রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে মাসব্যাপী ২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)। প্রতি বছরই মেলায় স্টল বরাদ্দের হার বাড়ে। কিন্তু এবার ঘটেছে উল্টো ঘটনা। কেননা বাণিজ্য মেলায় এবার স্টলের সংখ্যা কমছে ৪৪টি।
Advertisement
তবে মেলা সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এবারের মেলায় বৈচিত্র্য আনার জন্য জায়গা রাখা হয়েছে। বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে ডিজিটালাইজেশন বা তথ্য প্রযুক্তিতে। এতে শুরুতেই বাণিজ্য মেলা জমে ওঠবে।
প্রতিবছর মেলার আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। তারা জানিয়েছে, দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভিলিয়ন মিলিয়ে এবারের বাণিজ্যমেলায় মোট ৫৪০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। গতবার অংশ নিয়েছিল ৫৮৪টি। সে হিসাবে এবার স্টল কমছে ৪৪টি।
আয়োজক সূত্র জানিয়েছে, এবারের মেলায় থাকবে ডিজিটাল এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার। এর মাধ্যমে মেলায় অবস্থিত স্টল ও প্যাভিলিয়নের অবস্থান জানা যাবে। ফলে দর্শণার্থীরা সহজেই কাঙ্ক্ষিত স্টলে যেতে পারবেন।
Advertisement
এ ছাড়া নির্দিষ্ট অ্যাপসের মাধ্যমে জানা যাবে মেলার হালনাগাদ অবস্থা। অনলাইনে দেশের যে কোনো প্রান্ত অথবা বিদেশ থেকেও সব ধরনের তথ্য পাওয়া যাবে।
তারা আরও জানান, এবারের বাণিজ্য মেলায় বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নের আকার গতবারের চাইতে দ্বিগুণ করা হচ্ছে। দেশের প্রথিতযশা চিত্রশিল্পীদের বঙ্গবন্ধুর ওপর আঁকা ২৬টি চিত্রকর্ম থাকবে ওই প্যাভিলিয়নে। থাকছে সুন্দরবনের আদলে মিনি সুন্দরবনও।
এবারের মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ১৭টি দেশ অংশ নিচ্ছে। এগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, চিন, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, মরিশাস, ভিয়েতনাম, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল ও হংকং।
আয়োজক সূত্র জানিয়েছে, এবারের মেলা আয়োজনের লক্ষ্যে বেশিরভাগ কাজই ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
Advertisement
আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন, এখন মেলা প্রাঙ্গণে অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভিলিয়ন তৈরির কাজ চলছে।
মেলায় স্টল কমার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এবার মেলা প্রাঙ্গণে চলাচলের রাস্তা প্রশস্ত রাখা, অর্কিড বাগান, মিনি সুন্দরবন তৈরি ও বঙ্গবন্ধু পাভিলিয়নের জন্য বাড়তি জায়গা রাখায় স্টল কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
অতীতের ন্যায় এবারের মেলায়ও তৈরি পোশাক, হোমটেক্সটাইল, ফেব্রিক্স পণ্য, হস্তশিল্পজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহস্থালি ও উপহার সামগ্রী, চামড়াজাত পণ্য, সিরামিকের তৈজসপত্র, প্লাস্টিক পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী, জুয়েলারি, নির্মাণ সামগ্রী ও আসবাবপত্রের স্টল থাকছে।
গত বছরের মেলায় ৮০ কোটি টাকার রফতানি আদেশ পাওয়া গিয়েছিল। এবারের মেলায় এর পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
এদিকে সরকার পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করছে। ২০১৮ সালের পর বাণিজ্যমেলা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে হবে না বলে ইতোমধ্যে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে।
তবে পূর্বাচলে বাণিজ্যমেলার স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চললেও কবে নাগাদ তা প্রস্তুত হবে কিংবা বাণিজ্য মেলা সেখানে কবে শুরু হবে তা এখনও অনিশ্চিত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এমএ/এমএমজেড/আইআই