দেশজুড়ে

টিকেট আকুতি : ঢাকায় ফিরবেন যেভাবে

টিকেট যুদ্ধ শেষে ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় যেতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। এদিকে রাজধানীর বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করায় বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীরা একটু আগে থেকেই ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে। একইভাবে স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে শতবাধা অতিক্রম করে নিজ নিজ এলাকায় প্রিয়জনদের কাছে যেতে শুরু করেছে মানুষগুলো। আর এদিকে প্রতিদিন ফাঁকা হতে শুরু করেছে মানুষে ভরপুর ঢাকা। কিন্তু, বাড়ি ফিরেও যেন শান্তি পায় না ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষগুলো। এই অশান্তির নাম ফিরতি টিকেট। ফিরতি টিকেট নিয়ে গাইবান্ধা থেকে বিস্তারিত জানিয়েছেন আমাদের প্রতিনিধি অমিত দাশ।দীর্ঘদিন পর ঘরে ফিরবে প্রিয়জন এই খুশিতে জনপদগুলোতে উৎসবের সাড়া পড়েছে। তেমনি চারদিক থেকে শুরু হয়েছে টিকেটের জন্য তদবির। একই সঙ্গে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করে যারা আবার ফিরে যাবেন তারা গাইবান্ধার আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবদের কাছে বার বার ফোনে যোগাযোগ করছেন। তাদের কণ্ঠে আকুতি, ভাই ওমুক দিনের ঢাকাগামী কোচের টিকেট কিন্তু যোগার করে রাখতে হবে। না হলে ঢাকা ফিরে বসের কথা শুনতে হবে।গাইবান্ধার লিটলম্যাগ কর্মী কিংশুক ভট্টাচার্য জাগো নিউজকে জানান, আত্মীয়-স্বজন বাদে অন্তত ২০ জন বন্ধু কিংবা বড়ভাই কেউ নিজের, আবার কেউ পরিবারের জন্য বাসের টিকেট চেয়েছেন। কাউকে না বলতে পারেন না, তাই মোবাইল ফোন প্রয়োজন ছাড়া খোলেন না।এদিকে গাইবান্ধা শহরের বাস টার্মিনাল ও অভিজাত বাস কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা গেছে তাদের প্রস্তুতিপর্ব। সারা বছর তারা ভালো ব্যবসার জন্য দুই ঈদের পরের দিনগুলোর জন্য অপেক্ষা করেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাউন্টার কর্মী জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে টিকিট বিক্রি শুরু না হলেও অনেকের অনুরোধ টুকে রাখা হচ্ছে। দাম অল্পকিছু বাড়লেও তা যাত্রীর সাধ্যের মধ্যেই থাকবে। তবে টিকেটের সন্ধানে আসা এক ঢাকাপ্রবাসীর ছোট ভাই ওবায়দুল ইসলাম বললেন, কাউন্টারের টিকিট ফুরালে দালালদের পোয়াবারো। প্রতি বছরই দেখি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বেশী দিয়ে বাসের টিকেট কিনতে বাধ্য হন ঈদ করতে আসা মানুষ-তাও মেলে না।গাইবান্ধা থেকে অভিজাত গাড়ি বলতে হানিফ পরিবহন, এসআর, শ্যামলী ও আল-হামরা পরিবহনের গাড়ি ঢাকা-গাইবান্ধা রুটে নিয়মিত চলাচল করে। ঢাকায় গন্ত্যব্য গাবতলী, টেকনিক্যাল, মহাখালী ও কলেজ গেট। ছাড়েও ওই সব এলাকা থেকে। ঈদের পর ঢাকাগামী ওইসব গাড়ির মধ্যে আল-হামরা প্রতিদিন গাইবান্ধা শহরের আসাদুজ্জামান মাকেট ও বাস টার্মিনাল থেকে ভোর ৫টা, সকাল ৭টা, ৯টা, ১০টা, সাড়ে ১০টা, বেলা সাড়ে ১১টা, দুপুর ৩টা, রাত ১০টা, সাড়ে ১০টা ও ১১টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।একইভাবে প্রতিদিন ডিবি রোড ও বাস টার্মিনাল থেকে হানিফ পরিবহনের গাড়ি সকাল ৮টা, ৯টা, ১০টা, ১১টা, সাড়ে ১২টা, দুপুর ৩টা, রাত্রী ১০টা ও ১১টায় ছেড়ে যাবে।  তাদের গাড়ি বহরে ঈদ উপলক্ষে বাড়তি গাড়ি যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।ঈদে এসআর পরিবহনের প্রতিদিন ১৪টি গাড়ি যাওয়া আসা করবে।  ভোর ৫টা, সকাল ৯টা, সাড়ে ৮টা, ১০টা (এসি), সাড়ে ১০টা, দুপুর ১২টা, বিকেল ৩টা, বিকেল ৪টা, রাত ১০টা,  সাড়ে ১০টা (এসি) ও পৌনে ১১টায় (এসি) গাড়িগুলো গাইবান্ধা বাস টার্মিনাল থেকে ছাড়বে। শ্যামলী পরিবহনের গাড়িগুলো গাইবান্ধা থেকে সকাল ৭টা, পৌনে ৯টা, ১০টা, বেলা সাড়ে ১১টা, বিকেল ৩টা, রাত ১০টা ও রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা যাবে। এছাড়া চট্টগ্রামমুখী গাড়ি ছাড়বে ভোর সাড়ে ৫টা এবং সিলেটে সকাল সাড়ে ৬টায় যাত্রা করবে। তবে হানিফ কাউন্টার মাস্টার মবিনুল ইসলাম সন্জু বলেন, পরিস্থিতির কারণে সময়ের পরিবর্তন ঘটতেও পরে।জেলা মটর মালিক সমিতি’র দফতর সম্পাদক আতিক বাবু জানান, অপেক্ষাকৃত কম টাকায় যারা ঢাকা যেতে চান তাদের জন্য বেশ কিছু লোকাল গাড়ি রয়েছে। এসব গাড়ি সুন্দরগঞ্জ থেকে ছেড়ে গাইবান্ধা হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করে। গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে নাপু এন্টার প্রাইজ, ভাই বন্ধু, রুপা, জিহাদ-টুসু, অর্ণব, সোনালী, শানে খোদা, জে জে, রোমান এন্টার প্রাইজ, বিসমিল্লাহ, একতা ও সিহাব নামে গাড়ি রয়েছে। এসব গাড়ির সময় সীমা কাউন্টারগুলোতে যোগাযোগ করলে জানা যাবে। অফ সিজনে ভাড়া কম হলেও ঈদ উপলক্ষে এই গাড়িগুলোর ভাড়া কিছুটা বৃদ্ধি পায়।এমএএস/আরআই

Advertisement