বিনোদন

মাইলসের ভাঙন নিয়ে যা বললেন শাফিন আহমেদ

দেশের ব্যান্ড সংগীতের আদর্শ হয়েই ৩৬ বছর ধরে পথ চলেছে মাইলস। ব্যান্ড গানের শ্রোতাদের কাছে ‘মাইলস’ একমুঠো আবেগের নাম, আদরের নাম। অবশেষে গানের এই দলটিতেও লাগলো ভাঙনের ঢেউ। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের জের ধরে আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে মাইলস নিয়ে দ্বন্দ্ব-বিভাজনের কাণ্ড।

Advertisement

সম্প্রতি মাইলসের ভাঙনে শাফিন আাহমেদকে অভিযুক্ত করে হামিন আহমেদ, মানাম আহমেদসহ দলের অন্য সদস্যরা নানারকম বক্তব্য দিয়েছেন। সেইসব বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলন করেন মাইলসের অধিকাংশ গানের গায়ক ও সুরকার শাফিন আহমেদ।

সেখানে তিনি জানান, মাইলস গড়ে উঠেছিলো ১৯৭৯ সালে। এর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক চরিত্র ছিলো না। ফলে আর্থিক ও নানা রকম বিষয়ে ঝামেলা দেখা যাচ্ছে। সেগুলো নিয়ে আমি বারবার হামিন আহমেদসহ দলের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। বিশেষ করে প্রতেক্যের পাওনার ব্যাপারে, রয়্যালটির ব্যাপারে। কিন্তু কেউ এইসব কানে নিচ্ছিলো না। আমাকে ইশারায় দল ত্যাগ করার ইঙ্গিত করা হয়েছে। ঝামেলা না মিটিয়েই আমাকে বাদ দিয়ে শো করা হয়েছে। বাধ্য হয়েই মাইলসকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপরেখা দেয়ার চেষ্টা করতে হলো। মাইলস এখন লিমিটেড কোম্পানী। এখন কেউ মাইলস ব্যান্ড লিমিটেডের অনুমতি ছাড়া মাইলস নামটি ব্যবহার করতে পারবে না। কতিপয় ব্যক্তি এ কাজ করছে। যা আইন সিদ্ধ নয়।’

তাহলে ব্যান্ডের অন্য সদস্যরা এখন কী করবে- এমন প্রশ্নে শাফিনের বক্তব্য, ‘এটা তাদের বিষয়। তারা যদি মাইলসে আসতে চায়, ওয়েলকাম। আমি দলে উদারতার চর্চা করেছি। এখনও আমি উদারতার কথাই বলব। তারা যদি আসতে চায় আমার কোনও আপত্তি নেই।’

Advertisement

যদি তারা না আসতে চায় তবে কী নতুন করে দল গঠন করবেন আপনি? এমন প্রশ্নের জবাবে শাফিন বলেন, ‘এত তাড়াহুড়োর কিছু নেই। যদি মাইলসের সদস্যরা মনে করে এখানে আসবে তবে ভালো। যদি না আসতে চায় তবে পরবর্তী ভাবনা আমি ভাববো। একটি ব্যান্ড ৩৬ বছর ধরে চলছে। তিন মাস বিরতিতে থাকলে তাতে খুব একটা ক্ষতি কিছু হবে না। কিন্তু কাউকে ঠকিয়ে, কাউকে ছোট করে দল চালানোর পক্ষে আমি নই।’

ঝামেলার শুরুটা কোথায়? জবাবে শাফিন বলেন, ‘ঝামেলার শুরু চলতি বছরের এপ্রিল থেকে। এর আগেও ছোট ছোট কিছু ঝামেলা হয়েছে সেগুলো চেপে গিয়েছি। কিন্তু এবার আর সেটি সম্ভব হয়নি। একটি ব্যান্ড দলের একচ্ছত্র মালিক কখনোই একজন হতে পারে না। কিন্তু হামিন আহমেদ নিজেই সবকিছুর দায়িত্ব নিজের হাতে রেখেছেন। সম্প্রতি তিনি ছয়টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন মাইলসের হয়ে। সেখানে কতো টাকা আসলো, কে কতো টাকা পাবো সেইসবের কিছুই তিনি বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। আমি এগুলোর বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলে তিনি অন্য সদস্যদের নিজের পক্ষে নিয়ে আমার সঙ্গে নোংরামি করছেন। রয়েলটির কথা বললেই তিনি ও অন্য সদস্যরা বলছেন ভেবে দেখবেন। কিন্তু কেন? আমার গাওয়া গান দিয়ে তারা ইনকাম করবেন সেটার রয়েলটি আমি চাইবো না? আর আমার জুনিয়ররা কেন আমার পাওনা নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন? বারবার হামিন আহমেদের কাছে মেইল ও চিঠিতে আমি লিখিতভাবে ব্যাখ্যা চেয়েছি এইসবের। তিনি কোনো সদুত্তর দেননি। উল্টো আমাকে দল ছাড়ার নিরব পরামর্শ দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘হামিন আহমেদ ও অন্য সদস্যরা বলেছেন আমি নাকি মাইলসে অনুরোধ করে যুক্ত হয়েছিলাম। মোটেও ব্যাপারটি এমন নয়। সবার সত্যটা জানা উচিত। আমি মাইলসের আগে থেকেই গানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। আমার প্রথম গানের রেকর্ড হয় ছয় বছর বয়সে আমার বাবা কমল দাসগুপ্তের হাত ধরে। ৯ বছর বয়স থেকে আমি নিয়মিতই বিটিভিতে গান গেয়ে প্রশংসিত হয়েছি। আমি যখন গানের ক্যারিয়ার গড়ব বলে ভাবছি তখন আমার মা ফিরোজা বেগম আমাকে বিদেশে লেখাপড়া করতে পাঠালেন। তার ইচ্ছে ছিলো ভালো ছাত্র হিসেবে আমি বিদেশে পড়বো এবং দেশে ফিরে সিভিল সার্ভিসে যোগ দেব। আমি লন্ডনে থাকাকালীন ‘ইটস ম্যাজিক’ ও আরও একটি ইংরেজি গানের রেকর্ড করে মাইলসের জন্য পাঠাই। হামিন আহমেদ আমাকে অনুরোধ করে তার দলের সঙ্গে থাকতে।

আমি তার অনুরোধেই নিজের পকেটের টাকা খরচ করে লন্ডনে বসে গানগুলো রেকর্ড করিয়ে পাঠিয়েছিলাম। মাইলসের প্রথম অ্যালবামটি যারা শুনেছেন তারা নিশ্চয়ই জানেন ইংরেজি সেই অ্যালবামের সবচেয়ে হিট গান ছিলো ‘ইটস ম্যাজিক’। পরে এই গানটাকেই প্রত্যাশা অ্যালবামে বাংলায় ‘যাদু’ শিরোনামে প্রকাশ করা হয়। সেটিও তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। আমি মাইলসের শুরু থেকেই ছিলাম। মানাম আহমেদ আজ এত কথা বলছেন, অথচ তিনি কী জানেন না যে আমার তিন বছর পর তিনি মাইলসে এসেছেন? তার এসব মনে রাখা উচিত। কাউকে কষ্ট দিয়ে কথা বলা ঠিক নয়।’

Advertisement

মাইলসের বাংলা গান করার গল্প শুনিয়ে শাফিন বলেন, ‘মাইলস প্রথমে বাংলা গান করতো না। ইংরেজি গানের কভার করতো, মাঝেমাঝে নতুন গান করতো। আমার হাত ধরেই বাংলা গানের দিকে হাঁটে মাইলস। এই জায়গাটিতে মানাম আহমেদরও অবদান অনেক। কিন্তু হামিন আহমেদ কখনোই বাংলা গান করতে রাজি ছিলেন না। গ্রিনরোডে এক বন্ধুর এখানে আমরা ব্যাডমিন্টন খেলছিলাম। সেখানে মানাম আমাকে বলে যে বাংলা গান করা প্রয়োজন। সব ব্যান্ডই বাংলা গান করছে। কিন্তু হামিন আহমেদ রাজি হচ্ছেন না। তাকে যেন আমি বুঝাই। আমি তাকে বুঝিয়ে রাজি করাই বাংলা গানে নিয়মিত হতে। ১৯৯১ সাল থেকে আমরা প্রথম বাংলা গান করি। তবে কেমন করে তারা আমার অবদানকে খাটো করতে চায়?’

তিনি আরও বলেন, ‘হামিন আহমেদ ও অন্য সদস্যরা সাংবাদিক ডেকে নিয়ে স্টুডিওতে বসে নিজেদের মনগড়া কথা বলে গেছেন একের পর এক। এইসব কথা আমাকে ছোট করেছে। তারা আমাকে খোঁচা দিয়েছেন আমি অন্যের সুরের কারণে শাফিন আহমেদ হয়েছি। আমি এই কথার তীব্র প্রতিবাদ করছি। তাদের জানার জন্য বলছি, আমি উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুরকার কমল দাসগুপ্ত ও নজরুল সম্রাজ্ঞী ফিরোজা বেগমের সন্তান। তাদের বিস্ময়কর প্রতিভার কিছ ছিটেফোটা আমি পেয়েছি। এই প্রতিভা ইশ্বর প্রদত্ত, এটা আমার দোষ নয়। আমি অন্যের সুরের উপর নির্ভর করে আজকের শাফিন আহমেদ হইনি। নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর দিয়েই আজকের অবস্থানে এসেছি। দেশের কোটি কোটি ভক্ত আমাকে ভালোবাসে আমার গায়কীর জন্যই, আমার বাজানো বেস গিটারে মজা পান বলেই।

সবার উদ্দেশ্যে বলতে চাই, মাইলসের সর্বমোট বাণির্জিক রেকর্ড ৮৪টি। তারমধ্যে সদস্য হিসেবে সর্বোচ্চ ২৯টি গানের সুর করেছি আমি, গেয়েছি সর্বোচ্চ ৪৬টি গান। সেগুলোর বেশিরভাগ শ্রোতাপ্রিয়। আমাকে এবং মাইলসকে জনপ্রিয়তার উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তবে কেমন করে তারা বলে আমি অন্যের সুরে আজকের শাফিন হয়েছি। যিনি নিজের সুরের গর্ব করছেন আমি ছাড়া আরও অনেকেই তার সুরে গান করেছে। সেই গানগুলোর কোনেটা কী জনপ্রিয়তা পেয়েছে? সুর বা সংগীতায়োজন যতোই ভালো করুন, ভালো গায়কীর অভাবে সেগুলো মার খেয়ে যায়। তবে আমার গায়কীকে খাটো করে কেন তারা সবাই নিজেদের প্রশংসায় মেতে উঠেছেন আমি বুঝতে পারছি না।’

সংবাদ সম্মেলনে শাফিন আহমেদ আরও বলেন, ‘মানাম আহমেদ বলেছেন তারা আমাকে এগিয়ে সবসময় এগিয়ে দিয়েছেন। এটা আজ কেন ঘটা করে বলতে হচ্ছে আমি জানতে চাই। একটি ব্যান্ডে সবসময়ই সবাই সবাইকে এগিয়ে দেয়। আমি একা অনেক কিছু করেছি। কখনো তো বলিনি এগিয়ে দেয়ার কথা। মানাম আহমেদকে মনে করিয়ে দিতে চাই, যখন সে মাইলসে জয়েন করবে বলে ভাবছে তখন সে আমার বাসায় কি-বোর্ড নিয়ে আসতো আমি তাকে বিখ্যাত সব ইংরেজি গানের কর্ডগুলো তুলে দিয়েছি। সেই মানাম আজ বড় বড় কথা বলছেন! তিনি প্রথমদিকে মাইলসে নিয়মিত ছিলেন না। আমাকে তার দিকটাও সামলাতে হতো। হামিন আহমেদকে জোর করে প্র্যাকটিসে আনতে হতো। যখন আমরা ফার্মগেটের স্টুডিওটি ছাড়লাম নতুন স্টুডিও আমাকেই খুঁজে দিতে হয়েছে। পরে হঠাৎ একসময় জানলাম সেই স্টুডিওর মালিক হিসেবে নিজের নামে কাগজ করিয়েছেন হামিন আহমেদ। শুনে আমি কিছু বলিনি, তবে অবাক হয়েছিলাম। অ্যালবামের কভার কী হবে, ডিজাইন সব আমাকে ভাবতে হয়েছে ৩৬টি বছর।

মাইলস ভারতে তুমুল জনপ্রিয় আপনারা সবাই জানেন। এর পেছনে একমাত্র এই শাফিন আহমেদের অবদান। আমি নিজ উদ্যোগে ভারতে মাইলসকে পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম। সেখানে অ্যালবাম প্রকাশ করেছি, স্টেজ শো করেছি। আজকে ভারতে আমাদের শো না হওয়ার পেছনে হামিন আহমেদ ও মানাম আহমেদরাই দায়ী। তারা নানারকম আচরণে ভারতে মাইলসের সম্পর্কটা নষ্ট করেছেন। আমি তো এতোসব করে ক্রেডিট নেয়ার জন্য পাগল হইনি। আমি চেয়েছি সচ্ছ্বতা থাকুক। যে মাইলস আজ বিশাল বটগাছে পরিণত হয়েছে সেখানে যেন কোনো নোংরামি, কাউকে ঠকানো, দলাদলি না থাকে। সেটাই আমার অপরাধ হয়ে গেল। আমি বারবার অনুরোধ করেছি যে যেসব অভিযোগ আমি তুলেছি সেসব না মিটিয়ে শো করা যাবে না। কিন্তু আমার কথা কেউ শুনলেন না। তারা আমাকে রেখেই শো করতে গেলেন। অথচ পোস্টারে আমার ছবি দিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন। এইগুলো তো ভন্ডামি। মাইলস কখনো ফ্লপ শো করেনি। কিন্তু এবার আমাকে রেখে কানাডাতে ৮০০ লোকের কনসার্টে মাইলস মাত্র ২০০ লোককে টানতে পেরেছিলো। আমার গ্রহণযোগ্যতা বেশি বলেই কী আমার উপর হিংসা সবার? কিন্তু আমি তো কাউকে কখনো খাটো করিনি, হিংসা করিনি?’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমার ব্যক্তিগত ক্যারিয়ার নিয়ে কথা তুলেছেন তারা। বলছেন সলো ক্যারিয়ারে মনযোগী হয়ে মাইলসে আমি অনিয়মিত। এটা মিথ্যাচার। আমি ২০০৭ সালে ভারতের এক কনসার্টের মঞ্চে হার্ট অ্যাটাক করেছিলাম। মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই নিজেকে রিকভার করে আবার মঞ্চে গিয়েছি। আমি তো আমার সহযোগীদের খুব ভালো চিনি। তাদের কারো যদি হার্ট অ্যাটাক হতো তারা দল ছেড়ে দিতেন আর পারবেন না বলে। আমি কিন্তু সাহস নিয়ে মঞ্চে গিয়েছি। গেয়েছি এবং মাতিয়েছি সবাইকে। নিজের জীবনের মায়া করিনি। মাইলসেক নিয়ে ভেবেছি। কখনো কী কেউ শুনেছেন আমার হার্ট অ্যাটাকের খবর? শ্রোতা-ভক্তরা চিন্তিত হবেন, মাইলস নিয়ে সবার মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে তাই এসব জানাইনি কাউকে। কেউ কোনোদিন বুঝতেও পারেনি এমন অসুখ নিয়ে শাফিন আহমেদ পারফর্ম করছেন। এর চেয়ে বেশি ডেডিকেশান আর কীভাবে হয় আমি জানিনা। কখনো নিজের ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারকে প্রাধান্য দেইনি। অথচ আমি যদি মাইলস না করতাম তবুও এই ব্যান্ডের যে কোনো সদস্যের চেয়ে ভালো পজিশনে থাকতাম। এটুকু বিশ্বাস আমি করি।

অথচ একবার হিসেবটা মিলিয়ে নিন, আজকের হামিন আহমেদ কিন্তু মিক্সড অ্যালবামে গান করেছেন। সাফল্য পাননি। মানাম আহমেদ অনেক গানের সুর করেছেন মাইলসের বাইরে, মিক্সড অ্যালবামে কাজ করেছেন, সিনেমায় মিউজিক ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছেন, মিউজিক ভিডিও বানিয়েছেন, অভিনয়ও করেছেন। একটা সময় তিনি বাইরের ক্যারিয়ার নিয়ে এত বিজি ছিলেন যে মাইলসের প্র্যাকটিসে আসলে তার লস হয় সেই কথাও বলেছেন। জুয়েল তো মাইলসে থেকেও অন্য ব্যান্ড চালিয়েছে। তো সবাই কিন্তু চেষ্টা করেছেন সলো ক্যারিয়ার দাঁড় করাতে। সফল হতে পারেননি। সেই দায় তাদের, আমার নয়। যদি আপনি সফল হতে পারেন তবে যে কোনো কাজই করতে পারেন। তারা সব করতে পারলেন দোষ হলো না যখন আমি করতে চাইলাম তখন সেটাই প্রবলেম হয়ে গেল। জোর করে কাউকে থামিয়ে রাখা যায় না। জোর করে মিউজিকও হয় না, ব্যান্ড চর্চা তো নয়ই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে মাইলসের যে ফেসবুক পেজটা আপনারা দেখছেন সেটা আমার একান্ত আগ্রহ ও উদ্যোগে। আমিই প্রয়োজনবোধ করেছিলাম ভক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য পেজটা করা দরকার। আমি অন্য চার সদস্যকে এর এডমিন করেছিলাম। কিন্তু কিছুদিন আগে লক্ষ করলাম সেই পেজ থেকে প্রথমে আমাকে এডিটর করা হলো তারপর এনালিস্ট; এবং সর্বশেষ আমাকে ব্লক করা হলো। এটা ছোটলোকি মানসসিকতা নয়? আমাকে যে তারা আর চাইছে না সেটা তো স্পষ্ট। কিন্তু কেন? আমার রয়েলটির ভাগ দিতে হবে না বলেই হয়তো।’

শাফিন আহমেদ বলেন, ‘আমার সৌভাগ্য আমি গাইতে পারি এবং দেশের মানুষ আমার গাওয়া গানকে ভালোবাসেন। আমার গানগুলোকে তারা মনে ঠাঁই দিয়েছেন। তারা মাইলসের গান বলতে শাফিনের গলাকেই চেনে সেটা আমার দোষ হতে পারে না। এটা আমার যেমন প্রাপ্তি তেমনই দলেরও। সবাই মিলে তো একটা অ্যালবাম করেছিলাম সর্বশেষ, কই কেউ তো একটা গানও শুনলো না মানাম, জুয়েলদের গলায়। এটা জোরাজুরির বিষয় নয়। মানাম, জুয়েলরা রত্ন তাদের যার যার জায়গায়। কেন জোর করে গান করতে হবে। আমাকে এই কথা শুনতে হয়েছে ওই অ্যালবামটি প্রকাশের সময়, মাইলসের অ্যালবামে আপনার মাত্র দুটি গান কেন? এত গান অন্যরা করলো সেগুলো তো কেউ শুনবে না। এটা আমার জন্য অপমানের।

আমি মাইলসকে সবসময়ই জীবনের জন্য আশির্বাদ ভেবেছি। এর সদস্যদের ভেবেছি চিরকালের সঙ্গী। এখানে এত চালবাজি তো আমি সহ্য করব না। আমার ভাই হামিন আহমেদ ও সবার কাছে অনুরোধ মাইলস এখন লিমিটেড কোম্পানী। এর মালিকানা আমার কাছে। আমার অনুমতি ছাড়া কেউ ‘মাইলস’ নামটি ব্যবহার করবেন না। যদি মাইলসের প্রতি ভালোবাসা থাকে তবে ব্যান্ডের সব নিয়ম কানুন মেনে চলার প্রত্যয় নিয়ে আসুন। আলোচনা করে আবার একসঙ্গে চলবো। নইলে নয়।’

অন্য সদস্যদের বাদ দিয়ে মাইলসকে লিমিটেড করেছেন। সেটা কী ঠিক হলো? এই প্রশ্নের জবাবে শাফিন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‌‘যখন একের পর এক অনিয়ম হচ্ছিলো তখনও তো ঠিক হয়নি। আমাকে বাদ দিয়ে শো করা হলো আমার অভিযোগের ব্যাখ্যা না দিয়ে সেটা কী ঠিক ছিলো। সবাই সমস্যা তৈরি করবে, ফেস করবে আর তার সমাধানে এগিয়ে আসবে একজন। সেই একজনটা কেউ না কেউ। আমি এগিয়ে এসেছি একটা আইন সিদ্ধ কাঠামো নিয়ে। এতে মাইলস ভেঙে যাবার কিছু দেখছি না। বরং সবার প্রাপ্যটুকু বহাল থাকবে সমান অধিকারে। একক কর্তৃত্ব থাকবে না, রেষারেষি বা হিংসার তৈরি করবে না। এটাই কী ভালো হলো না? মাইলস ভেঙে যাবার জন্য আমি এইসব করিনি, বরং সঠিকভাবে যাতে চলতে পারি সেজন্যই করা। ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক। মাইলস ভক্তরা অনেক কষ্ট পাচ্ছেন আমাদের আচরণে তাদের কাছে আমি লজ্জিত মাইলস সদস্য হিসেবে।’

এলএ