপ কিংবা মাশরাফি তা জাগো নিউজের কাছে প্রকাশ না করলেও মাশরাফির খুব ঘনিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে, এখন থেকে পরবর্তী দুই বছর নড়াইল জেলায় প্রাণ ড্রিংকিং ওয়াটারের যত বোতল বিক্রি হবে, তা থেকে বোতল প্রতি এক টাকা করে দেয়া হবে নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের ফান্ডে।

এআরবি/আইএইচএস/আইআই