ফাইনালে ওঠার পর বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন দর্শকদের আহ্বান জানিয়েছিলেন, মাঠে এসে মেয়েদের সমর্থন জানাতে। দলের খেলোয়াড়রাও বারবার বলেছিলেন, দর্শক আসলে তারা অনুপ্রাণিত হন।
Advertisement
রোববার ফাইনালে কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের তিনটি গ্যালারির দুটিই প্রায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন দর্শকরা। অনেকটা উৎসব আমেজে মানুষ মাঠে এসেছেন। অনেক নারী ও শিশু দর্শকও উপভোগ করেছেন বাংলাদেশ-ভারতের মেয়েদের ফুটবল যুদ্ধ।
কেবল গ্যালারিতেই নয়, স্টেডিয়ামঘেঁষা ভবনগুলোর ছাদ ও বারান্দায়ও লাল-সবুজ পতাকা হাতে অনেক মানুষ দেখেছেন আঁখি-মনিকাদের ফুটবল। খেলা শেষ হওয়ার অনেক পরেও কয়েক হাজার দর্শক অপেক্ষা করেছে গ্যালারিতে। করতালি আর 'বাংলাদেশ, বাংলাদেশ' স্লোগান দিয়ে মেয়েদের ট্রফি আর পুরস্কার গ্রহণের মুহূর্তগুলোকে মুখোরিত করে রেখেছে।
ফুটবলের এমন আনন্দ মানুষ অনেক দিন দেখেনি। ২০১৫ সালে কিশোর ফুটবলাররা সিলেটে ভারতকে হারিয়ে সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দুই বছর পর কিশোরীরা সে আনন্দ ফিরিয়ে আনলো আবার। খেলার পর সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে যখন স্টেডিয়াম ত্যাগ করছিল মনিকা-তহুরারা, তখন স্টেডিয়ামের প্রধান ফটকে কয়েকশত দর্শক মেয়েদের নাম ধরে এবং 'বাংলাদেশ-বাংলাদেশ' বলে স্লোগান দিয়েছে।
Advertisement
খেলোয়াড়দের বহন করা বাসটি যতক্ষণ পর্যন্ত দর্শকদের দৃষ্টির মধ্যে ছিল, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা স্লোগান দিয়েই গেছে। মেয়েরাও কোনো কার্পণ্য করেনি দর্শকদের অভিভাবদনের জবাব দিতে। গাড়ীর জানালার দিয়ে হাত নেড়ে দর্শকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা।
অনেকের ধারণা, হাজার দশেক দর্শক মেয়েদের ফাইনাল দেখেছে গ্যালারিতে বসে। অথচ এ টুর্নামেন্টের প্রথম দিনে বড়জোড় ৭ থেকে ৮ শত দর্শক ছিল স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশের মেয়েদের দুর্দান্ত নৈপূণ্যই দর্শকদের মাঠে টেনেছে।
ম্যাচের পর বাংলাদেশ দলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন মনে করেন, ভারতকে দুইবার হারানো এবং ট্রফি জয় বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবলকে আরো এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে। তিনি খুশি মেয়েরা ফুটবলের দর্শকদের মাঠে ফিরিয়ে আনতে পারায়।
‘দেখেন প্রথম ম্যাচে কি দর্শক ছিল, আর ফাইনালে কত দর্শক এলো। আমাদের মেয়েরাই তাদের নৈপূণ্য দিয়ে দর্শক টেনেছে। এটা একটা বড় দিক’- বলেন বাংলাদেশ কোচ।
Advertisement
অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা দর্শকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘তারা যেভাবে গ্যালারিতে বসে আমাদের উৎসাহিত করেছেন, তা আমাদের দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। দর্শকদের উপস্থিতি, বিজয়ের মাস-সবকিছুই আমাদের ভালো খেলতে অনুপ্রাণিত করেছে। বিজয়ের মাসে দেশবাসীর জন্য এটা আমাদের একটা উপহার।’
আরআই/এমএমআর/আরআইপি