নেপালের ভয়াবহ ভূমিকম্প যে কী চূড়ান্ত পর্যায়ের মানবিক সংকট তৈরি করেছে তারই একটি নমুনা হোকসে গ্রাম। বাঁচতে গেলে একটা কিডনিই যথেষ্ট। তা হলে দু`টি দিয়ে কি হবে! এই যুক্তিতেই কাঠমান্ডুর অদূরে হোকসে গ্রামে প্রায় সবাই একটা কিডনি বিক্রি করেছেন শুধুমাত্র একটু মাথা গোঁজবার আশ্রয় বানানোর জন্য। গ্রামের বাসিন্দা চার সন্তানের মা গীতা জানাচ্ছেন, `আমার ননদ বলেছিল বাঁচার জন্য একটা কিডনিই অনেক। ওর কথায় আমি একটা কিডনি বিক্রি করেছি ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকায়। আমায় ভারতে নিয়ে গিয়েছিল সে। একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে গিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। এটা এক প্রকার চুরি করেই নেওয়া। ভাবতে খারাপ লাগে, আমার বোন আমার কিডনি চুরি করল, আর ভূমিকম্প চুরি করল আমার বাড়ি।` এখন হোকসে গ্রামের সবার মনের কথা এটাই। যে আশ্রয় বানানোর জন্য প্রায় সবাই শরীরের একটা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বিক্রি করলেন, ভূমিকম্পে সবার বাড়ি ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। গীতা তার সন্তানদের নিয়ে আজ প্লাস্টিকের দেওয়ার দেওয়া টিনের চালের নিচে একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে দিন কাটাচ্ছেন। গ্রামের অনেকেই এমন কথাও জানিয়েছেন, যে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কারবারিরা তাদের কাছে এসে এমন কথাও বলেছেন যে, কিডনি চুল বা নখের মতো ফের গজিয়ে যাবে। চিন্তার কিছু নেই। আসলে, গ্রামের নিতান্ত গরিব মানুষদের পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এমন ঘৃণ্য ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আরও ভয়ানক ব্যাপার এই যে, কথায় কাজ না হলে অনেকেই গায়েব হয়ে যান। বহু খোঁজ করার পরেও তাদের কোনও হদিশ মেলে না। এ ভাবেই প্রতি বছর বহু মানুষ হারিয়ে যাচ্ছেন। মনে করা হচ্ছে, এদের খুন করে শরীরে যাবতীয় অঙ্গ বার করে নেওয়া হয়। এ তালিকা থেকে বাদ যান না মানসিক ভারমাস্যহীনরাও। এসআরজে
Advertisement