আইন-আদালত

এটা কোনো মুদি দোকান নয় : যুক্তিতর্কে খালেদার আইনজীবী

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তি উপস্থাপনে তার আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান বলেন, এটা কোনো মুদি দোকান নয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা। মামলাটি কোনো রকমভাবে শেষ করলে হবে না।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা পাঁচ মিনিটে ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া উপস্থিত হন। এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান দ্বিতীয় দিনের মতো তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে এ মামলায় জবাব দেওয়ার জন্য ডেকে আনা হয়েছে। এটা চকবাজার বা পাটোয়াটলির কোনো পাইকারি দোকান নয়। মামলাটি কোনো রকমভাবে শেষ করলে হবে না। মাননীয় আদালত এর চেয়ে আর বেশি কিছু বলতে পারবো না।

আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খানের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হলে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, খন্দকার মাহবুব হোসন ও এজে মোহাম্মদ আলী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করবেন।

এর আগে বুধবার খালেদার আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। যুক্তি উপস্থাপনে তিনি বলেন, বিচারে যেন কোনোরকম বিভ্রান্তি না হয়। বেগম খালেদা জিয়া যেন ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হন।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, মামলাটির সঠিকভাবে চার্জ গঠন হয়নি। মামলার এজাহারের সঙ্গে চার্জ গঠনের কোনো মিল নেই। কোনো সাক্ষী বলে নাই খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এবং বিদেশ থেকে তার একাউন্টে টাকা এসেছে।

এ দিন খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন আদালত।

মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় একটি মামলা করে দুদক।

Advertisement

২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

এছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় আরও একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর সাবেক নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

জেএ/এআরএস/আরআইপি