আগেই শোনা যাচ্ছিল, আবার দল বদলে ক্রিকেটারদের ইচ্ছে ও স্বাধীনতা হবে খর্ব। দু'বছর আগের মতো এবার আবার ‘প্লেয়ার্স বাই চয়েজে’ হবে ঢাকার প্রিমিয়ার লিগের দলবদল।
Advertisement
সেটা শুধুই গুঞ্জন নয়। ক্রিকেট কমিটি অফ ঢাকা মেট্রোপলিটন ‘সিসিডিএম’ এর নতুন সভাপতি কাজী ইনাম আহেমেদও পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, এবারের দল বদল হবে প্লেয়ার্স বাই চয়েজে।
আজ দুপুরে তার ধানমন্ডির অফিসে বসে ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে এমন তথ্য দিয়েছেন সিসিডিএমের নতুন চেয়ারম্যান।
উন্মুক্ত দলবদল, যেখানে ক্রিকেটারদের ইচ্ছেমতো দল বেছে নেবার স্বাধীনতা থাকে। বাড়তি অর্থ আয়ের সুযোগও থাকে বেশি। তা না করে কেন আবার প্লেয়ার্স বাই চয়েজে ফেরার চিন্তা? কাজী এনামের জবাব, 'আমরা যে এমনি এমনিই প্লেয়ার্স বাই চয়েজে দলবদল অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তা নয়। এটা অনেকগুলো ক্লাবই অনুরোধ করেছে।'
Advertisement
কেন ও কি কারণে প্লেয়ার্স বাই চয়েজে দল বদলের অনুরোধ ক্লাবগুলোর? এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী ইনাম বলেন, 'আমরা ক্রিকেটারদের স্বার্থ সংরক্ষণের পাশাপাশি ক্লাবগুলো যাতে টিকে থাকে, তারা যাতে ঠিকমতো দল গঠন করতে পারে এবং বাড়তি আর্থিক চাপের সম্মুখীন না হয়, সে দিকটায় নজর দিয়েছি। আমরা জানি এবং খোঁজ নিয়ে দেখেছি কখনো কখনো প্লেয়ার্স ডিমান্ড এতটাই আকাশ ছোঁয়া হয়ে পড়ে যে, তা পূরণ করতে গিয়ে ক্লাবগুলো হিমসিম খায়। তাই প্লেয়ার্স বাই চয়েজে ফেরার চিন্তা।’
তবে নতুন সিসিডিএম প্রধান আশ্বস্ত করেছেন, প্লেয়াররাও যাতে তাদের ন্যায্য পাওনা পায়, সেদিকে বিশেষ নজর থাকবে। এ প্রসঙ্গে কাজী ইনাম বলেন, ‘ আমরা জানি প্রিমিয়ার লিগ আমাদের দেশের ক্রিকেটারদের বড় অংশের আয়ের উৎস। সে বিষয়টিও আমরা ঠিক মাথায় রাখতে চেষ্টা করবো। তাছাড়া আমরা হিসেব করে দেখেছি এবার লিগ হবে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে। জাতীয় দলের অনেক ক্রিকেটার মনে হয় না এবারের লিগ খেলতে পারবেন। তাই অনেক ভেবে চিন্তে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এদিকে দলবদলের প্রক্রিয়া সম্পর্কেই শুধু নয়, এবারের প্রিমিয়ার লিগের শুরুর দিন ক্ষণ সম্পর্কেও ধারণা দিয়েছেন সিসিডিএম প্রধান।
তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী , আগামী ২০ জানুয়ারি প্রিমিয়ার লিগ শুরুর সম্ভাব্য দিন ধার্য্য করা হয়েছে। তার ১০ থেকে ১২ দিন আগে প্লেয়ার্স ড্রাফট অনুষ্ঠানের চিন্তা ভাবনাও একরকম চূড়ান্ত।
Advertisement
এছাড়া এবার প্রতি দল যাতে আগের বারের চার ক্রিকেটারকে রেখে দিতে পারে, সে চিন্তাও নাকি আছে সিসিডিএমের। এমন তথ্য দিয়ে কাজী ইনাম বলেন, ‘প্রতি দল ইচ্ছে করলে আগের বারের চারজন ক্রিকেটারকে রেখে দিতে পারবে, এমন চিন্তাও করছি আমরা। তবে সেটা ক্লাবগুলোর সাথে কথা বলে তারপর চূড়ান্ত হবে।'
সিসিডিএম সভাপতি জানান, ২ জানুয়ারী সিসিডিএম সভায় এ বিষয়ে কথা বার্তার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো , আগের বারের চার ক্রিকেটারকে রেখে দেয়ার নিয়ম চালু হলে তো ৪৮ জন ক্রিকেটারের (প্রিমিয়ারে ১২ দল, প্রতি দলে চার জন করে ৪৮ জন) চাহিদা কমে যাবে। এমনও হতে পারে , তারা আগের বারের চেয়ে কম অর্থ পাবেন।
সেটা কেমন হবে ? তাহলে তো একটা বড় অংশ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন ? এমন প্রশ্ন করা হলে কাজী ইনাম বলেন, ‘গত বছর কোন ক্রিকেটার কেমন পেয়েছে, আমাদের তো একটা ধারণা আছে। আমরা চেষ্টা করবো যাতে যার যেমন মান, সে যেন ওই অনুযায়ী পারিশ্রমিক পায়। গত বছর যে যেমন মূল্য পেয়েছে, সেটা বিবেচনা করে মোটামুটি যাতে তার কাছাকাছি পায় সে চেষ্টা করবো। ’
সিসিডিএম সভাপতির শেষ কথা , ‘আমরা কোন ভাবেই চাইবো না বা চাইনা যে, ক্রিকেটাররা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হোক। আমরা নির্বাচকদের জানিয়েছি শ্রেণীবিন্যাস করে দিতে। কোন ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক কত, সেটা আমরা ঠিক করে দেবো। তবে সেটা যাতে অসামাঞ্জস্য না হয়, একটা ভারসাম্য থাকে; আমরা প্রানপণ চেষ্টা করবো। মোদ্দা কথা , ক্রিকেটাররা যাতে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য থাকবে আমাদের।'
এআরবি/এমএমআর/আইআই