রাতের অন্ধকারেও থেমে নেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বক্তৃতা আর গানের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো রাত কাটাচ্ছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা। শহীদ মিনারে শীতের রাতে খোলা আকাশের নীচে পলিথিন ও কাগজ বিছিয়ে বুক ভরা কষ্ট নিয়ে রাত কাটছে তাদের।
Advertisement
প্রধান শিক্ষকদের এক গ্রেড নিচে বেতন নির্ধারণের দাবিতে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের ডাকে চলমান আন্দোলনে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক কোনো সাড়া মেলেনি। তবুও সুখবরের আশায় শত শত শিক্ষক আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।
রোববার রাত ৯টার দিকে সরেজমিনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকদের মধ্যে কেউ শুয়ে কেউ বসে আবার কেউবা মনোযোগ দিয়ে বক্তব্য ও গান শুনছেন। শনিবার থেকে চলমান আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের ফলে বয়স্ক ও নারী শিক্ষকরা সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক ঘোষণা না আসলেও হতাশ নন শিক্ষকরা। তাদের মনোবল চাঙ্গা এবং তাদের সকলের এক কথা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবেন না। মাইকে থেমে থেমে নানা প্যারোডি, দেশাত্মবোধক ও সংহতি প্রকাশ করে বিভিন্ন সংগঠনের ছোট বড় নেতা ও আন্দোলনকারী শিক্ষকদের বক্তৃতা চলছে। সবার বক্তৃতায় একই সুর, প্রধান শিক্ষকদের বেতনের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকদের বেতনের তিন ধাপ পার্থক্য শুধু বৈষম্যমূলক নয় অসম্মানজনকও।
গাইবান্ধার শিক্ষক আসাদুজ্জামান শনিবার সকাল থেকে বুকে ও পিঠে বেতন বৈষম্যের কথা লেখা পোস্টার নিয়ে অবস্থান করছেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, শিক্ষকদের জাতি গড়ার কারিগর বলা হলেও তাদের প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত ও কম বেতন দেয়া হয়। যত কষ্টই হউক দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ঘরেও ফিরবেন না বলে জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দু’জন নারী শিক্ষক জানান, গত দু’দিন ধরে ঠিকমতো খাইতে পারি নাই। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে এদিক সেদিক ছুটোছুটি করতে হচ্ছে। ঢাকায় আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে গোসল করে ফ্রেস হয়ে আসছেন।
Advertisement
এমইউ/এআরএস