নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন বস্তা পাঠ্যবই কেজির দরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, মল্লিকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নাজমা আক্তার এ বই বিক্রি করেছেন। এ ঘটনায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষিকাকে কারণ দর্শানোর নোটিশসহ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।এলাকাবাসী, উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিকেলে আটপাড়া উপজেলার লুনেশ্বর ইউনিয়নের গাবরগাট বাজারের কাছে স্থানীয় ভাঙারি ব্যাবসায়ী আফছর আলি ও তার সহযোগী প্রাথমিকের পাঠ্যবই তিনটি চটের বস্তায় ভরে মাথায় করে আটপাড়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় স্থানীয় কয়েকজনের সন্দেহ হলে তা আটক করে জানতে পারেন এগুলো প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির ২০১৪ সালের মুদ্রণের সরকারি বিতরণের বই। ওজন প্রায় সাড়ে তিন মণ। মল্লিকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নাজমা আক্তার ওই ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীর কাছে তা ১৮০০ টাকায় বিক্রি করেন। বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে গত মঙ্গলবার দুপুরে ব্যবসায়ীরা বিদ্যালয় থেকে তা নিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে (টিইও) খবর দেয়া হলে শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহকারী আলী হোসেন ও কর্মসহায়ক লিটন মিয়া বস্তা ভর্তি বইগুলো উদ্ধার করে উপজেলা কার্যালয়ে নিয়ে যান। এ ঘটনায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) ফাতেমা সুলতানা বৃহস্পতিবার মল্লিকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নাজমা আক্তারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একজন বাসিন্দা অভিযোগ করে জাগাে নিউজকে বলেন, নতুন এ বইগুলো মল্লিকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাজমা আক্তারই কেজির দরে বিক্রি করেছেন। তিনি এখন উপজেলা অফিসকে ম্যানেজ করে এ বইগুলোকে পুরাতন বলে কমিটির রেজুলেশন লেখে চালিয়ে দেবেন বলে শোনা যাচ্ছে।তবে শিক্ষিকা নাজমা আক্তার জাগো নিউজকে জানান, বই বিক্রির বিষয়ে তিনি কোনো কিছু জানেন না, তিনি কোনো ধরনের বই বিক্রি করেননি। আমার উপরে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) ফাতেমা সুলতানা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, আশপাশে যেহেতু কোনো স্কুল নেই তাই সরকারি এই বইগুলো বিক্রি করায় তাকে সন্দেহ করা হচ্ছে। তাকে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। ভাঙ্গারি ওই ব্যবসায়ীর দেয়া সব তথ্য লিখে রেখেছি। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম রিয়াজ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। আমার কাছে এখনো প্রতিবেদন আসেনি। এলে তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষিকা নাজমা আক্তারের উপর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।কামাল হোসাইন/এমজেড/এমএস
Advertisement