চলে গেলেন মাগুরার নন্দিত কৃষক খন্দকার ওলিয়ার রহমান (৪৮)। মাগুরার কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে নিবেদিতপ্রাণ এ মানুষটির হঠাৎ মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অকৃতদার ওলিয়ার রহমান মাগুরা সদর উপজেলার ইছাখাদা গ্রামের এমানত খন্দকারের ছেলে। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে তার মরদেহ নিজ গ্রামে পৌঁছলে সেখানে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। হাজরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান জাগো নিউজকে জানান, কৃষক ওলিয়ার রহমান বেশ কিছুদিন ধরে উচ্চ ডায়াবেটিকস ও কিডনি রোগে ভুগছিলেন। শুক্রবার বিকেলে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথেই সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি মারা যান। এলাকাবাসী জানান, হাজরাপুর কৃষক উন্নয়ন সমিতির সভাপতি খন্দকার ওলিয়ার রহমানের নেতৃত্বে ওই এলাকার হাজরাপুর, হাজিপুর ও রাঘবদাইড় ইউনিয়নসহ পৌরসভার বিভিন্ন অংশে কমপক্ষে ৩০ হাজার কৃষক গতানুগতিক কৃষি পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক ফল চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে সফল হন। বর্তমানে এ এলাকার কৃষকরা আধুনিক পদ্ধতিতে লিচু, আম, পেয়ারা, কলা, পেঁপেসহ বিভিন্ন ধরণের ফল চাষ করে ব্যাপক সাফল্য লাভ করেছেন। তার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী হাজরাপুর লিচু মেলার উদ্বোধন করতে এসেছিলেন। এলাকার কৃষকদের উন্নয়নের জন্য তিনি জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগঠিত করেছেন। প্রতিবছর পহেলা বৈশাখে ইছাখাদা লিচু বাগানে স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে তিনি ব্যতিক্রমধর্মী বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন। তিনি এ এলাকার কৃষকদের নিয়ে প্রতি বছর কৃষি শিক্ষা ভ্রমণের ব্যবস্থা চালু করেন। সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান ওলিয়ার রহমান সবসময় খুব সাদামাটা জীবন-যাপন করতেন ও নিজেকে কৃষক হিসেবে পরিচয় দিতেই বেশি পছন্দ করতেন। তার মৃত্যুতে মাগুরার জেলা প্রশাসক মাহবুবর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ কুন্ডু, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার সুব্রত কুমার চক্রবর্তী, হাজরাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শোক জানিয়েছেন। মো. আরাফাত হোসেন/এমজেড/এমএস
Advertisement