চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানি অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নয়জনই হিন্দু এবং একজন বৌদ্ধ বলে জানা গেছে
Advertisement
নিহতরা হলেন- চকরিয়া উপজেলার বড়ইতলীর সনাতন দাশের ছেলে ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দিপঙ্কর দাশ রাহুল (২৩), উত্তর কাট্টলীর মৃত রায়চরণ দাশের ছেলে কৃষ্ণপদ দাশ (৩৫), নগরীর কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা মধ্যম নোয়াপাড়ার লাল দাশের ছেলে সুধীর দাশ (৫০), গোসাইলডাঙ্গার মনোরঞ্জন তালুকদারের ছেলে প্রদীপ তালুকদার(৫৫), রাউজান নোয়াপাড়ার আশীষ বড়ুয়া (৩৮), নগরীর জামাল খান বাই লেনের বিনোদ বিহারী দাশের ছেলে ঝন্টু দাশ (৪৫), বাঁশখালী বইলছড়ির মনীন্দ্র শীলের ছেলে ধনা শীল (৫০), টিটু দাশ (৩০), আনোয়ারার মোহছেন আউলিয়ার প্রকৃতি রঞ্জন দেবের ছেলে লিটন দেব (৫০) এবং সীতাকুন্ড ছোট কুমিরা এলাকার চন্দ্র মোহন ভৌমিকের ছেলে অলক ভৌমিক (৩৫)।
নিহতদের নাম ও ঠিকানা নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক মো. হামিদ।
এ ছাড়াও আহত হয়েছেন আরও অর্ধ শতাধিক। এর মধ্যে ১০-১২ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
Advertisement
চট্টগ্রাম নগরীর জামালখান রীমা কমিউনিটি সেন্টারে সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে। বিশৃংখলা ও হুড়াহুড়ির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার।
এ ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অত্যন্ত দুঃখজনক উল্লেখ করে সিএমপি কমিশনার বলেন, নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি ছিল না। সবাই একযোগে ঢোকার চেষ্টা করতে গিয়ে কমিউনিটি সেন্টারের ঢালুতে পড়ে যায় কয়েকজন। তাদের ওপর দিয়ে অন্যরা চলে যায়। পদদলিত হয়েই এ দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানি অনুষ্ঠানে এমন অনভিপ্রেত ঘটনায় অনেকটা হতভম্ব ও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তার (মহিউদ্দিন চৌধুরীর) বড় ছেলে ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি হতাহতদের দেখতে চমেক হাসপাতালে ছুটে যান। হতাহতদের স্বজনদের সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এক পর্যায়ে তিনি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েন।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানি উপলক্ষে সোমবার নগরীর ১৪টি স্থানে মেজবানের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে জামালখান এসএস খালেদ রোডে অবস্থিত রীমা কমিউনিটি সেন্টারে হিন্দু ও সংখ্যালঘু অন্য সম্প্রদায়ের লোকজনের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। দুপুর ১২টা থেকে ওই কমিউনিটি সেন্টারে মানুষকে খাওয়ানো শুরু হয়। কমিউনিটি সেন্টারের পশ্চিম গেট দিয়ে প্রবেশ ও পূর্ব গেট দিয়ে বের হওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ৭-৮ হাজার লোকের খাবারের আয়োজন করা হলেও সেখানে ১০-১৫ হাজার লোক অবস্থান করে। গেট খুলে দেয়া হলে সবাই হুড়াহুড়ি করে ঢোকার চেষ্টা করে। তাছাড়া প্রবেশ পথটি ছিল ঢালু। এ কারণে ধাক্কাধাক্কির মধ্যে অনেকেই পড়ে গিয়ে পদদলিত হন। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চট্টগ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
Advertisement
আরএআর/আরআইপি