জাতীয়

ঈদকে সামনে রেখে নতুন রূপে চাঁদাবাজরা

ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে তৎপর হয়ে উঠেছে চাঁদাবাজরা। বকশিস, উপহার, সেলামি, টাকার পরিবর্তে পণ্যসহ নানা ভাবে চলছে চাঁদাবাজি। ঈদ উপলক্ষে বেড়েছে চাঁদার পরিমাণও। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে এসব হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে অসহায় ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ী নেতারা চাঁদাবাজির কথা অস্বীকার করেছেন।রাজধানীর মুক্তিযোদ্ধা সুপার মার্কেট, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, রাজধানী সুপার মার্কেট, তালতলা সুপার মাকের্ট, গুলিস্তান হকার্স মার্কেট ও পুরান ঢাকার বেশির ভাগ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন নামে চাঁদা আদায় করছে চাঁদাবাজরা।ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে নতুন করে চাঁদা নির্ধারণ করছে চাঁদাবাজরা। দোকান বেধে আগের চাঁদার সঙ্গে ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা বাড়তি দিতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। কোনো কোনো ক্ষেত্রে লাখ টাকাও ছাড়িয়ে গেছে চাঁদার হার।রাজধানীর নিউ মার্কেটে কাপড় ব্যবসায়ী হামিদ জানান, প্রতিদিন চাঁদা হিসেবে দেড়শ` টাকা করে দিতে হয়। এর সঙ্গে ঈদ উপলক্ষে বাড়তি আরো পাঁচ হাজার টাকা গুনতে হবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নামে এ চাঁদা নিচ্ছে। চাঁদা না দিলে ব্যবসা করা যাবে না, রয়েছে প্রাণ নাশের হুমকিও।নিউ মার্কেটে পাঞ্জাবী ব্যবসায়ী কবির জানান, চাঁদা হিসেবে প্রতিবার চার-পাঁচ হাজার টাকা বাড়তি নেয়। এবার টাকা না নিয়ে ১০টি পাঞ্জাবী নিয়েছে। আমাদের কিছুই করার নেই। প্রতিবাদ করলে এখানে ব্যবসা করতে পারবো না।তবে এ বিষয়ে উল্টো কথা বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এসএ কাদের কিরনের মুখে। জাগো নিউজকে তিনি জানান, এখন আর আগের মত চাঁদাবাজি হয় না। দুই একটা যা হয় তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। গতকাল (শুক্রবার) রাজধানী সুপার মার্কেটে চাঁদার দাবি করলে সঙ্গে সঙ্গে র্যাব তাদের আটক করে। তাই অন্যান্য বারের তুলনায় পরিস্থিতি খুবই ভালো। ঈদ উপলক্ষে নিউ মার্কেট, গাউছিয়া মার্কেট এককালিন চাঁদা নির্ধারণের সম্পর্কে জানতে চাইলে এসব এলাকায় চাঁদা নেওয়াকে চাঁদাবাজি বলতে নারাজ এই দোকান মালিক নেতা। তিনি বলেন, ঈদে ছাত্ররা ব্যবসায়ীদের কাছে সেলামি, বকশিস চেয়ে থাকে, তাকে চাঁদাবাজি বলা যাবে না। তারা আনন্দে ঈদ করার জন্য চাইতেই পারে। এ জন্য জাকাত-ফেতরা থেকে ব্যবসায়ীদের এ টাকা দিতে বলেছেন এস এ কাদের কিরন।রমজানে চাঁদাবাজির সঙ্গে বিভিন্ন মহলের সংশ্লিষ্ট থাকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, চাঁদাবাজির কোন অভিযোগ এখনও পাওয়া যায়নি। কারো বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে সে যে দলেরই হোক না কেন বা কারো পরিচয় বিবেচনায় না রেখে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) এস এম জাহাঙ্গীর সরকার বলেন, রাজনৈতিক সংগঠনের পরিচয়ে চাঁদাবাজির কোন অভিযোগ আমরা এখনো পাইনি। বিষয়টি তদন্ত ও যাচাই-বাছাই করার পর বলা যাবে।এসআই/আরএস/এমআরআই

Advertisement