শিক্ষা

আন্দোলনে অনড় স্কুল শিক্ষকরা

সরকারি প্রাথমিক স্কুলের প্রশিক্ষকণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে দুই দফায় বৈঠক করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফর (ডিপিই)। বৈঠকে ফলপ্রসূ কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ২৩ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশনে নামছেন শিক্ষক নেতারা।

Advertisement

শিক্ষক প্রতিনিধিরা জানান, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের পরবর্তী গ্রেডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল নির্ধারণে ঘোষিত আন্দোলন প্রত্যাহার হচ্ছে না।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে আজ বুধবারসহ কয়েক দফায় ডিপিই’র অতিরিক্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালকের সঙ্গে শিক্ষক প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়েছে। সেখানে প্রায় ২৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তিনি আমাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করতে প্রস্তাব করেছেন। আমরা এ প্রস্তাবে রাজি নই। এ কারণে ২৩ ডিসেম্বর থেকে সহকারী শিক্ষক মহাজোটের সব শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশনে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে।

তারা আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকের বেতনের পার্থক্য এক ধাপ থেকে বর্তমানে তিন ধাপে রয়েছে। প্রস্তাবিত প্রধান শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে দেয়া হলে এ বেতন বৈষম্য চার ধাপে উন্নীত হবে। এতে বৈষম্য আরও বাড়বে। তাই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের নিচের ধাপে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের বেতনের দাবিতে সারাদেশে একযোগে আন্দোলন শুরু করা হবে বলে জানান।

Advertisement

বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনূর আল আমীন জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের এক দফা দাবিতে ডিপিই’র সঙ্গে আমাদের একাধিক বৈঠক হলেও তাতে কোনো ফলপ্রসূ হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আজ ডিপিই’র অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. রমজান আলীর শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে সহকারী শিক্ষকদের একাধিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে অতিরিক্ত মহাপরিচালক আমাদের দাবি আমলে দেয়া হবে এ আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে আসতে নির্দেশ দিয়েছেন। আমাদের দাবির বিষয়টি লিখিতভাবে ডিপিইতে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষকদের দাবির বিষয়টি লিখিতভাবে দেয়া হবে। তবে দাবি আদায় ছাড়া আন্দোলন প্রত্যাহার হবে না।

বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক অনলাইন সমিতির সভাপতি কাজী আবু নাসের আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, প্রশিক্ষকপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের একদফা দাবি বাস্তবায়ন ছাড়া আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, বৈঠক শেষে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সভায় বসেন। সে সভায় আন্দোলন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ আন্দোলন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের ব্যানারে পালিত হবে।

Advertisement

এ বিষয়ে ডিপিই’র অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. রমজান আলী জাগো নিউজকে বলেন, সহকারী শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া বিষয়টি নিয়ে তাদের কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে আজও বৈঠক হয়েছে। ক্লাস ছেড়ে আন্দালনে না যাওয়ার জন্য শিক্ষক প্রতিনিধিদের প্রস্তাব করা হয়েছে। তাদের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে এমন প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে। তারা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।

দাবি আদায় ছাড়া শিক্ষকরা আন্দোলন থেকে না আসার ঘোষণা দিয়েছেন এমন বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা শিক্ষকদের দাবির বিষয়টি লিখিতভাবে দিতে বলেছি। সেটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এর বেশি আমরা আর কি করতে পারি এমন প্রশ্ন তুলে তিনি আরও বলেন, শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নে কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। সে প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করে নতুন কিছু বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। শিক্ষকরা চাইলে দাবির বিষয়ে সচিবের সঙ্গে বসানো যেতে পারে। এর বেশি আমাদের আর কিছু করার নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এমএইচএম/জেএইচ/এমএস