সৌদি আরবের রিয়াদে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কিশোরগঞ্জের দরিদ্র পরিবারের সন্তান মাসুদের পরিবারে এখন শুধুই কান্না। মাত্র ২১ দিন আগে তার বাবা সামান্য ভিটে বাড়ি বিক্রি করে এবং ধার-দেনা করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়ে ছিলেন। তাদের স্বপ্ন ছিল, ছেলের উপার্জনে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরবে, ফুটবে হাসি। আর এর পরিবর্তে পরিবারের উপার্জনক্ষম সন্তানের মৃত্যুর খবরে পরিবারটিতে নেমে আসে শোকের ছায়া।শুক্রবার ভোরে সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের মাজমাহ এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় অন্য দুই বাংলাদেশির সঙ্গে নিহত হয় মাসুদ মিয়া (২২)। তিনি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদি ইউনিয়নের নামা মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং চরফরাদি ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার ওসমান মিয়ার ছেলে।পরিবারের লোকজন জানায়, মির্জাপুর শহীদ আলাউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পাস করে মাসুদ। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জালাল উদ্দিন আহমেদ জানান, ছেলেটি খুবই শান্ত প্রকৃতির ছিল। তিন ভাই, এক বোনের সংসারে মাসুদ ছিলেন বড়।বাবা ওসমান মিয়ার সামান্য উপার্জনে সংসার ভালভাবে চলছিলো না। চৌকিদারি চাকরি শেষে বুট-বাদাম বিক্রি করে তিন ছেলে ও এক মেয়ের সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। পরিবারের অনটনের কথা চিন্তা করে ওসমান মিয়া জমা-জমি বিক্রি করে। এরপর সাড়ে সাত লাখ টাকার বিনিময়ে দালালের মাধ্যমে মাসুদকে মাত্র ২১ দিন আগে শ্রমিক ভিসায় সৌদি আরবে পাঠান বাবা ওসমান। স্বপ্ন দেখেছিলেন দারিদ্র্য জয়ের। কিন্তু সবই গেছে। সন্তান ও টাকার যন্ত্রণায় মাসুদের বাবা উসমান মিয়া এখন পাগলপ্রায়। তাকে কিছুতেই শান্তনা দেয়া যাচ্ছেনা।প্রসঙ্গত, সৌদি আরবের রিয়াদে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় নয়জন নিহত হন। এর মধ্যে তিনজন বাংলাদেশের ও ছয়জন ভারতের। দুর্ঘটনায় ৪০ জন আহত হয়েছেন। আর নিহত তিন বাংলাদেশির মধ্যে মাসুদ একজন।নূর মোহাম্মদ/এআরএ/পিআর
Advertisement