দেশজুড়ে

রাঙ্গামাটিতে ৫ বছরে ৬ হাতির মৃত্যু, ১২ জনের প্রাণহানি

রাঙ্গামাটিতে গত ৫ বছরে ৬টি হাতি মারা গেছে। শিকারসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় পড়ে এসব হাতির মৃত্যু হয়। অপরদিকে বন্যহাতির আক্রমণের শিকার হয়ে গত ৫ বছরে জেলায় প্রাণহানি ঘটে ১২ জনের। বন বিভাগসহ স্থানীয়দের কাছ থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। তথ্যমতে, রাঙ্গামাটিতে পাঁচ বছরে মারা যাওয়া ৬ হাতির মধ্যে চারটি মারা যায় বৈদ্যুতিক তার দিয়ে পাতা ফাঁদে পড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। চোরাগোপ্তা শিকারে গুলিতে মারা গেছে একটি।

Advertisement

স্থানীয়দের তথ্য মতে, এর বাইরেও আরও ১ হাতি মারা যায়। এটা বন বিভাগের হিসাবের খাতায় উঠেনি। এসব ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। জেলায় হাতির সঠিক কোনো পরিসংখ্যানও নেই বন বিভাগে।

সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, ২৪ নভেম্বর রাতে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ডংনালা লম্বাঘোনা পাহাড়ি এলাকায় বৈদ্যুতিক তারের ফাঁদে মারা যায় একটি মা হাতি। অথচ এ পর্যন্ত এর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় বন বিভাগ ও বিদ্যুৎ বিভাগ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের হিসাব মতে, ২০১২ সালের ৮ জুন কর্ণফুলী রেঞ্জে প্রসবকালীন একটি মা হাতি মারা যায়। ২০১৪ সালে ২২ অক্টোবর একই উপজেলার শুকনাছড়ি বিটে চোরাশিকারির গুলিতে বিদ্ধ হয়ে মারা যায় ১ হাতি। ২০১৫ সালে ২ জুলাই রাঙ্গামাটি সদর রেঞ্জের জীবতলী পিকনিক স্পট এলাকায় বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে মারা যায় ২ হাতি। এছাড়া স্থানীয়দের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে ২০১৬ সালে ১০ এপ্রিল কর্ণফুলী রেঞ্জে বৈদ্যুতিক তারের ফাঁদে ফেলে মারা হয়েছে একটি মা হাতি- যা বন বিভাগের হিসাবে ওঠেনি।

Advertisement

এদিকে একাধিক সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, বন্যহাতির আক্রমণে গত ৫ বছরে জেলায় প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। যাদের মধ্যে ২০১৩ সালে একজন, ২০১৪ সালে তিনজন, ২০১৫ সালে চারজন, ২০১৬ সালে ২ জন এবং চলতি বছরে কাপ্তাই নেভির সৈনিক তৌহিদুর রহমানসহ ২ জনের প্রাণহানি ঘটে।

স্থানীয় বন বিভাগ জানায়, জেলায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে রয়েছে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় পাবলাখালী অভয়ারণ্য এবং কাপ্তাই উপজেলার কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান। এ দুই সংরক্ষিত এলাকায় রয়েছে বন্যহাতির আবাসস্থল। কিন্তু কত পরিমাণ হাতি রয়েছে তার কোনো পরিসংখ্যান নেই বন বিভাগের কাছে।

বন কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জনবল সঙ্ককটসহ নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় কাজ করছে স্থানীয় বন বিভাগ। এরই মধ্যে জনসচেতনতায় সভা, কর্মশালা, বিভিন্নস্থানে সাইনবোর্ড স্থাপন, পশুখাদ্য উপযোগী ৫০ হেক্টর বাগান সৃজন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে করণীয় পদক্ষেপ নিতে স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

সুশীল প্রসাদ চাকমা/এমএএস/আরআইপি

Advertisement