জাতীয়

পাল্টে গেছে বিমানের লোকসানের ইতিহাস

লোকসান কাটিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠান। ধারাবাহিক তৃতীয় বছরের মতো মুনাফা অর্জন করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত এই প্রতিষ্ঠান। বিদায়ী অর্থাৎ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিমান করপূর্ববর্তী মুনাফা অর্জন করেছে ১৫১ কোটি টাকা। নিট মুনাফা হয়েছে ৪৭ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে নিট মুনাফা ছিল ২৩৫ কোটি টাকা। বিমান ২০১৪-১৫ অর্থবছরে নিট মুনাফা অর্জন করে ৩২৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিগত তিন অর্থবছরে বিমানের নিট মুনাফা অর্জিত হয়েছে ৬০৬ কোটি টাকা। বিমানের ২০১৬-১৭ অর্থবছরের আর্থিক বিবরণী থেকে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

Advertisement

লাভের অব্যাহত এই ধারা বিমান নিয়ে বর্তমান সরকারের সুনির্দিষ্ট ও সুষ্ঠু পরিকল্পনার প্রভাব উল্লেখ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এএম মোসাদ্দিক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, আমরা আশা করছি লাভের এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, আগামী বছর এয়ারক্রাফট বৃদ্ধির পাশাপাশি বিমান তার নেটওয়ার্ক বিস্তার করার উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী বছর মার্চ মাসে চীনের গুয়াংজু রুটে আমরা ফ্লাইট চালানোর প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। এছাড়া ২০১৮ সালে কলম্বো এবং মালেতেও নতুন রুট খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

কার্গো পরিবহনের চিত্র জানতে চাইলে বিমানের মুখপাত্র ও জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ জানান, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিমান ৩৩ হাজার ৫৪২ মেট্রিক টন মালামাল পরিবহন করেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে যা ছিল ৪০ হাজার ৯৩১ মেট্রিক টন। অর্থাৎ বিমান বিদায়ী অর্থবছরে আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৮ শতাংশ কম কার্গো পরিবহন করেছে। গত ৮ মার্চ যুক্তরাজ্য সরকার কর্তৃক কার্গো পরিবহনে নিষেধাজ্ঞার কারণে বিমানের আয় কম হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কার্গোখাতে আয় হয়েছে ২৪৪ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এ খাতে আয় ছিল ৩১৫ কোটি টাকা।

Advertisement

তিনি আরও জানান, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিমান হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার নিজস্ব ১৬ হাজার ৪৭৩টি ফ্লাইট এবং ২৬টি বৈদেশিক এয়ারলাইন্সের ৪৮ হাজার ৫০২টি ফ্লাইট অর্থাৎ সর্বমোট ৬৪ হাজার ৯৭৫টি ফ্লাইটে গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবা দিয়েছে। বর্তমান বিমানবহরে রয়েছে বোয়িং এর সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ৪টি ব্র্যান্ড নিউ বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর এবং ২টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ। এছাড়া রয়েছে লিজে সংগৃহীত ২টি বোয়িং ৭৭৭-২০০ইআর, ২টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, ১টি এয়ারবাস এ-৩৩০ ও অভ্যন্তরীণ গন্তব্যের জন্য ২টি ড্যাস৮-কিউ৪০০ উড়োজাহাজ। বিমানবহরের উড়োজাহাজগুলো বয়সের দিক থেকে অত্যন্ত আধুনিক ও নবীন। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বিমানবহরে যুক্ত হবে বিশ্বের সর্বাধুনিক ৪টি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার।

উল্লেখ্য, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং খাতে সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিমানে চলতি বছর ১০০ কোটি টাকার ইক্যুইপমেন্ট ক্রয় করা হয়েছে এবং যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডেলিংয়ে ৬৩৭ জন নতুন জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যার সুফল ইতোমধ্যেই যাত্রীরা পেতে শুরু করেছেন। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ অবতরণের পর ব্যাগেজ বেল্টে প্রথম ব্যাগেজ ড্রপ ২০ মিনিটে এবং শেষ ব্যাগেজ ড্রপ ৮০ মিনিটে এর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বিমান এবং ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার শতকরা ৯৫ ভাগ অর্জিত হয়েছে।

আরএম/বিএ/এমএস

Advertisement