সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি। আর বৃষ্টি না থাকলে ধুলায় ধুসরিত রাস্তা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রাস্তার খানা-খন্দ। আর রাস্তার অর্ধেকটাজুড়ে দখল করে ধীরগতিতে ফ্লাইওভারের কাজ চলায় অসহনীয় নাভিশ্বাস উঠছে মালিবাগ, শান্তিনগর, বেইলি রোড, কাকরাইল ও আশপাশে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের। এসব কারণে ক্রেতাদের যেমন যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে, তেমনিভাবে বেচা বিক্রিও কম হচ্ছে। তাই হাসি নেই বিক্রেতাদের মুখে। রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই এলাকা সরেজমিন দেখা গেছে, রামপুরা ব্রিজ থেকে মালিবাগ হয়ে কাকরাইল পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট। অন্যদিকে মালিবাগ থেকে মগবাজার পর্যন্তও একই অবস্থা। আর এই যানজটের মধ্যেই ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত সবাই। মৌচাকে নারীদের ভিড় বেশি হলেও টুইন টাওয়ারে নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরদের সমান পদচারণা। শান্তিনগরের অভিজাত বিপণি বিতান টুইন টাওয়ার, বেইলি রোড ও মৌচাক মার্কেটের পাশাপাশি ফুটপাতগুলোতেও ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। নাটকপাড়া হিসেবে খ্যাত বেইলি রোডে গিয়ে দেখা যায়, নান্দনিক আর মোহনীয় নকশার বাহারি শাড়ি, থ্রিপিস, পাঞ্জাবি, শার্ট, জিন্স, ফতুয়া থরে থরে সাজানো। দেশি সুতা, তাঁতীদের নিরলস পরিশ্রম ও নজরকাড়া নকশায় তৈরি শাড়ির পসরা শোভা পাচ্ছে দোকানগুলোতে। এখানকার শাড়ির দোকান ছাড়াও দেশি ফ্যাশন হাউসগুলোতেও ঈদের বাজার জমে উঠেছে। এখানকার ফ্যাশন হাউস দেশাল-এ কথা হয় মিলি আখতারের সঙ্গে। রামপুরার এই অধিবাসী জাগো নিউজকে বলেন, অসহনীয় যানজটের কারণে এলাকায় ঈদের কেনাকাটা এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। এছাড়া রাস্তারও বেহাল দশা। রামপুরা থেকে শান্তিনগর পর্যন্ত এখন প্রতিদিনই যানজট হয়। টুইন টাওয়ারে শপিং করতে আসা আবদুল হাকিম ও তার পরিবারের সঙ্গে কথা বললে তারা ওই এলাকায় অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে যাওয়া ও যানজটের জন্য বিরক্ত প্রকাশ করেন। হাকিম জানান, সরকারকে এ বিষয়ে অবশ্যই নজর দিতে হবে। মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত সবার আনাগোনায় মুখরিত মৌচাক মার্কেট। এই মার্কেটে যেমন রয়েছে একদরের দোকান, তেমনি আছে দরদাম করে কেনার দোকানও। ঈদে মেয়েদের প্রধান আকর্ষণ সালোয়ার-কামিজ। মৌচাক মার্কেটের প্রতিটি তলায় কমবেশি সালোয়ার-কামিজের দোকান আছে। তবে তৃতীয় তলায় বেশি। নতুন নকশায়, নতুন কাপড়ের সালোয়ার-কামিজে ছেঁয়ে গেছে দোকানগুলো। এ ছাড়া এখানে পাওয়া যায় শিশুদের দারুণ সব পোশাক। যেমন গেঞ্জি, শার্ট, প্যান্ট, স্কার্ট, টপস, মেয়েদের প্যান্ট, শার্ট ইত্যাদি। মার্কেটের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় আছে শাড়ির দোকান। এখানে অনেকগুলো টেক্সটাইল মিলের শাড়ি সরাসরি বিক্রি হয়। প্রাইম টেক্সটাইল, রাজশাহী সিল্ক হাউস, প্রাইডেক্স টেক্সটাইল, বেঙ্গল টেক্সটাইল, তাঁত বৈচিত্র্য, খাজানা, খান শাড়িজ, রেইনবো শাড়িজ, বাসন্তী শাড়িঘর ও স্বর্ণলতা শাড়ি।রাজশাহী সিল্ক হাউসের মালিক করিব হাসান জানান, ফ্লাইওভারের কাজ শুরুর পর থেকেই ওই এলাকার দুর্ভোগ শুরু। অসহনীয় যানজটের কারণে ক্রেতাদের ভিড় কমে গেছে। এজন্য তাদের বিক্রিও কম হয় বলে দাবি করেন তিনি। এইচএস/বিএ/পিআর
Advertisement